ড. ইউনূসের ভাষণ: সন্তুষ্ট হলেও একটি বিষয়ে হাতাশ মির্জা ফখরুল

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের রোববারের ভাষণে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তবে ভাষণের একটি দিক তাকে হতাশ করেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

‘আমরা আশা করেছিলাম প্রধান উপদেষ্টা একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ দেবেন। কিন্তু তার বক্তৃতায় গণতন্ত্রে ফেরার রোডম্যাপ পাইনি। কুয়াশা এখনও কাটেনি,’ বলেন মির্জা ফখরুল।

জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয় পার্টির (জাফর) প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী কাজী জাফর আহমেদের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার এই আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা সংস্কারের কথা বলেছেন; কোন কোন ক্ষেত্রে সংস্কার করা হবে তার ইঙ্গিতও দিয়েছেন। আমি জানি অল্প সময়ের মধ্যে এগুলো করা সম্ভব নয়। তবুও আমরা ভালো কিছু আশা করি... জনগণও আশা করে।’

প্রধান উপদেষ্টার ‘কখন নির্বাচন হবে, তা একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত’ - এমন বক্তব্যের প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তিনি ঠিকই বলেছেন। অবশ্যই এটি একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। কিন্তু এই রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিতে হলে রাজনৈতিক নেতা, রাজনৈতিক দল ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। আমি আশা করি, আমাদের প্রধান উপদেষ্টা খুব শীঘ্রই সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যাবেন এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলবেন।’

‘নির্বাচন অবশ্যই হতে হবে,’ বলেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচনের মাধ্যমে আমরা যেন আবার আগের মতো পরিস্থিতিতে ফিরে না যাই। জনগণ সেটা কখনও গ্রহণ করবে না।’

‘সেজন্যই আমরা ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করছি, জনগণ অপেক্ষা করছে। কিন্তু এই অপেক্ষা যুক্তিসঙ্গত সময়ের মধ্যে হতে হবে। আমি বিশ্বাস করি যুক্তিসঙ্গত সময়ের মধ্যেই নির্বাচন হবে এবং একটি জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে,’ বলেন তিনি।

মির্জা ফখরুল জোর দিয়ে বলেন, এই সরকার কিছু কাজের জন্য এসেছে এবং তাদেরকে সেই সুযোগ দিতে হবে। আমাদের সর্বোচ্চ সতর্কতা ও ধৈর্য ধরে এগিয়ে যেতে হবে।

প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের একটি অংশের প্রশংসা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, তারা এমন পদক্ষেপ নেবেন যাতে বাংলাদেশকে কেউ পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত করতে না পারে। এটি একটি ভালো কথা। আমরা সবসময় এটাই চাই। আমরা পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত হতে চাই না। আমরা আর দেখতে চাই না যে তারা (পুলিশ) আমাদের বলবে কি করা যাবে আর কি করা যাবে না, আমাদেরকে উঠিয়ে নিয়ে গিয়ে মিথ্যা মামলা দিয়ে টাকা নেবে, আমাদের বাচ্চাদের ওপর গুলি চালাবে। এটি রোধে আমরা আমাদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাবো।’

সচিবালয়ে আনসার সদস্যদের অবরোধ বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, এটি একটি অশুভ লক্ষণ। ছাত্র ও জনগণের বিজয়কে নস্যাৎ করার জন্য ষড়যন্ত্র চলছে।

যারা তাদের দাবি দাওয়া আদায়ের জন্য সচিবালয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ছে তাদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘একটি নতুন সরকার গঠিত হয়েছে। তাদেরকে কিছুটা সময় দিন। তারা সবকিছু দেখবে। কিন্তু দয়া করে সচিবালয়ে অবরোধ করে অথবা তাদেরকে জোর করে কিছু করিয়ে নিতে চেষ্টা করবেন না। জনগণ এটিকে ভালো ভাবে নেবে না।’