করদাতা বাড়াতে বিশেষ অভিযানে এনবিআর

দেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি রাজস্ব আহরণ। এই আহরণ ব্যবস্থাকে গতিশীল ও স্থিতিশীল করতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) নতুন করে কাজ শুরু করেছে। বর্তমানে অল্প সংখ্যক করদাতার ওপর রাজস্ব আহরণের বোঝা থাকায়, করের আওতায় থাকা লোকজনের সংখ্যা বৃদ্ধিতে জোর দেওয়া হচ্ছে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের লোগো

এ লক্ষ্যে, এনবিআর আগামী ছয় মাসের মধ্যে করের নেটওয়ার্ক প্রসারিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। এনবিআর-এর একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘বর্তমানে বিপুল সংখ্যক যোগ্য ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এখনও করের আওতার বাইরে রয়ে গেছে। এই অপ্রাপ্ত করদাতাদের কর ব্যবস্থার আওতায় আনতে আমরা একটি বিশেষ অভিযান শুরু করেছি।’

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বর্তমানে বাংলাদেশের মোট রাজস্বের ৬৭% আসে পরোক্ষ কর থেকে, যার মধ্যে রয়েছে শুল্ক এবং মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট)। বাকি ৩৩% আসে প্রত্যক্ষ কর থেকে, যা মূলত আয়কর। ফলে দেশের কর-জিডিপি অনুপাত মাত্র ৭.৩%। এই হার প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় অনেক কম। ভারতের কর-জিডিপি অনুপাত ১২%, নেপালের ১৭.৫%, ভুটানের ১২.৩% এবং পাকিস্তানের ৭.৫%।

এ অবস্থা থেকে উত্তরণে কর প্রদানের প্রক্রিয়াকে আরও সহজ করতে কাজ করছে এনবিআর। ইতিমধ্যেই উৎসে কর কর্তন এবং আদায় নিরীক্ষণের জন্য ই-টিডিএস সিস্টেম চালু করা হয়েছে। পাশাপাশি, ফাইলিংয়ের জন্য ই-রিটার্ন সিস্টেম চালুর মাধ্যমে কর প্রদানের পদ্ধতিকে আরও সরলীকৃত করা হয়েছে।

এছাড়াও, সরকারি পরিষেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র (পিএসআর) বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এসব পদক্ষেপের ফলে ই-টিআইএন নিবন্ধিত করদাতাদের সংখ্যা এক কোটি ছাড়িয়ে গেছে।

গত অর্থবছরের এপ্রিল পর্যন্ত এনবিআর ৪১ লক্ষ ট্যাক্স রিটার্ন পেয়েছে। এই সংখ্যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৭% বেশি। এনবিআর-এর লক্ষ্য ২০৩১ সালের মধ্যে প্রত্যক্ষ করের অবদান ৪২% এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ৫০% এ উন্নীত করা।

এ লক্ষ্যে, এনবিআর বিদ্যমান কর আইন সংশোধন এবং কর ফাঁকি রোধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের ওপর জোর দিচ্ছে।