জয়শঙ্কর: বাংলাদেশের সঙ্গে স্থিতিশীল সম্পর্ক চায় ভারত

ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলছেন, বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতা দেশটির ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়’। তবে, ভারত দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান সুস্থ ও স্থিতিশীল সম্পর্ক বজায় রাখতে আগ্রহী।

এস জয়শঙ্কর

আজ মঙ্গলবার এনডিটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে, জয়শঙ্কর এই মূলনীতির ওপর জোর দেন যে প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলি ‘পরস্পরের ওপর নির্ভরশীল’।

তিনি বলেন, ‘যা ঘটছে তা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। বাংলাদেশ আমাদের প্রতিবেশী এবং আমাদের পক্ষ থেকে সম্পর্কটি এমন যা আমরা স্থিতিশীল রাখতে চাই। আমাদের মধ্যে ভালো বাণিজ্য... আমাদের জনগণের মধ্যে সুসম্পর্ক... আমি সম্পর্কটি সেভাবেই রাখতে চাই।’

গত মাসে, সরকারি চাকরিতে কোটার প্রতিবাদে ছাত্রদের নেতৃত্বে সৃষ্ট আন্দোলনের ফলে, বাংলাদেশে ব্যাপক নাগরিক অস্থিরতা ও সহিংসতার সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা ত্যাগ করে ভারতের উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদের কাছে একটি বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। প্রত্যাশা করা হয়েছিল যে তিনি রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্য লন্ডনে যাবেন, তবে ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র এনডিটিভিকে জানিয়েছে যে তাদের নিয়ম অনুসারে আশ্রয় বা অস্থায়ী আশ্রয়ের জন্য লোকেদের সেই দেশে ভ্রমণের অনুমতি নেই। এখন পর্যন্ত, বিশ্বাস করা হয় যে হাসিনা ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার হেফাজতে রয়েছেন।

গত মাসে, জয়শঙ্কর ভারতীয় সংসদে জানিয়েছিলেন যে হাসিনার কার্যালয় ‘খুব অল্প সময়ের মধ্যে’ ঢাকা ত্যাগ করে দিল্লি যাওয়ার অনুমতি চেয়েছিল। একটি সর্বদলীয় ব্রিফিংয়ে তিনি জানান, ভারত সরকার হাসিনাকে তার পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সময় দিতে প্রস্তুত, যার মধ্যে রাজনৈতিক অবসর গ্রহণও থাকতে পারে।

গত সপ্তাহে, নোবেলজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস, যিনি বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তিনি বলেন যে তার দেশও ভারতের সঙ্গে পূর্বের সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চায়, তবে এই সম্পর্কের মধ্যে ‘ন্যায্যতা ও সমতা’ প্রতিফলিত হওয়া উচিৎ।

ইউনূস জানান যে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছ থেকে তিনি অভিনন্দনমূলক ফোন পেয়েছেন। ‘আমরা চাই বিশ্ব বাংলাদেশকে একটি শ্রদ্ধেয় গণতন্ত্র হিসেবে স্বীকৃতি দিক’  জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে বলেন ৮৪ বছর বয়সী ইউনূস।

এই সাক্ষাৎকারে, জয়শঙ্কর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং সেই সংঘর্ষে দিল্লির সম্ভাব্য শান্তিরক্ষী ভূমিকা, ইরানের নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির মন্তব্য, গাজায় যুদ্ধ এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির তৃতীয় মেয়াদের প্রথম ১০০ দিনে ব্যাপক বৈদেশিক সফর নিয়ে আলোচনা করেন।