আপনি পড়ছেন

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আমেরিকা ও তার মিত্রদের জন্য একটি স্পষ্ট ‘রেড লাইন’ টেনে দিয়েছেন। তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন, যদি ইউক্রেনকে পশ্চিমা দীর্ঘপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলা চালাতে দেওয়া হয়, তবে মস্কো পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করে পাল্টা জবাব দেওয়ার কথা বিবেচনা করবে।

vladimir putin 21ভ্লাদিমির পুতিন

এই ঘোষণা পশ্চিমাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে, পুতিন কি সত্যিই এটা করবেন?

এই যুদ্ধের ভবিষ্যৎ অনেকটাই এই প্রশ্নের ওপর নির্ভর করছে। ইউক্রেন এবং এর কিছু মিত্র দেশের বিশ্বাস, পুতিন যদি কেবল হুমকিই দিচ্ছেন, তাহলে পশ্চিমা বিশ্ব মস্কোর হুমকিকে উপেক্ষা করে কিয়েভকে আরও সামরিক সহায়তা দিতে পারে।

কিন্তু, যদি তিনি সত্যিই এটা করতে প্রস্তুত থাকেন, তাহলে বিশ্ব তৃতীয় যুদ্ধের আশঙ্কা অনেক বেড়ে যাবে - যে আশঙ্কার কথা মস্কো বারবার করে জানিয়ে আসছে এবং ওয়াশিংটনও স্বীকার করেছে।

বুধবার পুতিন, রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের ক্ষেত্রে আরও কিছু অবস্থার কথা উল্লেখ করেছেন।

তিনি বলেন, বিমান, ক্ষেপণাস্ত্র বা ড্রোন ব্যবহার করে যদি রাশিয়ার ওপর বৃহৎ পরিসরে প্রচলিত অস্ত্রে হামলা করা হয়, তাহলে রাশিয়া পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে। এমনকি, যদি কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র, রাশিয়ার ওপর হামলাকারী দেশকে সহায়তা করে, তাহলে সেই রাষ্ট্রকেও রাশিয়ার শত্রু হিসেবে বিবেচনা করা হবে।

পুতিনের এই দুটি শর্তই সরাসরি প্রযোজ্য হবে যদি পশ্চিমা বিশ্ব ইউক্রেনকে রাশিয়ার গভীরে আমেরিকান ‘আর্মি ট্যাকটিক্যাল মিসাইল সিস্টেম’ এবং ব্রিটিশ স্টর্ম শ্যাডো এর মতো দীর্ঘপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালাতে অনুমতি দেয়। পুতিন আগেই বলেছেন যে, এই ধরনের হামলার জন্য পশ্চিমা উপগ্রহ ও লক্ষ্যবস্তু চিহ্নিতকরণে সহায়তার প্রয়োজন হবে।

‘এটি ছিল খুবই স্পষ্ট বার্তা, ভুল করবেন না - এই ধরনের যে কোনো পদক্ষেপের অর্থ হতে পারে পারমাণবিক যুদ্ধ,’ বলেন প্রাক্তন সোভিয়েত ও রুশ কূটনীতিক নিকোলাই সকভ।

লন্ডন-ভিত্তিক হেনরি জ্যাকসন সোসাইটি থিঙ্ক-ট্যাঙ্কের পারমাণবিক বিশ্লেষক বাহরাম গিয়াসি, পুতিনের এই মন্তব্যের সময় এবং ইউক্রেনের দীর্ঘপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র চাওয়ার প্রচেষ্টার মধ্যে একটি যোগসূত্র খুঁজে পেয়েছেন। তিনি এটাও উল্লেখ করেছেন যে, রাষ্ট্রপতি ভলোদিমির জেলেনস্কি এই সপ্তাহে মার্কিন রাষ্ট্রপতি জো বাইডেনের কাছে এই বিষয়ে আবেদন জানাবেন।

‘পুতিন বলছেন: এখানেই থামুন,’ বলেন গিয়াসি।

পারমাণবিক ভয়ভীতি

জেলেনস্কির প্রধান পরিচালক পুতিনকে ‘পারমাণবিক ভয়ভীতি’ দেখানোর অভিযোগ এনেছেন।

‘আমার মতে, এটি পুতিনের দুর্বলতার আরেকটি প্রমাণ ও ফাঁকি। তিনি পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করার সাহস করবেন না কারণ এতে তিনি পুরোপুরি একঘরে হয়ে যাবেন,’ এক্সে লিখেছেন ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রাক্তন উপদেষ্টা অ্যান্টন গেরাশচেঙ্কো।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেন, পুতিনের হুমকি দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং সময়োপযোগী নয়। তিনি আরও বলেন, এটি প্রথম বার নয় যে তিনি ‘পারমাণবিক তরবারি ঝাঁকিয়ে’ দেখাচ্ছেন।

সুইডিশ ইনস্টিটিউট অফ ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের বিশ্লেষক অ্যান্ড্রেয়াস উমল্যান্ড, পুতিনকে মানসিক চাপ দেওয়ার খেলা খেলার অভিযোগ করেছেন।

‘এটি ক্রেমলিনের একটি মানসিক কর্মকাণ্ড, যার পেছনে কোনো বাস্তবতা নেই। এটি কেবল ইউক্রেনকে সমর্থনকারী দেশগুলোর নেতা এবং ভোটারদের ভয় দেওয়ার জন্য পরিকল্পিত,’ তিনি লিখেছেন।

অসলোর একজন গবেষক এবং প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ ফ্যাবিয়ান হফম্যান বলেন, তিনি মনে করেন না যে পুতিনের মন্তব্যকে উপেক্ষা করা যেতে পারে। তবে তিনি এটাও বলেন যে অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেওয়াও ঠিক হবে না।

‘রাশিয়া শীঘ্রই পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করবে না,’ তিনি এক্সে লিখেছেন।

হফম্যান বলেন, রাশিয়া যদি পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকে, তাহলে প্রথমে তারা তাদের গোপন স্থান থেকে পারমাণবিক ওয়ারহেড বের করে ক্ষেপণাস্ত্রের সঙ্গে সংযুক্ত করবে। এরপর তারা বৃহৎ পরিসরে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করবে, যেমন তাদের সিলোগুলোকে প্রস্তুত রাখা এবং বোমারু বিমানগুলোকে সতর্ক অবস্থানে রাখা। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এই সবকিছুই লক্ষ্য করতে পারবে।

রাশিয়া বিষয়ক বিশেষজ্ঞ মার্ক গ্যালিয়ট্টি লিখেছেন, ‘কথা বলা সহজ এবং এর রাজনৈতিক প্রভাব থাকে। কিন্তু পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের জন্য প্রকৃত ইচ্ছার কোনো প্রমাণ নেই এবং রাশিয়া যদি কখনও এই ধরনের কোনো পদক্ষেপ নিতে চায়, তাহলে আমরা তা অবশ্যই জানতে পারব।’

পারমাণবিক হুমকির সীমা হ্রাস

তবে, এবার পুতিন অতীতের তুলনায় বেশি স্পষ্ট ভাবে বলেছেন যে, কোন কোন পরিস্থিতিতে রাশিয়া পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে। তার মুখপাত্র বৃহস্পতিবার বলেন, পুতিনের এই মন্তব্যের মাধ্যমে পশ্চিমা দেশগুলোকে একটি স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে যে, রাশিয়ার ওপর হামলায় তাদের যেকোনো ধরনের অংশগ্রহণের ভয়াবহ পরিণতি হবে।

পুতিনের ঘোষিত এই পরিবর্তন, কিছু কট্টরপন্থী মন্তব্যকারীর চাওয়ার তুলনায় অনেকটাই কম। তাদের মধ্যে সবচেয়ে পরিচিত ব্যক্তি সের্গেই কারাগানভ দীর্ঘদিন ধরে ইউরোপে একটি সীমিত পারমাণবিক হামলার পক্ষে বক্তব্য দিয়ে আসছেন। তার মতে, এই ধরনের একটি হামলা রাশিয়ার শত্রুদের ঘুম ভাঙিয়ে" দেবে এবং তাদেরকে রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্রের ক্ষমতা সম্পর্কে সচেতন করে তুলবে।

কার্যত, এই পরিবর্তনের মাধ্যমে রাশিয়ার পারমাণবিক ছাতার আওতায় এখন তাদের ঘনিষ্ঠ মিত্র বেলারুশও অন্তর্ভুক্ত হলো। এই পরিবর্তনের ফলে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের ক্ষেত্রে রাশিয়ার সীমারেখা আরও নিচে নেমে এসেছে। উদাহরণস্বরূপ, এখন রাশিয়া যদি মনে করে যে, তাদের ওপর প্রচলিত অস্ত্র ব্যবহার করে এমন কোনো হামলা করা হয়েছে যা তাদের ‘সার্বভৌমত্বের জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ,’ তাহলে তারা পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারবে।

পূর্বে, রাশিয়ার পারমাণবিক নীতিতে কেবলমাত্র ‘রাষ্ট্রের অস্তিত্বের জন্য হুমকি’ এর কথাই বলা হতো।

পুতিন এই ঘোষণা দিয়েছেন একটি চার মিনিটের ভিডিও বার্তার মাধ্যমে। ভিডিওতে তাকে নিরাপত্তা পরিষদের নয়জন সদস্যের সম্মুখে কথা বলতে দেখা গেছে। এই পরিষদ বছরে দুবার পারমাণবিক প্রতিরোধ বিষয়ে আলোচনা করার জন্য বৈঠক করে।

তিনি বলেন, পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার একটি চরম পদক্ষেপ এবং রাশিয়া সর্বদা এই বিষয়টি খুবই দায়িত্বের সঙ্গে গ্রহণ করে এসেছে।

মন্ত্রী এবং গোয়েন্দা প্রধানরা খুব মনোযোগ সহকারে তার কথা শুনছিলেন। কেউ কেউ অস্থির হয়ে বসে ছিলেন আবার কেউ কাগজপত্র ঘাঁটছিলেন। রসাটমের প্রধান এবং পরিষদের একজন সদস্য আলেক্সি লিখাচেভ খুব মনোযোগ সহকারে নোট নিচ্ছিলেন।

তবে পুতিনের এই বার্তার প্রকৃত ঠিকানা ছিল কিয়েভ, ওয়াশিংটন এবং লন্ডন।

রাশিয়ান রাজনৈতিক বিশ্লেষক ইয়েভজেনি মিনচেঙ্কো বলেন, এই পরিবর্তিত নীতির মাধ্যমে ইউক্রেন এবং পশ্চিমা বিশ্বকে একটি স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে যে, রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ আরও বিস্তৃত না করাই তাদের উচিত।

‘তোমরা যদি তোমাদের প্রক্সি ব্যবহার করে আমাদেরকে মেরে ফেলার চেষ্টা করো, তাহলে আমরা তোমাদের প্রক্সি এবং তোমাদের দু'জনকেই মেরে ফেলব,’ এটাই ছিল বার্তা, বলেন তিনি।

ক্রেমলিনের প্রাক্তন উপদেষ্টা সের্গেই মারকভ বলেন, এই পরিবর্তনের ফলে রাশিয়া এখন কিছু কিছু পরিস্থিতিতে, বিশেষ করে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে, কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারবে।

‘পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের ক্ষেত্রে সীমারেখা কেমন হবে তা পরিবর্তন করা হয়েছে। এখন রাশিয়ার জন্য পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করা আরও সহজ হবে,’ তার ব্লগে লিখেছেন মারকভ।

‘পারমাণবিক নীতিতে পরিবর্তন আনার প্রধান কারণ হলো পশ্চিমা বিশ্বের পক্ষ থেকে পূর্ণ মাত্রার যুদ্ধের হুমকি। পশ্চিমা বিশ্ব নিশ্চিত যে রাশিয়া প্রথমে কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করবে না। রাশিয়া এখন বলছে যে তারা এটা করতে প্রস্তুত।’

মারকভ বলেন, রাশিয়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে। এমনকি, যদি ইউক্রেনীয় যুদ্ধবিমানগুলো রোমানিয়া অথবা পোল্যান্ড থেকে রাশিয়ার ওপর হামলা চালায় এবং যদি কিয়েভ - মার্কিন অথবা ব্রিটিশ উপগ্রহ সহায়তায় - মস্কো অথবা রাশিয়ার কেন্দ্রীয় অঞ্চলে হামলা চালায়, তাহলে রাশিয়া সেই দুটি দেশের বিমানঘাঁটিগুলোতেও পারমাণবিক হামলা চালাতে পারে।

'কোনো সম্মান নেই'

রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে নিয়মিত উপস্থিত থাকা একজন সামরিক বিশ্লেষক ইগর করোটচেঙ্কো বলেন, পারমাণবিক নীতিতে এই পরিবর্তন আনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল, কারণ পশ্চিমা বিশ্ব রাশিয়ার পূর্ববর্তী সকল হুমকিকে উপেক্ষা করে এসেছে। তিনি এই বছরের শুরুতে রাশিয়ার পক্ষ থেকে আয়োজিত তিনটি সামরিক অভিযানের কথা উল্লেখ করেন যেখানে তারা কৌশলগত পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছিল। কিন্তু তার মতে, পশ্চিমা দেশগুলো এই বিষয়টি কোনো গুরুত্ব দেয়নি।

‘আমরা দেখতে পাচ্ছি যে পশ্চিমা বিশ্ব আর কোনো ‘রেড লাইন’ কে সম্মান করছে না। তারা মনে করছে যে ইউক্রেনকে যুদ্ধাস্ত্র সরবরাহ করা অথবা তাদের সহায়তায় রাশিয়ার গভীরে অবস্থিত স্থাপনায় হামলা চালানোর ফলে রাশিয়া কখনই পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করবে না,’ ইজভেস্টিয়া নামক একটি দৈনিক পত্রিকায় বলেন করোটচেঙ্কো।

রাষ্ট্রপতি পুতিনকে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে পরামর্শ দেওয়ার জন্য যে পরিষদ কাজ করে, তার একজন সদস্য ভ্লাদিমির আভাৎকভ বলেন, রাশিয়ার এই ঘোষণার ফলে ইউক্রেনকে ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করার ক্ষেত্রে পশ্চিমা বিশ্বকে এখন আরও বেশি চিন্তা ভাবনা করতে হবে।

টেলিগ্রামে তিনি লিখেছেন, ‘তাদেরকে এখন ভাবতে দিন। এটি তাদেরকে কেবল সতর্কতা দেওয়ার জন্য নয়, বরং তাদের হারিয়ে যাওয়া ভয় ফিরিয়ে আনার জন্য একটি প্রচেষ্টা। এবং হয়তো এর মাধ্যমে তারা কিছু কৌশলগত চিন্তাভাবনা করতে শুরু করবে।"

রাশিয়ার জাতীয়তাবাদী এবং যুদ্ধ বিষয়ক ব্লগাররা পুতিনের এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাদের মধ্যে অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে ইউক্রেনকে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য করার জন্য পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের পক্ষে বক্তব্য দিয়ে আসছেন। পুতিনের এই ঘোষণা তাদের মধ্যে একটি আলোচনার সৃষ্টি করেছে যে, কোন কোন ক্ষেত্রে রাশিয়া পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে।

রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান দিমিত্রি মেদভেদেভ বলেন, পুতিনের এই কথাগুলো ইউক্রেন এবং পশ্চিমা বিশ্বকে ভাবনার অবকাশ দেবে।

‘আমাদের দেশের পারমাণবিক নীতিতে আনা এই পরিবর্তন, সেই সকল বিরোধীদের উত্তেজনা কে ঠান্ডা করে দেবে যারা এখনও তাদের আত্মসংরক্ষণের বোধ হারায়নি,’ এক বিবৃতিতে বলেন তিনি।

'ছোট বাচ্চাদের মতো'

প্রাক্তন রাশিয়ান কূটনীতিক সোকভ বলেন, মস্কো এখন এই বিষয়টি নিয়ে খুবই হতাশ যে, পশ্চিমা বিশ্ব তাদের বারবার দেওয়া পারমাণবিক হুমকিকে কান দিচ্ছে না।

তিনি বলেন, রাশিয়া যখন কৌশলগত পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র চালু করার জন্য তিন দফা প্রস্তুতিমূলক অভিযান চালায়, তখন মিডিয়া এবং বিশেষজ্ঞদের মধ্যে অভিযোগ উঠে যে, পশ্চিমা দেশগুলো এই বিষয়টিতে কোনো গুরুত্ব দিচ্ছে না।

‘তাই এখন তারা তাদের বার্তা আরও শক্তিশালী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে,’ বলেন সোকভ।

‘পুতিন মনে করেন যে পশ্চিমা বিশ্ব ছোট বাচ্চাদের মত যাদের প্রতিটি ছোট ছোট জিনিস বুঝিয়ে বলতে হয় কারণ তারা সহজে কিছু বোঝে না।’

সোকভ বলেন, তিনি রাজনীতিবিদ এবং মন্তব্যকারীদের ‘বেপরোয়া কথাবার্তা’ নিয়ে উদ্বিগ্ন। তারা বলছেন যে পশ্চিমা বিশ্ব ইতিমধ্যেই রাশিয়ার অনেকগুলো ‘রেড লাইন’ অতিক্রম করে ফেলেছে - উদাহরণস্বরূপ, ইউক্রেনকে ট্যাঙ্ক এবং এফ-১৬ যুদ্ধবিমান সরবরাহ করে - এবং তাই রাশিয়ার হুমকিকে উপেক্ষা করা যেতে পারে।

তিনি বলেন, বাস্তবে পশ্চিমা বিশ্ব এখনও রাশিয়ার দুটি ‘রেড লাইন’ অতিক্রম করেনি: ইউক্রেনে যুদ্ধ করার জন্য ন্যাটো বাহিনী প্রেরণ করা এবং ইউক্রেনকে রাশিয়ার ওপর দীর্ঘপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করার অনুমতি দেওয়া।

‘আমরা কীভাবে বলব যে পুতিন কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাবেন, যখন আমরা এখনও তার কোনো ‘রেড লাইন’ অতিক্রম করিনি?’ তিনি এক টেলিফোন সাক্ষাৎকারে বলেন।

তিনি বলেন, এই ধরনের মনোভাব অনুমানের ওপর নির্ভরশীল, কোন তথ্যের ওপর নয়। আমি সত্যিই এই ধরনের বেপরোয়া কথাবার্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন, কারণ এর ফলে আমরা এমন একটি পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে পারি যা আমাদের জন্য পুরোপুরি অপরিচিত ... যদি আমরা ঝুঁকিগুলো বিবেচনা না করি, তাহলে আমাদেরকে একটি অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হবে।’

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.