সরকারের ভুল সাহসের সঙ্গে তুলে ধরার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

মঙ্গলবার দেশের শীর্ষ সম্পাদকদের সঙ্গে এক বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, তিনি চান গণমাধ্যম পূর্ণ স্বাধীনতার সঙ্গে কাজ করুক এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কোনো ভুল করলে তা নির্দ্বিধায় লিখুক।

সাক্ষাতের ছবি

রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে ‘দ্য ডেইলি স্টার’ পত্রিকার সম্পাদক মাহফুজ আনাম এবং পৃথক ব্রিফিংকালে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ তথ্য জানান।

“বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রধান উপদেষ্টা আমাদের কোনো রকম দ্বিধা ছাড়াই লেখার অনুরোধ জানিয়েছেন,” বলেন আনাম। তিনি আরও যোগ করেন, “আমরা সত্যিকার অর্থেই একটি গণমাধ্যম-বান্ধব সরকার পেয়েছি। আমরা অত্যন্ত আনন্দিত।”

প্রধান উপদেষ্টার বরাত দিয়ে তার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, অধ্যাপক ইউনূস গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেন এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একটি প্রাণবন্ত গণমাধ্যমের ক্ষেত্র দেখতে চায়।

সম্পাদকদের সঙ্গে বৈঠকে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, তিনি মুক্ত গণমাধ্যমের শক্তিতে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাসী এবং তিনি গণমাধ্যমকে তাদের প্রতিবেদনে সোচ্চার এবং স্বচ্ছ হওয়ার আহ্বান জানান। প্রধান উপদেষ্টা লেখালেখির মাধ্যমে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার গুরুত্বের ওপরও জোর দেন।

তিনি সম্পাদকদের সরকারি কার্যক্রমের সকল ক্ষেত্রে ভুল ত্রুটি তুলে ধরতে দ্বিধাহীন থাকার জন্য উৎসাহিত করেন।

বৈঠকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এবং সাইবার নিরাপত্তা আইনের নিপীড়নমূলক ধারা নিয়েও আলোচনা হয়। সম্পাদকরা এসব ধারা, বিশেষ করে সাংবাদিকদের দমন করার জন্য ব্যবহৃত ধারাগুলোর অবিলম্বে স্থগিতাদেশ এবং সংস্কারের প্রতিশ্রুতির প্রস্তাব করেন।

সম্পাদকরা স্থানীয় সরকারকে ক্ষমতায়নের মতো সাংবিধানিক সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দেন।

তারা দুর্নীতি দমন কমিশন, মানবাধিকার কমিশন এবং নির্বাচন কমিশনের মতো স্বায়ত্তশাসিত সংস্থাগুলোকে সত্যিকার অর্থে জনগণের প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরের জন্য সংস্কারের কথাও তুলে ধরেন।

তারা বিশেষ করে নির্বাচন কমিশন নিয়ে আলোচনা করেন যাতে ভবিষ্যতে নির্বাচন হয় সত্যিকার অর্থে ভোটারদের ইচ্ছার প্রতিফলন।

দেশে শক্তিশালী গণতান্ত্রিক কাঠামো নিশ্চিত করতে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং পুলিশ সংস্কার সহ আরও সাংবিধানিক সংস্কারের বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য একটি কমিটি গঠনের পরামর্শও দেওয়া হয়।

মাহফুজ আনাম জানান, বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) এবং বাংলাদেশ বেতারকে স্বায়ত্তশাসিত করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে যাতে সাংবাদিকরা সেখানে পেশাগতভাবে কাজ করতে পারেন।

শফিকুল আলম জানান, কালো আইন বাতিলেরও প্রস্তাব এসেছে।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন নিউ এজ-এর সম্পাদক নূরুল কবির, প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল আলম, দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের সম্পাদক এনাম আহমেদ, কালবেলার সম্পাদক সন্তোষ শর্মা প্রমুখ।