কে হচ্ছেন ঢাবির ৫০তম সমাবর্তন বক্তা?

আগামী ৪ মার্চ শনিবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০তম সমাবর্তন অনুষ্ঠান। বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রের খেলার মাঠে অনুষ্ঠিত হবে এ সমাবর্তন। কে হবেন এবারের সমাবর্তন বক্তা এ নিয়ে কৌতূহলের যেন শেষ নেই ঢাবি শিক্ষার্থীদের। এবারের সমাবর্তনে ৯৪টি স্বর্ণপদকের জন্য ৮০ জন পদকপ্রাপ্ত, ৬১ জন পিএইচ.ডি., ৪৩ জন এম.ফিল. এবং ১৭ হাজার ৮৭৫ জন গ্র্যাজুয়েট অংশগ্রহণ করবেন।

বারবরের মত এবারের সমাবর্তনেও সভাপতিত্ব করবেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর মোঃ আবদুল হামিদ। আর সমাবর্তন বক্তা হিসেবে থাকবেন কানাডার ওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট ও ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. আমিত চাকমা। কানাডার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটি ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্টার্ন অন্টারিও। ২০০৫, ২০০৭ ও ২০০৮ সালে এটি কানাডার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা পায়। তিনি কানাডার ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্টার্ন অন্টারিও-এর ১০ম প্রেসিডেন্ট।

১৯৭১ সাল থেকে স্থায়ীভাবে কানাডায় বসবাস করা শুরু করা অমিত চাকমা ভুলে যাননি নিজের দেশকে। মাঝেমধ্যে ছুটে আসেন দেশে। কয়েকবার এসেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ও পেট্রোলিয়াম ইনস্টিটিউটের আয়োজিত সেমিনারে বক্তব্য দিতে। এবার তিনি আসবেন প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০তম সমাবর্তনে বক্তব্য দিতে। অমিত চাকমা বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত একজন বিশিষ্ট রাসায়নিক প্রকৌশলী। তাঁর জন্ম ১৯৫৯ সালে বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙামাটি শহরের বনরূপার এক চাকমা পরিবারে।

বাংলাদেশে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের পড়াশোনা শেষ করার পর তিনি আলজেরীয় সরকারের বৃত্তি নিয়ে আলজেরিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যান। রাসায়নিক প্রকৌশল বিভাগ থেকে ১৯৭৭ সালে প্রথম স্থান অধিকার করে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর কানাডার ইউনিভার্সিটি অফ ব্রিটিশ কলাম্বিয়া থেকে রাসায়নিক প্রকৌশল বিষয়ে এমএএসসি এবং পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।

পরবর্তীকালে ১৯৮৮ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালগারির রাসায়নিক প্রকৌশল বিভাগে অধ্যাপক এবং ১৯৯৬ সালে ইউনিভার্সিটি অফ রেজিনা-এ রাসায়নিক প্রকৌশল বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৯ সাল থেকে ২০০১ পর্যন্ত উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাইস-প্রেসিডেন্ট রিসার্চ হিসেবেও কর্মরত ছিলেন। ২০০১ সালে ইউনিভার্সিটি অফ ওয়াটারলু-র অ্যাকাডেমিক ভাইস-প্রেসিডেন্ট এবং প্রভোস্টের দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সালে ইউনিভার্সিটি অব ওয়াটার লুর একাডেমিক ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং প্রভোস্টের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ২০০৮ সালে তিনি কানাডিয়ান একাডেমী অব ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ফেলো পদে ভূষিত হন। ২০০৯ সালের ১ জুলাই এর প্রেসিডেন্ট ও উপাচার্য নিযুক্ত হন তিনি। এখনো ওই পদে কর্মরত আছেন তিনি। বর্তমানে তিনি চেষ্টা করছেন ওয়েস্টার্ন ওন্টারিওকে বিশ্বের শীর্ষ ১০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের সারিতে পৌঁছে দেওয়ার।

অমিত চাকমা বিশ্বব্যাপী খ্যাতি অর্জন করেছেন প্রাকৃতিক গ্যাস প্রকৌশল এবং পেট্রোলিয়াম বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ক গবেষণার জন্য। কানাডায় উচ্চশিক্ষায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১২ সালে পেয়েছেন কুইন্স ডায়মন্ড জুবিলি মেডেল। এবারের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে তাঁকে ডক্টর অব সায়েন্স ডিগ্রি প্রদান করবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।