জাবি ক্যাম্পাসে ‘গণপিটুনিতে’ প্রাক্তন ছাত্রলীগ নেতা নিহত

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ছাত্রলীগের একজন প্রাক্তন নেতাকে বুধবার রাতে ক্যাম্পাসে পিটিয়ে হত্যা করেছে বিশ্ববিদ্যালয়েরই একদল ছাত্র। নিহত শামীম আহমেদ ওরফে শামীম মোল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ৩৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস সংলগ্ন একটি এলাকায় বসবাস করতেন।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

পুলিশ জানিয়েছে, ক্যাম্পাসে পেটনোর প্রায় দুই ঘন্টা পর, রাত সাড়ে ১১ টার দিকে সাভারের গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।

শামীম জাবি ছাত্রলীগের জুয়েল-চাঁনচাল কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বুধবার রাত ৯টার দিকে জাবি উপাচার্যের বাসভবনের সামনে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে জয় বাংলা গেটে শামীমকে একদল ছাত্র মারধর করে। পরে তাকে ‘বিচারের আওতায় আনার’ উদ্দেশ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।

ছাত্রদের অভিযোগ, শামীম ক্যাম্পাস এবং আশেপাশের এলাকায় মাদকদ্রব্য বিক্রি, জমি দখল এবং চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জাবি প্রক্টর এ কে এম রাশিদুল আলম যে ঘরে শামীমকে আটকে রাখা হয়েছিল সেই ঘরের তালা খুলতে 'বাধ্য' হওয়ার পর, দ্বিতীয় দফায় শামীমকে কাঠের টুকরা দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করা হয়।

'ছাত্রদের দাবিতে' ফৌজদারি কার্যবিধির ২২, ২৬, ৪১, ৪২ ধারায় শামীমের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার পর, রাত সাড়ে ১০ টার দিকে আশুলিয়া থানা পুলিশের একটি দল তাকে উদ্ধার করে।

গণস্বাস্থ্য হাসপাতালের একজন কর্তব্যরত চিকিৎসকের বরাত দিয়ে আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু বকর সিদ্দিকী বলেন, ‘শামীম হাসপাতালে নেওয়ার পথেই মারা যান।’

তবে, জাবি প্রক্টর এ কে  রাশিদুল আলম এটিকে ‘অস্বাভাবিক মৃত্যু’ বলে অভিহিত করেছেন।

‘শামীম নিজেই পুলিশ ভ্যানে উঠেছিলেন এবং হাসপাতালে যাওয়ার পথে তিনি প্রাণ হারিয়েছেন তা বিশ্বাস করা কঠিন,’ দাবি করেন প্রক্টর।

তিনি তার কার্যালয়ে জনতার হাতে শামীমকে পিটিয়ে মারার অনুমতি দেওয়ার অভিযোগও অস্বীকার করেছেন।

এই ঘটনায় এখনও কোনো মন্তব্য করেননি জাবি উপাচার্য মোহাম্মদ কামরুল আহসান।

এদিকে, মৃত্যুর বিচার এবং ‘গণপিটুনি’ বন্ধের দাবিতে ক্যাম্পাসজুড়ে প্রতিবাদ বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।

একদল ছাত্র রাত দেড়টার দিকে ক্যাম্পাসে শামীম হত্যার বিচার এবং হত্যাকারীদের শাস্তির দাবিতে একটি মিছিল বের করে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনও এই হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভের ঘোষণা দিয়েছে।