সাকিবের অনুশোচনা, নীরবতার জন্য দুঃখ প্রকাশ

বাংলাদেশি ক্রিকেট তারকা সাকিব আল হাসান চলতি বছরের জুলাই ও আগস্ট মাসে ছাত্র-নাগরিক আন্দোলনের সময় সরব না হওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন। এই আন্দোলন ব্যাপক গণজাগরণে রূপ নেয় এবং শেখ হাসিনার সরকারের পতন হয়, যে সরকারের একজন সংসদ সদস্য ছিলেন সাকিব।

সাকিব আল হাসান

বুধবার সন্ধ্যায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে সাকিব তার নীরবতা নিয়ে সমালোচনার জবাব দেন।

ভারতের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজের সময় সাকিব অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন এবং ঢাকার মিরপুরে নিজ দেশের মাটিতে তার শেষ টেস্ট খেলার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। তবে একই সঙ্গে তিনি বাংলাদেশে তার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন।

শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে গণআন্দোলনে সাকিবের নীরবতা নিয়েই এই নিরাপত্তার প্রশ্ন উঠেছিল, যে আন্দোলনে সরকারের গুলিতে শত শত মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল।

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি জানিয়েছিলেন যে তারা সাকিবকে অতিরিক্ত নিরাপত্তা দিতে পারবেন না। হাসিনার পতনের পর ক্ষাক্ষমতায় আসা অন্তর্বর্তী সরকারের ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ প্রথমে বলেছিলেন, সাকিবের উচিত আন্দোলন সম্পর্কে তার অবস্থান স্পষ্ট করা। তবে পরবর্তীতে তিনি সাকিবের নিজ দেশের মাটিতে অবসর গ্রহণের ইচ্ছার প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেন।

সাকিবের দেশে ফেরা নিয়ে অনিশ্চয়তা বাড়ার পর, ক্রীড়া উপদেষ্টার পরামর্শ অনুযায়ী, তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার অবস্থান স্পষ্ট করার জন্য একটি পোস্ট করেন।

সাকিব লিখেছেন, ‘প্রথমেই আমি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে পরিচালিত ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত সকল আত্মত্যাগী ছাত্র-ছাত্রীদের শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি। তাদের এবং তাদের পরিবারের প্রতি আমার গভীর শ্রদ্ধা ও সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। প্রিয়জন হারানোর বেদনা কোনোভাবেই পূরণ করা সম্ভব নয়। সন্তান বা ভাই হারানোর বেদনা কখনোই লাঘব হতে পারে না।’

তিনি তার নীরবতার জন্য ক্ষমা চেয়ে বলেছেন, ‘সংকটকালীন সময়ে আমার অনুপস্থিতিতে যারা কষ্ট পেয়েছেন বা মর্মাহত হয়েছেন, তাদের অনুভূতিতে আমি সম্মান জানাই এবং এর জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত।’

সাকিব তার ভক্তদের কাছে পাশে থাকার আহ্বানও জানিয়েছেন, ‘আপনারা জানেন, খুব শীঘ্রই আমি আমার শেষ ম্যাচ খেলব। আমার ক্রিকেট ক্যারিয়ারের শুরু থেকে শুরু করে আজকের সাকিব আল হাসান হওয়া পর্যন্ত, এই পুরো যাত্রা আপনারাই চালিয়েছেন। আমার ক্রিকেট জীবনের এই সমগ্র গল্পটা আপনারাই লিখেছেন!’

আওয়ামী লীগের সঙ্গে তার রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা প্রসঙ্গে সাকিব স্পষ্ট করে বলেছেন যে তিনি ‘অল্প সময়ের’ জন্যই সংসদ সদস্য ছিলেন। তিনি উল্লেখ করেন যে তিনি তার জন্মস্থান মাগুরার উন্নয়নে অবদান রাখার লক্ষ্যে রাজনীতিতে যোগদান করেছিলেন।

প্রসঙ্গত, সাকিব এবং আরেক প্রাক্তন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা, উভয়ই আওয়ামী লীগের হয়ে ২০২৪ সালের বিতর্কিত নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন।