ঢাবি ক্যাম্পাসে ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ ব্যক্তির মর্মান্তিক মৃত্যু

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলের ভেতরে এক ব্যক্তিকে জনতার হাতে পিটিয়ে হত্যার ঘটনার তদন্তে বৃহস্পতিবার সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কর্তৃপক্ষ। হাসপাতাল ও বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নিহত তোফাজ্জলকে চোর সন্দেহ করে হলের একদল শিক্ষার্থী পিটিয়ে হত্যা করে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘এই ঘটনায় আমরা মর্মাহত। ঘটনার তদন্তে সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং আজ সন্ধ্যার মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।’

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে জানা যায়, বুধবার সন্ধ্যায় ওই ব্যক্তি হলে ঢুকে পড়েন। এরপর কিছু শিক্ষার্থী তাকে ধরে ফেলে এবং আগের দিন হল থেকে ছয়টি মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ চুরির ঘটনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করতে থাকে।

তীব্র জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে ওই ব্যক্তি জানান, তাকে কিছু খেতে দিলে তিনি আসল চোরদের সম্পর্কে তথ্য দেবেন।

শিক্ষার্থীরা তাকে খাবার দিলেও কথা অনুযায়ী সে তথ্য দিতে ব্যর্থ হন।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে আরও জানা যায়, এরপর ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা রাত ১০টা থেকে শুরু করে প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে ওই ব্যক্তিকে পিটিয়েছে।

ঘটনা সম্পর্কে অবগত হয়ে প্রক্টরিয়াল টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় তোফাজ্জলকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে থাকা কয়েকজন জানান, তোফাজ্জল একজন ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ ব্যক্তি ছিলেন।

নিহত তোফাজ্জল বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার কাঠালতলী ইউনিয়নের বাসিন্দা এবং তিনি ছিলেন এতিম।

প্রক্টর জানান, এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

তিনি আরও জানান, ফজলুল হক মুসলিম হলের আবাসিক শিক্ষক আলমগীর কবিরকে প্রধান করে এই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কমিটির অপর ছয় সদস্য হলেন — মোহাম্মদ শফিউল আলম খান, অধ্যাপক জহির রায়হান, মোহাম্মদ মাহবুব আলম, আসিফ আহমেদ, তৌহিদুল ইসলাম এবং এ কে এম নূরে আলম সিদ্দিকী।