আপনি পড়ছেন

শিক্ষক আন্দোলন, কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে শুরু করে সরকার পতনের আন্দোলন - একের পর এক টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে গেলেও এখনও শ্রেণিকক্ষে ফিরতে পারছে না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় ভয়াবহ সেশনজটের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় দ্রুত সকল সংকট কাটিয়ে ক্লাসে ফিরতে আগ্রহী শিক্ষার্থীরা।

dhaka university 3ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

প্রসঙ্গত, গত জুলাই মাসের শুরুতে পেনশন স্কিমকে কেন্দ্র করে দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরাও কর্মবিরতির ঘোষণা দেন। এরই মধ্যে কোটা সংস্কার আন্দোলনের জের ধরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে গত ১৭ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও সিন্ডিকেট অনির্দিষ্টকালের জন্য ঢাবি বন্ধ ঘোষণা করে।

এরপর আন্দোলন আরও তীব্রতর হয়ে উঠে এবং ছাত্র-জনতা সরকারের পতনের একদফা দাবিতে একাত্ম হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৫ আগস্ট পতন ঘটে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের। এর পরপরই বিভিন্ন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে আওয়ামীপন্থীরা পদত্যাগ করতে থাকেন। অনেকে পদত্যাগে বাধ্য হন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ও এর ব্যতিক্রম ছিল না। গত ১০ আগস্ট পদত্যাগ করেন ঢাবি ভিসি অধ্যাপক ড. মাকসুদ কামাল ও সাত হলের প্রভোস্টরা। এর দুদিন আগে পদত্যাগ করেন ঢাবির প্রক্টর ও প্রক্টরিয়াল বডির সব সদস্য। এছাড়াও বিভিন্ন বিভাগের আওয়ামীপন্থী হিসেবে চিহ্নিত শিক্ষকরা পদত্যাগ করেন।

দীর্ঘ দুই সপ্তাহ উপাচার্যশূন্য থাকার পর গত ২৭ আগস্ট ঢাবির নতুন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান বিশ্ববিদ্যালয়টির ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান। এরপর নিয়োগ দেওয়া হয় প্রো-ভিসিসহ বিভিন্ন পদেও। তবে এতসব পরিবর্তনের পরও শিক্ষার স্বাভাবিক প্রবাহ ফিরে আসেনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। শুরু হয়নি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম।

এ ব্যাপারে উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ বলেন, “সিন্ডিকেট সদস্যদের অনুপস্থিতি ও উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে দ্রুতই বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম চালু করা যাচ্ছে না। যদি এক্সিকিউটিভ অর্ডারে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করা হতো, তাহলে সেক্ষেত্রে আমি উপাচার্যের এক্সিকিউটিভ পাওয়ার ব্যবহার করে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিতে পারতাম। কিন্তু সিন্ডিকেট সভার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করা হয়েছিল। সেজন্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু করতে পারছি না।”

du vc niaz ahmedঢাবির নতুন উপাচার্য  অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান

জানা গেছে, গত রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) ঢাবির শিক্ষা কার্যক্রম দ্রুত চালু করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ প্রশাসনের সঙ্গে বিভিন্ন অনুষদের ডিন, হল প্রভোস্ট, বিভাগসমূহের চেয়ারম্যান, ইনস্টিটিউটসমূহের পরিচালক এবং অফিস প্রধানদের এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ সভায় সেপ্টেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে ক্লাস শুরুর বিষয়ে প্রাথমিক প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। আগামীতে সিন্ডিকেট সভায় বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। এক্ষেত্রে শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ সব অংশীজনের সহযোগিতা কামনা করেছেন সভার সভাপতি উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান।

ঢাবি উপাচার্য বলেন, “সিন্ডিকেটের অনেক সদস্যই আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগের পর থেকে এভেইলেবল হবেন না, অনেকে পদত্যাগ করেছেন। তবুও নিয়মানুযায়ী সিন্ডিকেট সভা আহ্বান করতে হবে। এভেইলেবল সিন্ডিকেট সদস্যদের নিয়ে সভার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়া হবে।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহাম্মদ মুহসিন হলের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী রায়হান বলেন, “ছাত্র আন্দোলনসহ বিভিন্ন কারণে জুলাই মাস থেকে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় সেশনজটের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ব্যাপক পরিবর্তনের পরও ক্লাস খুলে না দেওয়ায় সেশনজটের আশঙ্কা আরও বেড়ে যাচ্ছে। যত দ্রুত সম্ভব বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু করা এবং আটকে থাকা পরীক্ষাগুলো নিয়ে সংকট নিরসনের উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।”

শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, “নানা ধরনের প্রতিকূলতা থাকলেও আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা যত দ্রুত সম্ভব আমাদের শ্রেণি কার্যক্রমসহ স্বাভাবিক শিক্ষা জীবনে ফিরতে চাচ্ছি। যাতে করে আমাদের দুই থেকে তিন মাসের যে ক্ষতি হলো তা আমরা দ্রুত ওভারকাম করতে পারি।”

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান ড. এস এম এ ফায়েজ এ বিষয়ে বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় যেহেতু বন্ধ করেছে সিন্ডিকেট, তাই সিন্ডিকেট দিয়েই এটি চালু করতে হবে। কিন্তু এখন তো সিন্ডিকেট মেম্বাররা আসছেন না। তাই ঢাবি ভিসিকে আমি রিকোয়েস্ট করব, আপনি এটাকে খুলে দিন। পরবর্তী সময়ে সিন্ডিকেট যখন বসবে তখন বিষয়টি রিপোর্ট করা হবে। এখন বিশ্ববিদ্যালয়টি খুলে দেওয়াই গুরুত্বপূর্ণ।”

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.