ভারতের কমিউনিস্ট নেতা সীতারাম ইয়েচুরির প্রয়াণ

ভারতের বৃহত্তম কমিউনিস্ট পার্টি- সিপিআই (এম)’র নেতা সীতারাম ইয়েচুরি মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ৭২ বছর বয়সে তিনি দিল্লির একটি হাসপাতালে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি প্রায় এক মাস ধরে তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ নিয়ে হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। খবর বিবিসি ও দ্য হিন্দুর।

ভারতের সিপিআই (এম) নেতা সীতারাম ইয়েচুরি (১২ আগস্ট ১৯৫২-১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪) 

ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী) বা সিপিআই (এম) এর সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি কয়েক দশক ধরে দেশটির রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তিনি ২০০৫ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত রাজ্যসভা বা সংসদের উচ্চকক্ষের সদস্য ছিলেন।

ইয়েচুরি বামপন্থী স্টুডেন্ট ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ার সঙ্গে ছাত্র নেতা হিসাবে তার রাজনৈতিক জীবন শুরু করেছিলেন। তিনি ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস সরকারের আমলে ১৯৭৫ সালে জরুরি অবস্থার সময় গ্রেফতার হয়েছিলেন।

মুক্তির পর তিনি দিল্লির জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ে স্টুডেন্ট ফেডারেশনের সভাপতি হন, যেখানে তিনি অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা করছিলেন।

১৯৯৬ সালে, সীমারাম ১৩ টি দলের একটি জোট গঠনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন, যা দুই প্রধানমন্ত্রী - এইচডি দেবগৌড়া এবং আইকে গুজরাল - মেয়াদ ভাগ করে নিয়ে প্রায় দুই বছর ভারতে শাসন করেছে।

২০০৪ সালে ইয়েচুরির দল লোকসভা নির্বাচনে ঐতিহাসিক ৪৪টি আসন জিতেছিল। তখন সিপিআই(এম) সহ বাম দলগুলো কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সরকারকে ‘বাইরে থেকে’ সমর্থন করেছিল।

কিন্তু ২০০৮ সালে ভারত-মার্কিন পারমাণবিক চুক্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হিসাবে বামলগুলো তাদের সমর্থন প্রত্যাহার করে নেয়।

২০১৫ সালে ইয়েচুরি সিপিআই(এম) এর সাধারণ সম্পাদক হন। যদিও এ সময় দলটি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যসহ অনেক স্থানে শক্ত ঘাঁটি হারিয়ে এবং তাদের সংসদীয় আসন হ্রাস পেয়েছে।

মোদিসহ নেতাদের শোক:

সীতারাম ইয়েচুরির মৃত্যুতে শোক ও শ্রদ্ধা জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ইয়েচুরির প্রশংসা করে মোদি বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংযোগ তৈরি করার ক্ষমতা ছিল তার।

লোকসভায় বিরোধী দলীয় নেতা কংগ্রেস পার্টির রাহুল গান্ধী সীতারাম ইয়েচুরির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেছেন, ‘ভারতীয় ধারণার রক্ষক’ ছিলেন তিনি।

অন্যদিকে ইয়েচুরির চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ এবং এই প্রয়াণ জাতীয় রাজনীতির ক্ষতি বলে অভিহিত করেছেন।