ইলিশ চেয়ে বাংলাদেশের কাছে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের আকুতি!

বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিবর্তনের ফলে চলতি বছর ইলিশ রপ্তানি নিয়ে অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে, ভারতের মৎস্য আমদানিকারক সমিতি বাংলাদেশ সরকারের কাছে ইলিশ রপ্তানি চালু রাখার আকুতি জানিয়েছে।

ইলিশ মাছ

বিগত পাঁচ বছর ধরে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা এবং আসাম রাজ্যে সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকেই দুর্গাপূজার আগে বাংলাদেশ থেকে ইলিশ আমদানি করা হতো। গত বছর, ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বাংলাদেশ প্রায় ১,৩০০ টন ইলিশ রপ্তানি করেছিল।

গত ১১ আগস্ট মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার জানান, দেশের চাহিদা মেটানোর পরই সরকার ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেবে।

এই পরিপ্রেক্ষিতে, ভারতের মৎস্য আমদানিকারক সমিতি বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের কাছে আবেদন জানিয়ে পূর্ববর্তী বছরের ন্যায় এ বছরও ইলিশ রপ্তানির অনুমতি প্রদানের আহ্বান জানিয়েছে।

এর আগে ফরিদা আক্তার সংবাদ মাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে দেশীয় বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন। বিশ্বের ৭০-৮০% ইলিশ উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশের কাছে এই জাতীয় সম্পদের যথাযথ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা একটি চ্যালেঞ্জ।

‘যখন আমাদের নিজেদের মানুষ ইলিশ কিনতে পারছে না, তখন আমরা ইলিশ রপ্তানি করতে পারি না। এ বছর দুর্গাপূজার সময় ভারতে কোনও ইলিশ রপ্তানি বন্ধ করার জন্য আমি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছি,’ গত সপ্তাহে বলেন আক্তার।

‘ইলিশের প্রজনন ক্ষেত্র এবং অভয়ারণ্য রক্ষা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যথাযথ ব্যবস্থাপনা ব্যতীত উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হবে,’ স্থায়ী ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব তুলে ধরে সাবধান করেছেন তিনি।

আক্তার আরও ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, বিশেষ করে ভারতে ইলিশ চোরাচালান বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, ইলিশ রপ্তানি নিষিদ্ধ করার বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও সরকারি আদেশ জারি করা হয়নি। কিছু প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশ থেকে বিতাড়িত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে অবস্থান করায় এবং ভারত-বিরোধী রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশের কার্যকর সরকার রপ্তানি বন্ধের এই সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

পদ্মা नদীর ইলিশ বাঙালি খাবারের একটি ঐতিহ্য। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে দুর্গাপূজার সময় ইলিশ ভাজা, ইলিশের কাঁটা, এবং ইলিশ দিয়ে খিচুড়ি খুবই জনপ্রিয় খাবার।

মিয়ানমার, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, মালয়েশিয়া, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড থেকে ইলিশ আমদানি এবং গুজরাট ও মহারাষ্ট্রের মতো রাজ্যে স্থানীয়ভাবে ইলিশ উৎপাদিত হলেও, বাংলাদেশের ইলিশের চাহিদা সবচেয়ে বেশি।