বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা: এমপক্সের প্রাদুর্ভাব ঠেকানো সম্ভব

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) সোমবার জানিয়েছে যে মধ্য আফ্রিকায় এমপক্সের প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তবে এ রোগের বিস্তার রোধে ১৩ কোটি ৫০ লাখ ডলারের অর্থায়ন প্রয়োজন হতে পারে।

ছবি - সংগৃহীত

চলতি আগস্ট মাসের শুরুতে, কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রে এমপক্সের একটি নতুন স্ট্রেইনের কারণে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছিল। পরবর্তীতে এই স্ট্রেইন দেশটির সীমানা ছাড়িয়ে ছড়িয়ে পড়ে।

সংস্থার এক বিবৃতিতে ডব্লিউএইচও প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রেয়াসাস বলেছেন, ‘কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র এবং এর প্রতিবেশী দেশগুলোতে এমপক্সের প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব, এমনকি এটিকে সম্পূর্ণরূপে থামানোও সম্ভব।’

তিনি আরও যোগ করেন, ‘এটি করতে হলে একটি ব্যাপক ও সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা প্রয়োজন।’

সোমবার চালু হওয়া ডব্লিউএইচও'র কৌশলগত প্রস্তুতি ও প্রতিক্রিয়া পরিকল্পনা সেপ্টেম্বর ২০২৪ থেকে ফেব্রুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত সময়কালকে অন্তর্ভুক্ত করেছে। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ১৩ কোটি ৫০ লাখ ডলার অর্থের প্রয়োজন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিশ্বব্যাপী প্রতিক্রিয়ার জন্য অর্থ সংগ্রহের লক্ষ্যে সংস্থাটি শীঘ্রই একটি আবেদন জানাবে। আফ্রিকান ইউনিয়নের জনস্বাস্থ্য সংস্থাসহ বিভিন্ন অংশীদারদের সহযোগিতায় এ প্রতিক্রিয়া কার্যক্রম পরিচালিত হবে।

ইতোমধ্যে, ডব্লিউএইচও তার জরুরি সংরক্ষিত তহবিল থেকে প্রায় ১৫ লাখ ডলার প্রদান করেছে।

এমপক্স রোগ সম্পর্কে

পূর্বে মানকিপক্স নামে পরিচিত এমপক্স একটি সংক্রামক রোগ। এটি আক্রান্ত প্রাণী থেকে মানুষের মধ্যে এবং ঘনিষ্ঠ শারীরিক সংস্পর্শের মাধ্যমে মানুষ থেকে মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

এটি জ্বর, পেশী ব্যথা এবং ত্বকে ফুসকুড়ির সৃষ্টি করে। ক্রমবর্ধমান হারে এই রোগ মৃত্যুর কারণও হচ্ছে।

কঙ্গোতে ক্লেড ১বি নামক নতুন স্ট্রেইন শনাক্ত হওয়া এবং রোগটির পুনরুত্থানের কারণে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ১৪ আগস্ট সর্বোচ্চ আন্তর্জাতিক সতর্কতা স্তর ঘোষণা করেছে।

এর আগে, ক্লেড ২বি স্ট্রেইনের কারণে বিশ্বব্যাপী এমপক্স ছড়িয়ে পড়ায় সংস্থাটি জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছিল। মূলত সমকামী পুরুষরাই এই স্ট্রেইনে বেশি আক্রান্ত হয়েছিলেন। ২০২৩ সালের মে মাসে এই সতর্কতা তুলে নেওয়া হয়েছিল।

শুক্রবার ডব্লিউএইচও'র সদস্য দেশগুলোর কাছে কৌশলগত পরিকল্পনা উপস্থাপনকালে টেড্রোস জানান, ২০২২ সালে প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত এক লাখেরও বেশি নিশ্চিত সংক্রমণের খবর পাওয়া গেছে।

২০২৪ সালে এ পর্যন্ত রিপোর্ট করা এমপক্স সংক্রমণের ৯০ শতাংশই কঙ্গোতে ঘটেছে। শুধু এ বছরই দেশটিতে ১৬ হাজারের বেশি সন্দেহভাজন সংক্রমণ এবং ৫৭৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

টেড্রোস আরও জানান, ‘বিশ্বব্যাপী এখনও ভাইরাসটি স্বল্প পরিসরে ছড়িয়ে পড়ছে। তবে আফ্রিকা অঞ্চলে এর ব্যাপক বিস্তার এবং ভৌগলিক বিস্তৃতি ঘটেছে, যা নজিরবিহীন।’