বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার হওয়া সত্ত্বেও সৌদি আরব থেকে রেমিট্যান্স প্রবাহ গত তিন বছরে অর্ধেকে নেমে এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২১ অর্থবছরের তুলনায় ২০২৪ অর্থবছরে সৌদি আরব থেকে রেমিট্যান্স আয় ৩.৮ বিলিয়ন ডলার বা ৫২ শতাংশ কমেছে।

dollar 1মার্কিন ডলার

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২১ অর্থবছরে ৫.৭২ বিলিয়ন ডলার, ২০২২ অর্থবছরে ৪.৫৪ বিলিয়ন ডলার, ২০২৩ অর্থবছরে ৩.৭৬ বিলিয়ন ডলার এবং ২০২৪ অর্থবছরে ২.৭৪ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে সৌদি আরব থেকে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য সবচেয়ে গন্তব্য হওয়া সত্ত্বেও সাম্প্রতিক সময়ে সৌদি আরব থেকে রেমিট্যান্স প্রবাহ উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।

অন্যদিকে, সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশি শ্রমিকদের সংখ্যা অনেক কম হলেও, একই সময়ে সেখান থেকে রেমিট্যান্স প্রবাহে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি দেখা গেছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, দক্ষ শ্রমিকদের অংশগ্রহণ এই আয় বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে বলে মনে করা হয়।

আমিরাত থেকে রেমিট্যান্স আয় ২০২২ অর্থবছরে ২.০৭ বিলিয়ন ডলার, ২০২৩ অর্থবছরে ৩.০৩ বিলিয়ন ডলার এবং ২০২৪ অর্থবছরে ৪.৬ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে।

জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য অনুসারে, ২০২৩ সালে ৪,৯৭,৬৭৪ জন বাংলাদেশি শ্রমিক সৌদি আরবে যান, যেখানে আমিরাতে যান ৯৮,৪২২ জন।

শুধু ২০২৪ অর্থবছরের এপ্রিল-জুন ত্রৈমাসিকেই, ১,১৮,০০০-এর বেশি শ্রমিক সৌদি আরবে যান, যেখানে আমিরাতে যান মাত্র ১০,৭০৫ জন।

সৌদি আরবে বাংলাদেশি শ্রমিকদের সংখ্যা বেশি হওয়া সত্ত্বেও সেখান থেকে রেমিট্যান্স প্রবাহ আমিরাতের সঙ্গে তাল মিলাতে পারেনি।

বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার আয়ের প্রধান উৎস সৌদি আরব। তাই সেখান থেকে রেমিট্যান্স কমে যাওয়া উদ্বেগের বিষয়। অর্থনীতিবিদরা এই পতনের জন্য বিভিন্ন কারণ চিহ্নিত করেছেন।

তারা বলেন, শ্রমশক্তির গঠনে পরিবর্তন, যেমন- কম দক্ষ শ্রমিকদের অনুপাত বেড়ে যাওয়া এর একটি কারণ। কম দক্ষ শ্রমিকদের আয় সাধারণত দক্ষ শ্রমিকদের তুলনায় কম।

এছাড়াও, শ্রমবাজারে প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি, শ্রম বিষয়ক কঠোর নিয়ম-নীতি এবং সৌদি আরবের অর্থনৈতিক মন্দা এই পতনের পেছনে ভূমিকা রাখতে পারে।

তবে, আমিরাত থেকে রেমিট্যান্সের হঠাৎ বৃদ্ধি নিয়েও তারা সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেছেন, আমিরাত অবৈধ অর্থ প্রবাহের একটি কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।

২০২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ রেমিট্যান্স হিসেবে ২৩.৯১ বিলিয়ন ডলার পেয়েছে। ২০২৩ অর্থবছরের ২১.৬১ বিলিয়ন ডলারের তুলনায় যা ১০.৬৫ শতাংশ বেশি।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রবাসী শ্রমিকদের মোট সংখ্যা বৃদ্ধি এবং ডলারের মূল্যবৃদ্ধি রেমিট্যান্স বৃদ্ধির প্রধান কারণ। ডলারের মূল্যবৃদ্ধির ফলে প্রবাসীরা বেশি বেশি টাকা দেশে পাঠাতে উৎসাহিত হয়েছেন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, কোন দেশ থেকে কত রেমিট্যান্স আসছে তাতেও পরিবর্তন এসেছে।

২০২৪ অর্থবছরের এপ্রিল-জুন ত্রৈমাসিকে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স পেয়েছে আমিরাত থেকে। এই সময়কালে আমিরাত থেকে ১,৩২৯.৪৮ মিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, যা মোট রেমিট্যান্সের ১৯.৪৪ শতাংশ।

আমেরিকা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স প্রেরণকারী দেশ। এই সময়কালে আমেরিকা থেকে ১,০১৮.২১ মিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, যা মোট রেমিট্যান্সের ১৪.৮৯ শতাংশ।

অন্যদিকে, সৌদি আরবে প্রায় অর্ধেক বাংলাদেশি শ্রমিক কাজ করলেও, সেখান থেকে মোট রেমিট্যান্সের মাত্র ১১.৩২ শতাংশ এসেছে।

বিএমইটি'র তথ্য অনুসারে, ২০২৪ অর্থবছরের এপ্রিল-জুন ত্রৈমাসিকে ২,৭২,১৪১ জন বাংলাদেশি শ্রমিক বিদেশে গেছেন। এর মধ্যে প্রায় ১,১৮,৫৮১ জন গেছেন সৌদি আরবে।

এই সময়কালে বিদেশে যাওয়া মোট শ্রমিকদের মধ্যে ১১,৯৭০ জন ছিলেন নারী, যা মোট বিদেশগামী শ্রমিকদের ৪.৪০ শতাংশ।

তবে, ২০২১ সালের অক্টোবর-ডিসেম্বর ত্রৈমাসিকের পর থেকে বিদেশে যাওয়া নারী শ্রমিকদের সংখ্যা ক্রমশ কমছে।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.