জয়শঙ্কর: ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার সম্পর্ক ইতিবাচক থাকবে

ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর আশাবাদ ব্যক্ত করে বরেছেন, প্রতিবেশী শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশের সাথে ভারতের সম্পর্ক ‘ইতিবাচক ও গঠনমূলক’ থাকবে। মঙ্গলবার ‘ইন্ডিয়া, এশিয়া অ্যান্ড দ্য ওয়ার্ল্ড’ শীর্ষক এক আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

এস জয়শঙ্কর

এশিয়া সোসাইটি এবং এশিয়া সোসাইটি পলিসি ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

সম্প্রতি শ্রীলঙ্কা এবং বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তন ভারতের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে - এমন এক প্রশ্নের জবাবে জয়শঙ্কর বলেন, ‘আমি আপনাদের অনুরোধ করব, বিষয়টিকে এতটা নির্ধারিত করে না ভাবতে। এমনটা নয় যে ভারত তার প্রতিবেশীদের প্রতিটি রাজনৈতিক পদক্ষেপ নিয়ন্ত্রণ করতে চায়।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিটি দেশেরই নিজস্ব গতিশীলতা থাকবে। বিদেশ নীতিতে, আপনাকে সেই গতিশীলতা পড়ার, অনুমান করার এবং তারপরে তার প্রতি সাড়া দেওয়ার চেষ্টা করতে হয়। আমি আত্মবিশ্বাসী যে, পরস্পরের ওপর নির্ভরতা, পারস্পরিক সুবিধা এবং ভালো সম্পর্ক বজায় রাখার ক্ষমতা আমাদের সকলের স্বার্থই রক্ষা করবে। বাস্তবতা নিজেই স্পষ্ট হবে। ইতিহাস তাই বলে।’

জয়শঙ্কর আরও বলেন, ‘প্রতি কয়েক বছর পরপর, আমাদের অঞ্চলে কিছু না কিছু ঘটেই এবং তখনই মানুষ মনে করে যে পরিস্থিতি অপরিবর্তনীয় হয়ে গেছে। কিন্তু আমরা দেখেছি কিভাবে সময়ের সাথে সাথে সমস্যার সমাধান হতে থাকে। তাই আমি আশাবাদী যে, এই দুটি দেশের ক্ষেত্রেও আমাদের সম্পর্ক ইতিবাচক এবং গঠনমূলক থাকবে।’

শ্রীলঙ্কার বিষয়ে জয়শঙ্কর বলেন, যখন কলম্বো একটি গভীর অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি হয়েছিল এবং "খুব স্পষ্টভাবে বলতে গেলে যখন আর কেউ এগিয়ে আসেনি" তখন ভারত এগিয়ে এসেছিল।

তিনি বলেন, ‘আমি খুবই খুশি যে আমরা এটা করেছি। আমরা সময়োচিত ভাবে এবং যথেষ্ট পরিমাণে সহায়তা করেছি।’

তিনি আরও জানান যে, ভারত কার্যকর ভাবে ৪.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা দিয়েছে এবং এই পদক্ষেপ শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করেছে।

জয়শঙ্কর বলেন, ‘বাকিটা তাদের ওপর নির্ভর করে। আমরা যখন সেটা করেছিলাম, তখন এমন কোনো রাজনৈতিক শর্ত ছিল না। আমরা একজন ভালো প্রতিবেশী হিসেবে কাজ করেছি যারা তাদের দোরগোড়ায় এ ধরনের অর্থনৈতিক পতন দেখতে চায় না।’

তিনি আরও বলেন, শ্রীলঙ্কায় রাজনৈতিকভাবে কী ঘটছে ‘তা তাদের রাজনীতির বিষয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিটি দেশের নিজস্ব গতিশীলতা থাকবে। আমাদের উদ্দেশ্য এমনটা বলা নয় যে তাদের গতিশীলতাকে আমাদের জন্য যা ভালো বলে মনে হয় তার সঙ্গে তাল মিলাতে হবে। আমার মনে হয় এটাই বাস্তবতা। প্রত্যেকেই তাদের পছন্দ করে এবং তারপর দেশগুলি পরস্পরের সঙ্গে সমন্বয় করে এবং কাজ করে যাওয়ার পথ খুঁজে পায়।’

বাংলাদেশের ক্ষেত্রে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি একটু আলাদা। গত দশকে আমরা যা করেছি তা হলো বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প হাতে নেওয়া যা আমাদের উভয়ের জন্যই ভালো হয়েছে। সামগ্রিকভাবে অর্থনৈতিক কার্যকলাপ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং অঞ্চলটির যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে।’

জয়শঙ্কর বলেন, উভয় দেশই এর মাধ্যমে অনেক লাভবান হয়েছে।