র‍্যাব বিলুপ্তিতে ইইউ'র সমর্থন চাইছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ

মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, বাংলাদেশের কাছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) বিলুপ্তির জোর দাবি জানাতে। র‍্যাবের বিরুদ্ধে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং গুমের মতো গুরুতর অভিযোগের কথা উল্লেখ করে এইচআরডব্লিউ বলেছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিক্ষোভকারীদের ওপর যে বর্বর নিপীড়ন চালানো হয়েছে, র‍্যাব সেসব ঘটনায় জড়িত ছিল।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের লোগো

এইচআরডব্লিউ গতকাল এক বিবৃতিতে আরও বলেছে, জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের আসন্ন অধিবেশনে ইইউ'র উচিত বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা তদন্ত করে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ। একইসঙ্গে, দের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও প্রতিবেদন প্রণয়নের জন্য জাতিসংঘের নজরদারি নিশ্চিত করার জন্যও কাজ করা উচিত ইইউ'র।

এইচআরডব্লিউ আরও সুপারিশ করেছে, ইইউ'র উচিত র‍্যাবের বিরুদ্ধে লক্ষ্যবস্তুভিত্তিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা। উল্লেখ্য, ২০২১ সাল থেকে র‍্যাব মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে।

এইচআরডব্লিউ মনে করছে, ইইউ'র ‘এভরিথিং বাট আর্মস’ (ইবিএ) প্রকল্পের সুবিধা কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের ওপর চাপ সৃষ্টি করা সম্ভব। এই প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ মানবাধিকার ও সুশাসনের শর্তে ইইউ'তে শুল্কমুক্ত রপ্তানির সুবিধা পায়।

‘মানবাধিকারের সবচেয়ে সাম্প্রতিক প্রকাশ্য লঙ্ঘন, বিতর্কিত আসন্ন নির্বাচনের আগে সহিংস কার্যকলাপ এবং অন্যান্য নির্যাতনসহ বেশ কয়েকটি ঘটনায় শেখ হাসিনার ক্রমবর্ধমান স্বৈরাচারী শাসনব্যবস্থা ইবিএ'র শর্তাবলীর পরিষ্কার লঙ্ঘন। তবুও, দায়ীরা কোনও পরিণতির মুখোমুখি হয়নি।’

এইচআরডব্লিউ তাদের বিবৃতিতে বলেছে, ‘বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রূপান্তরকে সমর্থন করার জন্য, ইইউ'র উচিত ভিন্ন পন্থা গ্রহণ করা।’

এইচআরডব্লিউ আরও বলেছে, ইবিএ আলোচনার প্রেক্ষাপটে, ইইউ'র উচিত বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মানবাধিকার সুরক্ষার জন্য স্পষ্ট মানদণ্ড নির্ধারণ করা। এর মধ্যে অন্যায়ভাবে কারাবন্দী এবং গুম হওয়া সকল ব্যক্তিকে মুক্তি, নিরাপত্তা বাহিনীর সংস্কার ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ এবং স্বাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালীকরণ ও মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের জন্য অন্যান্য সংস্কার অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

‘এই পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে, ইইউ বাংলাদেশি জনগণকে তাদের কঠোর পরিশ্রমে অর্জিত মানবাধিকারের অর্জনকে সংহত করতে এবং আরও অগ্রগতি ও সংস্কারের ভিত্তি স্থাপন করতে সহায়তা করতে পারে,’ বিবৃতিতে যোগ করেছে এইচআরডব্লিউ।

বিবৃতিতে বাংলাদেশের জনগণের সাহসের প্রশংসা করে বলা হয়েছে, গণতান্ত্রিক রূপান্তর এবং মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য তারা যে অনন্য সব আন্দোলন গড়ে তুলেছে, তার জন্য তাদের প্রশংসা করা উচিত।