এ মাসেই চালু হচ্ছে মিরপুর-১০ মেট্রো স্টেশন

জুলাই মাসে ভাঙচুরের ঘটনার পর বন্ধ হয়ে যাওয়া মিরপুর-১০ মেট্রো স্টেশন অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে আবার চালু হতে পারে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তারা জানান, এ সপ্তাহের মধ্যেই স্টেশনটি পুনরায় খোলার প্রস্তুতি পরীক্ষা করে দেখা হবে।

ফাইল ছবি

ক্ষতিগ্রস্ত সরঞ্জামাদির বেশিরভাগই ইতোমধ্যে অন্যান্য কম ব্যবহৃত দুটি স্টেশন এবং মেট্রোরেল প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট থেকে আনা সরঞ্জাম দিয়ে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।

‘আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে অক্টোবরের মাঝামাঝি মিরপুর-১০ স্টেশনটি আবার চালু করার। আমরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব স্টেশনটি চালু করার চেষ্টা করছি,’ বলেন ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুর রউফ।

তিনি বলেন, তারা শিগগিরই স্টেশনটির প্রস্তুতি পরীক্ষা করে দেখবেন এবং চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য ফলাফল জানাবেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার কাছে।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের জের ধরে ১৯ জুলাই মিরপুর-১০ এবং কাজীপাড়া মেট্রো স্টেশনে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা ভাঙচুর চালায়, যা পরে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের দাবিতে গণজোয়ারে রূপ নেয়। এরপর এক মাসেরও বেশি সময় ধরে মেট্রোরেল পরিষেবা বন্ধ থাকে।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের তখন বলেছিলেন, এক বছরের মধ্যেও মেট্রো স্টেশন দুটি চালু করা সম্ভব হবে না।

২৫ আগস্ট মেট্রোরেল পরিষেবা আবার চালু হলেও, দুটি স্টেশনই বন্ধ রাখা হয়। কাজীপাড়া স্টেশনটি ২০ সেপ্টেম্বর আবার চালু করা হয়।

ডিএমটিসিএলের একজন কর্মকর্তা জানান, ক্ষতিগ্রস্ত সরঞ্জামাদি প্রতিস্থাপনের জন্য তারা বিজয় সরণি এবং উত্তরা সাউথ স্টেশন থেকে কিছু সরঞ্জাম এনেছেন।

তিনি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক থাকার শর্তে জানান, কিছু সরঞ্জাম ডিএমটিসিএলের প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট থেকেও আনা হয়েছে।

ডিএমটিসিএলের দুই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা তাদেরকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব স্টেশন দুটি চালু করার নির্দেশনা দিয়েছেন।

যেসব সরঞ্জাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, সেগুলো সবই বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়েছিল এবং আবারো বিদেশ থেকে নতুন করে সরঞ্জাম আনতে দীর্ঘ সময় লাগবে।

তাই তারা ক্ষতিগ্রস্ত সরঞ্জামগুলো তুলনামূলক কম ব্যবহৃত স্টেশনগুলো থেকে আনা সরঞ্জাম দিয়ে প্রতিস্থাপন করেছেন বলে জানান তারা।

তারা আরও জানান, সময় বাঁচাতে স্টেশনের অফিসের জানালা মেরামত করার জন্য তারা আমদানি করা কাচের পরিবর্তে স্থানীয় কাচ ব্যবহার করেছেন।

পরবর্তীতে কম ব্যবহৃত স্টেশনগুলোতে পুনরায় স্থাপনের জন্য বিদেশ থেকে নতুন সরঞ্জাম আনা হবে কিনা সে বিষয়ে কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানান তারা।

উত্তরা থেকে কমলাপুর পর্যন্ত প্রথম মেট্রোরেল লাইন, যা আনুষ্ঠানিকভাবে ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) লাইন-৬ নামে পরিচিত, ৩৩,৪৭২ কোটি টাকা ব্যয়ের একটি প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

উত্তরা-আগারগাঁও অংশটি ২০২২ সালের ডিসেম্বরে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয় এবং আগারগাঁও-মতিঝিল অংশটি গত বছরের নভেম্বরে উন্মুক্ত করা হয়।

মতিঝিল-কমলাপুর অংশের নির্মাণ কাজ চলছে এবং আগামী বছরের জুন মাসের মধ্যে এটি চালু হওয়ার কথা রয়েছে। ডিএমটিসিএলের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে প্রতিদিন তিন লক্ষেরও বেশি মানুষ এই জনপ্রিয় সেবায় যাতায়াত করেন।