এবার সাত শিল্পগোষ্ঠীর শেয়ার হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা

কর ফাঁকি রোধে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ব্যাপক তৎপরতা। এবার সাতটি শিল্পগোষ্ঠীর শেয়ার হস্তান্তর স্থগিতের নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। এনবিআরের পক্ষ থেকে রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মসকে (আরজেএসসি) এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বসুন্ধরা গ্রুপ, ওরিয়ন গ্রুপ, সামিট গ্রুপ, বেক্সিমকো গ্রুপ, এস আলম গ্রুপ, নাসা গ্রুপ এবং নগদের লোগো

অভিযোগ রয়েছে, আওয়ামী লীগের শাসনামলে প্রভাব বিস্তারকে কাজে লাগিয়ে এসব প্রতিষ্ঠান কর ফাঁকিসহ বিভিন্ন আর্থিক অনিয়ম করে আসছে।

কোন কোন প্রতিষ্ঠান?

এনবিআরের নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা সাতটি শিল্পগোষ্ঠী হলো: বসুন্ধরা গ্রুপ, ওরিয়ন গ্রুপ, সামিট গ্রুপ, বেক্সিমকো গ্রুপ, এস আলম গ্রুপ, নাসা গ্রুপ, থার্ড ওয়েভ টেকনোলজিজ লিমিটেড (নগদ লিমিটেড)।

এনবিআরের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি) থেকে আরজেএসসিকে পাঠানো এক চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ‘দান বা অন্য কোনো উপায়ে এই সাতটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার বিক্রি বা হস্তান্তর তৎক্ষণাৎ বন্ধ করতে হবে।’

সিআইসি আরও জানায়, আয়কর আইন অনুসারে কর ফাঁকি রোধে করদাতাদের সম্পত্তি সাময়িকভাবে জব্দ বা বন্ধ করে দেওয়ার ক্ষমতা তাদের রয়েছে।

চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘এই কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে কর ফাঁকিসহ আর্থিক অনিয়মের গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। জাতীয় স্বার্থে আপনাদের সহযোগিতা অপরিহার্য।’

এর আগে, পাঁচটি বৃহৎ ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর প্রধানদের ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়েছিল এনবিআর। তাদের কর সম্মতিতে কোনো গরমিল আছে কিনা তা যাচাই করাই ছিল এর উদ্দেশ্য।

ওই পাঁচ ব্যবসায়ী হলেন:

• বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান
• নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার
• সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আজিজ খান
• বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান
• ওরিয়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওবায়দুল করিম

২০১৫ সালের ১ জুলাই থেকে এই ব্যবসায়ী নেতাদের এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের মালিকানাধীন টার্ম ডিপোজিট, সঞ্চয়ী হিসাব, চলতি হিসাব, ঋণ হিসাব, বৈদেশিক মুদ্রার হিসাব, ক্রেডিট কার্ড, লকার এবং ভল্ট সম্পর্কে তথ্য চাওয়া হয়েছিল।

অন্যদিকে, চট্টগ্রামভিত্তিক ব্যবসায়ী এবং এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম এবং তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়েছে এনবিআরের দুটি ফিল্ড অফিস।

এছাড়াও, এস আলম গ্রুপের আওতাধীন ১৮টি প্রতিষ্ঠানের ভ্যাট সম্মতি নিরীক্ষার জন্য চারটি দল গঠন করেছে ভ্যাট কমিশনারেট চট্টগ্রাম।

গত আগস্টে এক বিজ্ঞপ্তিতে, কর কর্তৃপক্ষ জানায় যে, যারা বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে কর ফাঁকির অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে সিআইসি।

২০২৩ সালের আয়কর আইন এবং ২০১২ সালের মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন অনুসারে, এই বিশেষ তদন্তের মাধ্যমে কর ফাঁকি শনাক্ত করাই এনবিআরের লক্ষ্য।