দেশে কোটিপতি গ্রাহক এখন ১ লাখ ১৮ হাজার ৭৮৪

দেশে চলমান আর্থিক সংকট, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও চরম মূল্যস্ফীতির মধ্যেও বেড়েছে কোটিপতির সংখ্যা। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত জুন পর্যন্ত আগের তিন মাসে ব্যাংকে কোটিপতি গ্রাহক বেড়েছে ২৮৯৪ জন।

তিন মাসে কোটিপতি গ্রাহক বেড়েছে ২হাজার ৮৯৪ জন

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বুধবার প্রকাশিত তথ্যানুযায়ী, চলতি ২০২৪ সালের জুন প্রান্তিক শেষে ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে কোটি টাকার বেশি রয়েছে- এমন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের হিসাব সংখ্যা ১ লাখ ১৮ হাজার ৭৮৪টি, যা আগের প্রান্তিক মার্চের শেষ তারিখের চেয়ে ২ হাজার ৮৯৪টি বেশি।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি বছরের জুন মাস শেষে ব্যাংক খাতে আমানতকারী দাঁড়িয়েছে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান মিলে ১৫ কোটি ৮৪ লাখ ৭৭ হাজার ৫২৩। এসব হিসাবে জমা রয়েছে ১৮ লাখ ৩৮ হাজার ৮৩ কোটি টাকা।

তথ্যমতে, ১ কোটি টাকার বেশি আমানত রয়েছে- এমন ব্যাংক হিসাব ১ লাখ ১৮ হাজার ৭৮৪টি। এসব হিসাবে জমা রয়েছে ৭ লাখ ৭৩ হাজার ৫৯ কোটি টাকা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত মার্চ পর্যন্ত ১ কোটি টাকার বেশি আমানত রয়েছে, এমন ব্যাংক হিসাব ছিল ১ লাখ ১৫ হাজার ৮৯০টি। অর্থাৎ তিন মাসের ব্যবধানে কোটিপতি হিসাব (অ্যাকাউন্ট) বেড়েছে ২ হাজার ৮৯৪টি।

প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত এক কোটি টাকার বেশি আমানতধারী ব্যাংক হিসাব ছিল ১ লাখ ১৬ হাজার ৯০৮টি। আর এসব অ্যাকাউন্টে জমা ছিল ৭ লাখ ৪১ হাজার ৪৬৬ কোটি টাকা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলেন, কোটি টাকার হিসাব মানেই কোটিপতি ব্যক্তির হিসাব নয়। কারণ ব্যাংকে ১ কোটি টাকার বেশি অর্থ জমা রাখার তালিকায় ব্যক্তি ছাড়াও অনেক প্রতিষ্ঠান আছে। আবার একটি প্রতিষ্ঠান বা একজন ব্যক্তির একাধিক হিসাবও থাকতে পারে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যানুযায়ী, ১৯৭২ সালে দেশে কোটিপতি আমানতকারী ছিলেন ৫ জন, পরে ১৯৭৫ সালে গিয়ে উন্নীত হয় ৪৭ জনে। ১৯৮০ সালেও দেশে কোটিপতি ব্যাংকগ্রাহক ছিলেন মাত্র ৯৮ জন।

এরপর ১৯৯০ সালে গিয়ে তা দাঁড়ায় ৯৪৩টিতে, ১৯৯৬ সালে বেড়ে হয় ২ হাজার ৫৯৪টি, ২০০১ সালে ৫ হাজার ১৬২টি এবং ২০০৮ সালে ছিল মোট ১৯ হাজার ১৬৩টি কোটি টাকার হিসাব।

২০২০ সালের ডিসেম্বর মাস শেষে কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা দাঁড়ায় ৯৩ হাজার ৮৯০। ২০২১ সালের ডিসেম্বর বেড়ে তা হয় ১ লাখ ১ হাজার ৯৭৬টি। ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত কোটিপতি অ্যাকাউন্ট ছিল ১ লাখ ৯ হাজার ৯৪৬টি।

২০২৩ সালের ডিসেম্বরে দাঁড়ায় ১ লাখ ১৬ হাজার ৯০৮টিতে। সর্বশেষ ২০২৪ সালের জুনে সেই হিসাবের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১৮ হাজার ৭৮৪টিতে।