ইসলামি দলগুলোর দাবি: দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী নয়

আজ সাতটি ইসলামপন্থী দল একজন ব্যক্তির দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী পদের দায়িত্ব পালনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রস্তাব করেছে। এছাড়াও, তারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে কিছু মৌলিক সংস্কার সম্পন্ন করার পর যুক্তিসঙ্গত সময়ের মধ্যে একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের আহ্বান জানিয়েছে।

ছবি - পিআইডি

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সরকারি বাসভবন যমুনায় একটি বৈঠকে তারা এসব দাবি-দাওয়া উপস্থাপন করে। বৈঠকে খেলাফত মজলিস, নিজামে ইসলাম, হেফাজতে ইসলাম, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, ইসলামী আন্দোলন, খেলাফত আন্দোলন এবং জমিয়ত উলামায়ে ইসলামের নেতারা অংশগ্রহণ করেন।

বৈঠকের পর হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক সাংবাদিকদের বলেন, 'আমরা প্রস্তাব করেছি যে, একজন ব্যক্তি দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না।'

তিনি আরও বলেন, 'আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়েছি। তবে তার আগে প্রয়োজনীয় কিছু সংস্কার সম্পন্ন করা জরুরি।'

সূত্র মতে, বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা অংশগ্রহণকারীদের জানান যে, তার সরকার দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকতে আগ্রহী নয়। তবে নির্বাচন কমিশনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সংস্কারের জন্য যুক্তিসঙ্গত সময়সীমা প্রয়োজন।

বৈঠকে উপস্থিত হেফাজতের আরেক যুগ্ম মহাসচিব আজিজুল হক বলেন, ‘আমরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে চারটি মৌলিক দাবি তুলে ধরেছি। এগুলো হলো - সংবিধান সংস্কার, ২০১৩ এবং ২০২১ সালে হেফাজত নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার, ২০১৩, ২০২১ এবং ২০২৪ সালের ‘গণহত্যার’ বিচারের জন্য একটি ট্রাইব্যুনাল গঠন এবং হত্যা ও গুমের ‘উসকানিদাতাদের’ গ্রেপ্তার।’

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বৈঠকে ১৩ দফা প্রস্তাব উপস্থাপন করে। দলটির আমীর মুফতি সৈয়দ রেজাউল করিম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ খাতে - নির্বাচন কমিশন, বেসামরিক আমলাতন্ত্র, বিচার বিভাগ, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং গণমাধ্যমে সম্পূর্ণ সংস্কারের দাবি জানিয়েছি।’

আজ বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) সাতটি ইসলামি দল প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার মেয়াদ সর্বাধিক দুই মেয়াদে সীমাবদ্ধ করার জন্য সাংবিধানিক সংস্কারের প্রস্তাব করেছে। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সংলাপের সময় তারা এই দাবি তোলেন।

খেলাফত মজলিস, নিজামে ইসলাম, হেফাজতে ইসলাম, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, ইসলামী আন্দোলন, খেলাফত আন্দোলন এবং জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের নেতারা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে মতবিনিময় সভায় মিলিত হন।

সংলাপে রাজনৈতিক দলগুলো যুক্তিসঙ্গত সময়ের মধ্যে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানের আহ্বান জানায়। দ্রুত নির্বাচনী প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার জন্য নির্বাচন কমিশনের সংস্কারও দাবি করে তারা।

এছাড়াও, তারা বিতর্কিত বিশেষ ক্ষমতা আইন এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ বিভিন্ন আইনের সংশোধনের প্রস্তাব করে।

পরিবেশ ও বন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ প্রক্রিয়া চালিয়ে যাবে এবং এসব আলোচনার মাধ্যমে উঠে আসা গ্রহণযোগ্য সংস্কার প্রস্তাবগুলো গ্রহণ করবে।

উল্লেখ্য, গত ১২ আগস্ট বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, সিপিবি, গণতন্ত্র মঞ্চ, বিজেপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, এবি পার্টি, গণ অধিকার পরিষদ, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য এবং এনডিএম-এর জ্যেষ্ঠ নেতারা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে পৃথক বৈঠক করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছিলেন।