অন্তর্বর্তী সরকারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে ফ্রান্স

বাংলাদেশকে পুনর্গঠনের প্রচেষ্টায় ফ্রান্স সর্বাত্মক সহায়তা প্রদান করবে বলে জানিয়েছেন দেশটির রাষ্ট্রদূত মারি মাসদুপুই। আজ বুধবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এ আশ্বাস প্রদান করেন।

সাক্ষাতের ছবি

এসময় রাষ্ট্রদূত জানান, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ অধ্যাপক ইউনূসকে সুবিধাজনক সময়ে ফ্রান্স সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।

সাক্ষাৎকালে রাষ্ট্রদূত মাসদুপুই জুলাই-আগস্ট মাসের আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী ও জনগণের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ছাত্রনেতৃত্বাধীন আন্দোলনের ফলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের হাতে দেশ পুনর্গঠনের সুবর্ণ সুযোগ এসেছে।

তিনি বলেন, ‘এটি একটি বৃহৎ কর্মযজ্ঞ। কিন্তু আমরা এটিকে একটি বিরাট সুযোগ হিসেবেই দেখছি। আমরা যদি এই সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হই, তবে তা হবে জাতির জন্য এক বৃহৎ ক্ষতি।’

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘জনগণ যত অল্প সময় বা যত দীর্ঘ সময় চায়’ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ততদিন ক্ষমতায় থাকবে।

তিনি সকলকে ‘একটি বড় পরিবারের’ সদস্য ভাবার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘মাঝে মাঝে আমরা মতপার্থক্যে লিপ্ত হতে পারি, দৃঢ়ভাবে দ্বিমত পোষণ করতে পারি। কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে আমরা শত্রু।’

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, তার সরকার প্রতিটি নাগরিকের অধিকার রক্ষায় বদ্ধপরিকর। তিনি বলেন, ‘আসুন, আমরা সকলে মিলে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করি। সংবিধানকে জনগণের জন্য কল্যাণকর করে তোলাই আমাদের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত।’

মাসদুপুই বলেন, ফ্রান্স ইতোমধ্যেই বাংলাদেশের নাগরিক প্রতিরক্ষা বাহিনীর সঙ্গে কাজ করছে। দুর্নীতি, মানব পাচার, ফরেনসিক সাইবার অপরাধ, বন্দর ও বিমানবন্দর নিরাপত্তা এবং আর্থিক অপরাধ মোকাবেলায় দক্ষতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ফ্রান্স বাংলাদেশকে সহায়তা করতে আগ্রহী।

তিনি জানান, আগামী অক্টোবরে আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ ঢাকা তাদের ৬৫তম বার্ষিকী উদযাপন করবে। এ উপলক্ষ্যে তিনি অধ্যাপক ইউনূসকে অনুষ্ঠানে যোগদানের আমন্ত্রণ জানান।

ফরাসি রাষ্ট্রদূত বলেন, ২০২৫ সালের এপ্রিলে প্যারিসে দুই সপ্তাহব্যাপী বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মৌসুমের আয়োজন করবে ফ্রান্স।

তিনি আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দুর্নীতি দমনের কর্মসূচি বাংলাদেশে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ আরও বাড়াতে ‘প্রধান ভূমিকা’ পালন করবে। বর্তমানে অনেক বিনিয়োগকারীকে শুল্ক ও বিনিয়োগ কর্তৃপক্ষের ক্ষেত্রে নানা বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

মাসদুপুই বলেন, বাংলাদেশে তিনটি সৌর পার্ক স্থাপন এবং দেশের ১৫টি বজ্রঝড়প্রবণ জেলায় ‘বজ্রপাত প্রতিরোধক’ স্থাপনে ফরাসি সংস্থাগুলি আগ্রহ প্রকাশ করেছে।