লজ্জার হারে ধবলধোলাই টাইগাররা

ব্যাট হাতে রানের বান ছুটিয়েছে ভারত। বাংলাদেশ হজম করেছে প্রায় তিন শ’ রান। অবধারিতভাবেই ভারতীয়দের হিমালয়তুল্য রানের গণ্ডির ধারেকাছেও যেতে পারেনি টাইগাররা। ব্যাটে-বলে দুই বিভাগে বাজে পারফরম্যান্সের দায়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষ ম্যাচেও হেরে গেছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল।

সঞ্জু স্যামসনের কাছে এক ওভারে পাঁচ ছক্কা হজম করেন রিশাদ হোসেন। ছবি: এক্স

আজ হায়দরাবাদের রাজিব গান্ধি স্টেডিয়ামে ভারতের কাছে ১৩৩ রানের বিশাল ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত কুড়ি ওভারে ছয় উইকেটে ২৯৭ রান তোলে ভারত। যা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তাদের সর্বোচ্চ। জবাবে সাত উইকেটে ১৬৪ রান তুলতে সক্ষম হয় টাইগাররা।

এই হারে তিন ম্যাচের সিরিজে ধবলধোলাই হলো শান্তর দল (৩-০)। আগের ‍দুই ম্যাচে বাংলাদেশিরা হেরেছে সাত উইকেট ও ৮৬ রানে। এবারের হারের মধ্য দিয়ে ভারত সফরে ব্যর্থতার ষোলো কলা পূরণ হলো টাইগারদের। এর আগে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজেও ধবলধোলাই হয়েছিল সফরকারীরা (২-০)। পাঁচটি ম্যাচেই বাংলাদেশ হেরেছে নিঃশর্তভাবে।

ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ হয়ে গেছে প্রথম ইনিংস শেষে। যেখানে বিস্ফোরক সেঞ্চুরি করেন ওপেনার সঞ্জু স্যামসন। টর্নেডো ইনিংস খেলেন অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব। পরে তাদের এনে দেওয়া মজবুত ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে ঝড় তোলেন রায়ান পরাগ ও হার্দিক পান্ডিয়া। তাদের সম্মিলিত ব্যাটিং প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের বিপক্ষে রানের হিমালয়ে চড়ে ভারত।

তবে অল্পের জন্য টিকে গেছে এই সংস্করণে গড়া নেপালের বিশ্বরেকর্ড। গতবছর হাংজুতে মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে তিন উইকেটে ৩১৪ রান করেছিল নেপালিজরা। ভারত নেপালকে টপকে যেতে পারে একটা সময় এমন সম্ভাবনাও জেগেছিল। সেটি অবশ্য ঠেকাতে পেরেছেন নাজমুলরা। এটিই বোধহয় বিব্রতকর হারের বড় সান্ত্বনা! এই হারের মধ্য দিয়েই শেষ হলো মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের বাংলাদেশের হয়ে টি-টোয়েন্টি যাত্রা।

বল হাতে বাংলাদেশের শুরুটা ছিল অম্লমধুর। দুই ওভারে বিনা উইকেটে ২৩ রান করে ভারত। পরের ওভারের প্রথম বলেই ভাঙে শুরুর জুটি। এরপর দ্বিতীয় উইকেটে ১৯৩ রানের জুটি গড়েন ওপেনার স্যামসন ও দলপতি সূর্য। বিস্ফোরক জুটি গড়ার পথে সেঞ্চুরি করেন স্যামসন। ৪৭ বলে ১১১ রান করেন তিনি। ইনিংস সাজান ১১টি চার ও আটটি ছক্কায়।

সূর্য অবশ্য শতক হাতছাড়া করেছেন। ৩৫ বলে ৭৫ রানে ফেরেন তিনি। আটটি চার ও পাঁচটি ছক্কার ওপর দাঁড়িয়ে ইনিংস সাজান সূর্য। দলীয় শতক দুশো পার হওয়ার পর বিদায় নেন ভারতীয় অধিনায়ক। পরপর দুই ওভারে এই দুজনের বিদায়ের পর রানের চাকা সচল রাখেন পরাগ ও হার্দিক। পরাগ ১৩ বলে ৩৪ ও হার্দিক ১৮ বলে ৪৭ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেন।

বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল তানজিম হাসান সাকিব। তিন উইকেটে ৬৬ রান নেন তিনি। এ ছাড়া একটি করে উইকেট পেয়েছেন তাসকিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান ও মাহমুদউল্লাহ। বোলাররা লক্ষ্যমাত্রা নাগালে রাখতে পারেননি। ম্যাচটা শেষ হয়ে গেছে ওখানেই। তাদের ব্যর্থতার মাসুল দিতে হয়েছে পুরো দলকে। রান তাড়ায় শুরু থেকে স্রেফ খেলার জন্য খেলেছে টাইগাররা।

হারা ম্যাচে ইতিবাচক দিক তাওহিদ হৃদয়ের ব্যক্তিগত হাফসেঞ্চুরি। ৪২ বলে পাঁচটি চার ও তিন ছয়ের সুবাদে ৬৩ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। হৃদয়ের সঙ্গী লিটন দাস ২৫ বলে আটটি চারের সহায়তায় করেন ৪২ রান। এ ছাড়া তানজিদ হাসান ১২ বলে ১৫ ও দলপতি নাজমুল ১১ বলে ১৪ রান করেন। ভারতের পক্ষে ৩০ রানে তিন উইকেট নেন রবি বিষ্ণু। ৩২ রানে দুটি শিকার মায়াঙ্ক যাদবের।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ভারত: ২৯৭/৬ (২০ ওভার)।
বাংলাদেশ: ১৬৪/৭ (২০ ওভার)।
ফল: ১৩৩ রানে জয়ী ভারত।
ম্যাচ সেরা: সঞ্জু স্যামসন (ভারত)।
সিরিজ সেরা: হার্দিক পান্ডিয়া (ভারত)।
সিরিজ: তিন ম্যাচের সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে জয়ী ভারত।