বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৬৭

দেশের সাম্প্রতিক বন্যা পরিস্থিতিতে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৬৭ জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে সাতজন নারী ও ১৮ জন শিশু। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সোমবারের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। সোমবার আরও ৮ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

ছবি - সংগৃহীত

মৃতদের মধ্যে ১৭ জন কুমিল্লা, ২৬ জন ফেনী, ছয়জন চট্টগ্রাম, ১১ জন নোয়াখালী, একজন করে খাগড়াছড়ি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, মৌলভীবাজার ও লক্ষ্মীপুর এবং তিনজন কক্সবাজার জেলার বাসিন্দা। এছাড়া মৌলভীবাজার জেলায় একজন এখনও নিখোঁজ রয়েছেন।

বন্যা কবলিত জেলাগুলো হলো - ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, লক্ষ্মীপুর ও কক্সবাজার।

পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে এবং মৌলভীবাজার জেলায় পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। চট্টগ্রাম, হবিগঞ্জ, সিলেট, খাগড়াছড়ি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কক্সবাজার জেলায় বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

এছাড়া দেশের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য উন্নতি হওয়ায় আশ্রয়কেন্দ্র থেকে মানুষজন ঘরে ফিরছে। বন্যা কবলিত জেলাগুলোতে যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে।

এখনও মানুষ পানিবন্দি

প্রতিবেদন অনুসারে, দেশের ১১টি জেলার ৬৮টি উপজেলার ৫০৪টি ইউনিয়ন ও পৌরসভায় ৫১,০৮,২০২ জন বন্যার কবলে পড়েছেন। মোট ৬,০৫,৭৬৭টি পরিবার এখনও আটকা পড়ে রয়েছে এবং ৩,০৬,৭৪১ জন বর্তমানে ৩,৬১৫টি আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। এসব কেন্দ্রে মোট ৩২,৮৩০টি গবাদি পশুকেও আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। বন্যা কবলিত ১১টি জেলায় ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য ৪৭২টি মেডিকেল টিম কাজ করছে।

ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত

ত্রাণ তৎপরতা সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বন্যা কবলিত ১১টি জেলায় ৪.৫২ কোটি টাকা নগদ, ২০,৬৫০ মেট্রিক টন চাল ও ১৫,০০০ প্যাকেট শুকনো খাবার, শিশু খাদ্যের জন্য ৩৫ লাখ টাকা এবং পশু খাদ্যের জন্য ৩৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কারীরা সংগৃহীত ১,৭৫,৪০০ প্যাকেট ত্রাণ সামগ্রী, যার মধ্যে শুকনো খাবার, কাপড় ও পানীয় জল রয়েছে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মাধ্যমে বন্যা কবলিত এলাকায় পাঠানো হয়েছে।

সশস্ত্র বাহিনী বন্যা কবলিত এলাকায় ৩,৪৫,১৪০ প্যাকেট ত্রাণ সামগ্রী ও ২২,০১০ প্যাকেট রান্না করা খাবার বিতরণ করেছে। প্রায় ৪২,৮১৬ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং ৪২,১১৩ জনকে স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করা হয়েছে।

এছাড়া হেলিকপ্টারযোগে ১৫৩ জনকে উদ্ধার করে তাদের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। সশস্ত্র বাহিনী পরিচালিত ২৪টি শিবির ও ১৮টি মেডিকেল টিম বন্যা কবলিত এলাকায় স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করছে। পানীয় জল, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, কাপড়, ওষুধ, শিশু খাদ্য ও স্যানিটারি সামগ্রীও বিতরণ করা হয়েছে।

নিয়ন্ত্রণ কক্ষ

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ তথ্য প্রদানের জন্য ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকে। নিয়ন্ত্রণ কক্ষের নম্বর হলো- ০২৫৫১০১১১৫।