বাঁশখালী বিদ্যুৎ কেন্দ্র: ক্যাপাসিটি চার্জে রেকর্ড, বিদ্যুৎ উৎপাদনে নয়

বিতর্কিত এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন বাঁশখালী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ তার অন্য প্রতিযোগীদের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি অর্থ পেয়েছে। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) তথ্যে এ তথ্য উঠে এসেছে।

এস আলম গ্রুপের লেগো

১,২২৪ মেগাওয়াট ক্ষমতার এই কেন্দ্রটি গত অর্থবছরে ২৪০.২৯ কোটি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে ৩,২৮৭.৮৬ কোটি টাকা ক্যাপাসিটি চার্জ পেয়েছে, যা প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ১৩.৬৮ টাকার ক্ষতিপূরণ।

অন্যদিকে, ১,৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্র একই সময়ে ৭৫৪.৮৭ কোটি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে ৪,২৯২ কোটি টাকা ক্যাপাসিটি চার্জ পেয়েছে, যা প্রতি ইউনিট ৫.৬৯ টাকা।

একইভাবে, ১,৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র পেয়েছে ৭.৯৬ টাকা এবং ১,৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার আদানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র পেয়েছে ৬.৬ টাকা প্রতি ইউনিট ক্যাপাসিটি চার্জ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাঁশখালী বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ প্রাপ্ত অর্থ বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতের চিরাচরিত চিত্র তুলে ধরে। সন্দেহজনক বিদ্যুৎ চুক্তির মাধ্যমে বেসরকারি বিনিয়োগকারীরা অতি মুনাফা লুটে নিচ্ছে।

বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতার জন্য প্রদেয় অর্থ হলো সরকার কর্তৃক বিদ্যুৎ চুক্তির আওতায় প্রদেয় অর্থ, যা বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ নির্বিশেষে বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের তাদের বিনিয়োগের সর্বোচ্চ মুনাফা নিশ্চিত করে।

বিপিডিবি জানায়, বাঁশখালী বিদ্যুৎ কেন্দ্র তার উৎপাদন ক্ষমতার মাত্র ২১ শতাংশ ব্যবহার করেছে। সংযোগ ব্যবস্থা নির্মাণে বিলম্ব এর অন্যতম কারণ বলে জানিয়েছে বিপিডিবি।

পরিবেশবাদীরা বলছেন, যথাযথ পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন ছাড়াই এই কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। স্থানীয় জনগণের তীব্র বিরোধিতার সম্মুখীন হয়েও এই কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের বর্তমান বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২৭,৭৯১ মেগাওয়াট। তবে, দেশটি নিয়মিতভাবে ১৩,০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সংগ্রাম করছে।

এ প্রেক্ষাপটে, ক্ষতিপূরণ আইনের আওতায় স্বাক্ষরিত বিদ্যুৎ চুক্তিগুলো মূল্যায়নের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি নিয়োগ করেছে।