ভারতের দাবি, বাংলাদেশের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সিএনএনের প্রতিবেদন ‘বিভ্রান্তিকর’

বাংলাদেশের সাম্প্রতিক বন্যা পরিস্থিতির জন্য ভারতকে দায়ী করে সিএনএনের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনকে 'বিভ্রান্তিকর ও বাস্তবসম্মত নয়' বলে দাবি করেছে ভারত। শুক্রবার নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী বলেন, ‘সিএনএনের প্রতিবেদনটিতে ভারত সরকারের ইতিপূর্বে জারি করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তির তথ্য উপেক্ষা করা হয়েছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে উভয় দেশের মধ্যে নিয়মিত ও সময়োপযোগী তথ্য বিনিময় হয়, সিএনএন সেই তথ্যও উপেক্ষা করেছে।’

সাম্প্রতিক বন্যার ছবি - সিএনএন

তিনি আরও বলেন, ‘সিএনএন এই সত্যটিও উপেক্ষা করেছে যে জল সম্পদ ব্যবস্থাপনার জন্য বিদ্যমান যুগ্ম ব্যবস্থার মাধ্যমে উভয় দেশের মধ্যে নিয়মিত ও সময়োপযোগী তথ্য বিনিময় হয়।’

বাগচী জানান, বহু বছর ধরে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বন্যা নিয়ন্ত্রণে একটি প্রতিষ্ঠিত পদ্ধতি রয়েছে। উভয় দেশের মধ্যে ৫৪টি নদী ভাগ করা এবং প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা দীর্ঘদিন ধরে কার্যকর রয়েছে। প্রতিষ্ঠিত পদ্ধতি অনুসারে, আমরা সময়োচিত ও নিয়মিতভাবে বাংলাদেশের সঙ্গে তথ্য বিনিময় করে আসছি।

বাংলাদেশর পূর্বাঞ্চল  ও ত্রিপুরায় বন্যার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ভারত ইতিমধ্যে দুটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বন্যার কারণ সম্পর্কে বাস্তবসম্মত অবস্থান স্পষ্ট করেছে। পূর্ব ত্রিপুরা এবং পূর্ব বাংলাদেশের বন্যা মূলত অবিরাম এবং ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভবিষ্যতে যদি নতুন কোনো ব্যবস্থার মাধ্যমে জনগণের দুর্ভোগ লাঘব করা যায় অথবা প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় সহায়তা করা যায়, তাহলে এই বিষয়টি বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনা করা যেতে পারে।’

ভিসা ইস্যুতেও কথা বলেছেন তিনি। এ বিষয়ে মুখপাত্র বলেন, বর্তমানে কেবলমাত্র চিকিৎসা এবং জরুরি প্রয়োজনে সীমিত আকারে ভিসা ইস্যু করা হচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এবং আইনশৃঙ্খলা পুনঃস্থাপিত হলে পূর্ণাঙ্গভাবে ভিসা কার্যক্রম শুরু হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিরাপত্তার কারণে খুব অল্প সময়ের নোটিশে ভারতে এসেছিলেন।’

তিনি বলেন, ‘অস্থিরতার কারণে বাংলাদেশে ভারতের উন্নয়ন প্রকল্পগুলো প্রভাবিত হয়েছে। ভারতের উন্নয়ন সহযোগিতা বাংলাদেশের জনগণের কল্যাণের জন্য নিবেদিত।’

তিনি আরও বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কারণে কিছু প্রকল্পের কাজ স্থগিত হয়ে গেছে এবং ব্যাহত হয়েছে। পরিস্থিতি স্থিতিশীল হলে আমরা আলোচনা করব এবং দেখব কীভাবে সেরা উপায়ে সেগুলো এগিয়ে নেওয়া যায়।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে বর্তমান পরিস্থিতির কারণে অস্থায়ীভাবে ভারতের উন্নয়ন প্রকল্পগুলি বন্ধ করা হয়েছে। পরিস্থিতির উন্নতি এবং আইনশৃঙ্খলা পুনঃস্থাপন হলে, আমরা বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনা করব কীভাবে এগিয়ে যাওয়া যাবে।’