সিউলের দাবি: রাশিয়ার হয়ে ইউক্রেনে যুদ্ধ করছে উত্তর কোরিয়া!

উত্তর কোরিয়ার সেনারা রাশিয়ার পক্ষ হয়ে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে। এমনকি যুদ্ধক্ষেত্রে তারা হতাহতও হচ্ছে। মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) দক্ষিণ কোরিয়ার পক্ষ থেকে এমন গুরুতর অভিযোগ করা হয়। খবর আল জাজিরা।

কিম জং উন ও ভ্লাদিমির পুতিন

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী কিম ইয়ং-হায়ুন দাবি করেন, ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রে রুশ সেনাবাহিনীর পাশে থেকে তাদের হয়ে লড়াই করছে উত্তর কোরিয়ার সেনারা। এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তথ্য দিয়ে তিনি জানান, গত ৩ অক্টোবর দোনেৎস্কের কাছাকাছি একটি অঞ্চলে ইউক্রেনের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে উত্তর কোরিয়ার অন্তত ছয়জন সেনা ও কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন।

প্রতিরক্ষামন্ত্রী কিম আরও বলেন, আমরা বিষয়টি আরও যাচাই-বাছাই করে দেখছি। ইউক্রেনে উত্তর কোরিয়ার কর্মকর্তা ও সেনা হতাহতের ঘটনাটি সত্য হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। সিউল মনে করে, পিয়ংইয়ং রাশিয়ার যুদ্ধক্ষেত্রে লড়াই করার জন্য আগামীতে আরও সেনা পাঠাবে। রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে পারস্পরিক সামরিক চুক্তির ভিত্তিতেই দুই দেশের মধ্যে নিয়মিত সেনা আদান-প্রদান হয়।

পিয়ংইয়ং ও মস্কোর মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করার নতুন ঘোষণা আসার মধ্যে এ ধরনের অভিযোগ করল দক্ষিণ কোরিয়া।

আগে থেকেই অভিযোগ ছিল, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ব্যবহারের জন্য রুশ বাহিনীকে অস্ত্র সরবরাহ করছে উত্তর কোরিয়া। কিন্তু রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জন উং বরাবরই তা প্রত্যাখ্যান করে আসছেন।

খবরে বলা হয়, গত জুনে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন একটি ব্যাপক কৌশলগত অংশীদারিত্ব গ্রহণ করেছেন। এর মধ্যে একটি পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তিও ছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্লেষকেরা সতর্ক করেছেন, সাম্প্রতিক সময়ে উত্তর কোরিয়ার কামান ও ক্ষেপণাস্ত্রের উৎপাদন বেড়ে যাওয়া এবং এগুলোর পরীক্ষা-নিরীক্ষা রাশিয়ায় আরও অস্ত্র চালান পাঠানোর প্রস্তুতি হতে পারে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর উত্তর কোরিয়ার প্রতিষ্ঠার পর থেকে মস্কো ও পিয়ংইয়ং মিত্র হিসেবেই সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে মস্কো ইউক্রেনে পূর্ণ মাত্রায় আগ্রাসন শুরু করার পর থেকে দুই দেশের ঘনিষ্ঠতা আরও বেড়েছে।

গত বছরের সেপ্টেম্বরে ভ্লাদিভস্তকে কিম জং উন ও ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে বৈঠকের পর দুই দেশ একে অপরকে সহযোগিতার ব্যাপারে সম্মত হয়। বলা হয়, রাশিয়াকে গোপনে মিসাইল ও আর্টিলারি শেল সরবরাহ করতে রাজি হয়েছে উত্তর কোরিয়া। বিনিময়ে উত্তর কোরিয়াকে পরমাণু অস্ত্র ও মিসাইল প্রযুক্তি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন পুতিন। চলতি বছরের জুনে পিয়ংইয়ং সফর করেন রুশ প্রেসিডেন্ট। সে সময়েও দুই দেশের মধ্যে একটি প্রতিরক্ষা চুক্তি সই হয়।