কানপুর টেস্ট: একদিনে ১২ নজির, রেকর্ড বইয়ে ঝড়

বৃষ্টিভেজা কানপুর টেস্ট চতুর্থ দিনে উপহার দিয়েছে রোমাঞ্চ। টেস্ট সংস্করণে টি-টোয়েন্টি মেজাজে ব্যাটিং করে ভারত গড়েছে বেশ কয়েকটি কীর্তি। নজির হয়েছে বাংলাদেশি ক্রিকেটারেরও। সবমিলিয়ে সোমবার একদিনেই হয়েছে ১২টি রেকর্ড। তন্মধ্যে নয়টি বিশ্বরেকর্ড। একনজরে তা দেখে নেওয়া যাক:

কানপুর টেস্টে প্রথম ইনিংসজুড়ে টি-টোয়েন্টি মেজাজে ব্যাট করেছে ভারত। ছবি: এপি

১. টেস্ট ক্রিকেটে দ্রুততম ৫০ রান: টেস্ট ক্রিকেটে দ্রুততম দলীয় ফিফটির বিশ্বরেকর্ড গড়েছে ভারত। সোমবার বাংলাদেশের বিপক্ষে ৩ ওভারে ফিফটি ছুঁয়েছে ভারত। তারা ভেঙেছে ইংল্যান্ডের রেকর্ড। এ বছর নটিংহামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৪.২ ওভারে দলীয় ফিফটি করেছিল ইংলিশরা।

২. টেস্ট ক্রিকেটে দ্রুততম ১০০ রান: টেস্ট ক্রিকেটে সবচেয়ে কম বলে তিন অংক ছুঁয়েছে ভারত। টাইগারদের বিপক্ষে ৬৬ বলে শতরানের গণ্ডিতে পা রাখে স্বাগতিকরা। রোহিত শর্মার দল ভেঙেছে নিজেদেরই বিশ্বরেকর্ড। গত বছর ত্রিনিদাদে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৭৪ বলে ১০০ রান করেছিল ভারত।

৩. টেস্ট ক্রিকেটে দ্রুততম ১৫০ রান: কানপুর টেস্টে প্রথম ইনিংসে দ্রুততম দেড় শ’ রানের বিশ্ব রেকর্ডও গড়েছে ভারত। ১৮.২ ওভারে ১৫০ রান ছুঁয়ে ফেলে তারা। আগের রেকর্ডটিও ছিল তাদেরই। ২০২৩ সালে ত্রিনিদাদে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে ২১.১ ওভারে স্কোর বোর্ডে দেড় শ’ রান জমা করেছিল ভারত।

৪. টেস্ট ক্রিকেটে দ্রুততম ২০০ রান: টেস্ট ক্রিকেটে দ্রুততম ২০০ রানের বিশ্বরেকর্ড এতোদিন ছিল অস্ট্রেলিয়ার দখলে। ২০১৭ সালে সিডনিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে ২৮.১ ওভারে দুশো রানের গণ্ডি ছুঁয়েছিল অজিরা। গতকাল সেই রেকর্ড ভেঙে দেয় ভারত। বাংলাদেশের ২৪.২ ওভারে দুশো রান করে ফেলে তারা।

৫. টেস্ট ক্রিকেটে দ্রুততম ২৫০ রান: ইংল্যান্ডের আরও একটি বিশ্বরেকর্ড ভেঙেছে ভারত। টাইগারদের বিপক্ষে আড়াই শ’ রান তুলতে রোহিত অ্যান্ড কোং খরচ করেছেন ৩০.১ ওভার। এর আগে ২০২২ সালে রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩৪ ওভারে ২৫০ রান তুলেছিল ইংল্যান্ড।

৬. মিরাজের ৩০০ উইকেট: বাংলাদেশের চতুর্থ বোলার হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৩০০ উইকেটের মাইলফলক ছুঁয়েছেন মেহেদি হাসান মিরাজ। তার আগে এই মাইলফলকে পৌঁছেছেন সাকিব আল হাসান (৭১২), মাশরাফি বিন মর্তুজা (৩৮৯) এবং মোস্তাফিজুর রহমান (৩২৩)।

৭. কোহলির ২৭ হাজার রান: আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের তিন সংস্করণ মিলিয়ে ২৭ হাজার রানের মাইলফলক ছুঁয়েছেন বিরাট কোহলি। তার আগে এতো রান করতে পেরেছেন কেবল তিনজন। ভারতের শচীন টেন্ডুলকার, অস্ট্রেলিয়ার রিকি পন্টিং এবং শ্রীলঙ্কার কুমার সাঙ্গাকারা ২৭ হাজার রানের মাইলফলকে পৌঁছেছিলেন।

৮. দ্রুততম ২৭ হাজার রান: তিন সংস্করণ মিলিয়ে সবচেয়ে কম সময়ে ২৭ হাজার রানের মাইলফলক ছুঁয়েছিলেন শচীন। গতকাল তার রেকর্ড ভেঙে দিয়েছেন কোহলি। এই মাইলফলকে পৌঁছাতে তার লেগেছে ৫৯৪ ইনিংস। শচীন এই মাইলফলক ছুঁয়েছিলেন ৬২৯তম ইনিংসে।

৯. প্রথম দুই বলে ছক্কা: কানপুর টেস্টের আগে লাল বলের ক্রিকেটে ইনিংস শুরুর দুই বলে ছক্কার নজির ছিল তিনজনের। ১৯৪৮ সালে ফফি উইলিয়ামস, ২০১৩ সালে শচীন এবং ২০১৯ সালে উমেশ যাদব ইনিংস এই নজির গড়েন। গতকাল খালেদ আহমেদকে দুবার উড়িয়ে তাদের পাশে নাম লেখান রোহিত।

১০. জাদেজার ৩০০ উইকেট: ভারতের সপ্তম বোলার হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে ৩০০ উইকেটের গণ্ডি ছুঁয়েছেন রবিন্দ্র জাদেজা। তার আগে ভারতের কপিল দেব, অনিল কুম্বলে, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, হরভজন সিং, জহির খান এবং ইশান্ত শর্মা লাল বলের ক্রিকেটে উইকেট সংখ্যায় ট্রিপল সেঞ্চুরি করেছিলেন।

১১. জাদেজার ডাবলস: টেস্টে ৩০০ উইকেট ও তিন হাজার রান করা দ্রুততম দ্বিতীয় অলরাউন্ডার হলেন জাদেজা। ৭৪তম টেস্টে ডাবলসের নজির গড়লেন তিনি। দ্রুততম তিন হাজার ও তিন শ’ উইকেটের রেকর্ডটি ইংল্যান্ডের সাবেক অলরাউন্ডার ইয়ান বোথামের দখলে। তার লেগেছিল ৭২টি টেস্ট।

১২. এক ক্যালেন্ডারে সর্বোচ্চ ছক্কা: টেস্ট ক্রিকেটে এক ক্যালেন্ডারে সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ড গড়ল ভারত। কানপুরে বাংলাদেশের বিপক্ষে স্বাগতিকরা হাঁকায় ১১টি ছক্কা। সবমিলিয়ে এ বছর ভারতীয়দের ছক্কা হলো ৯৬টি। তারা ভেঙেছে ইংল্যান্ডের রেকর্ড। ২০২২ সালে ৮৯টি ছক্কার বিশ্বরেকর্ড গড়েছিল ইংলিশরা।