সাবেক চিফ হুইপসহ ৫ এমপিকে দুদকে তলব

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) জাতীয় সংসদের সাবেক চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরীসহ পাঁচজনকে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তলব করেছে। মঙ্গলবার দুদকের সেগুনবাগিচা সদর দপ্তরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এই পাঁচ সাবেক সংসদ সদস্যকে হাজির হতে নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

দুর্নীতি দমন কমিশন

নোটিশপ্রাপ্ত অন্য চারজন হলেন আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এবং আওয়ামী লীগের দুই সাবেক সংসদ সদস্য জিয়াউর রহমান ও কাশেম উদ্দিন আহমেদ।

এছাড়াও, মঙ্গলবার দুদক দুই সাবেক সংসদ সদস্যসহ তিনজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

তারা হলেন মানিকগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এএম নাইমুর রহমান দুর্জয়, রাজশাহী-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এনামুল হক এবং সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের ছেলে তমাল মনসুর।

“তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রাথমিকভাবে সত্য প্রমাণিত হওয়ার পর কমিশন তাদের বিরুদ্ধে তদন্তের সিদ্ধান্ত নেয়,” সাংবাদিকদের জানান দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমিন।

অভিযোগ অনুসারে, এনামুল হক ঘুষের বিনিময়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মী নিয়োগ করেছিলেন।

“দুদকের গোয়েন্দা ইউনিট তার এবং তার পরিবারের সদস্যদের মোট ২৩,৫০,৯৬,৪৩৭ টাকার সম্পদের সন্ধান পেয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে রাজশাহী, ঢাকা এবং গাজীপুরে কৃষি এবং অকৃষি জমি,” বলেন দুদক সচিব।

এছাড়াও, দুদক বিদেশে এনামুলের বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের তথ্য পেয়েছে।

অভিযোগ অনুসারে, নাইমুর রহমান দুর্জয় দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে আরিচা নৌ-টার্মিনালের কাছে বিআইডব্লিউটিএ'র জমি দখল করে আত্মসাৎ করেন। “তিনি তার আত্মীয়স্বজনদের নিয়ে একটি সিন্ডিকেট গঠন করে অবৈধভাবে নদী খনন এবং বালু উত্তোলন করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন,” জানান দুদক সচিব।

দুর্জয়ের মালিকানাধীন ৩.১৬ কোটি টাকার সম্পদের মধ্যে রয়েছে মানিকগঞ্জের ঘিওরের বাইকান্তপুরে ১২ বিঘা জমি, মানিকগঞ্জ শহরে একটি একতলা বাড়ি এবং বিভিন্ন ব্যাংক ও ব্যবসায় বিনিয়োগ।

“গোয়েন্দা তদন্তে দেশে-বিদেশে দুর্জয়ের বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের তথ্য পাওয়ার পর কমিশন তার বিরুদ্ধে তদন্তের সিদ্ধান্ত নেয়,” বলেন খোরশেদা ইয়াসমিন।

তমাল মনসুরের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি বিভিন্ন দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি ক্রয়ের মাধ্যমে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দিন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ১৭৫ কোটি টাকা মূল্যের নিম্নমানের পণ্য সরবরাহ করে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।

তার মালিকানাধীন আমেরিকার নিউইয়র্কের জ্যামাইকায় একটি রিয়েল এস্টেট ব্যবসা রয়েছে। তিনি জ্যামাইকায় ‘আফতাব স্কাই ভিউ কনডোমিনিয়াম’ টাওয়ারে ৫৯ কোটি টাকা মূল্যের ১২টি অ্যাপার্টমেন্ট এবং চারটি পার্কিং স্পেস ক্রয় করেছেন।