বন্যায় জাতীয় ঐক্যের আহ্বান ড. ইউনূসের, সরকারের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশের বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি আজ এক টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে বলেন, বন্যা কবলিত এলাকায় স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে সরকার সব ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস

‘আমরা এক পরিবার, আমাদের লক্ষ্য এক। ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্যোগ মোকাবেলায় দেশি-বিদেশি সকলের সহযোগিতা অপরিহার্য,’ বলেন ড. ইউনূস। তিনি যুবসমাজের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে সরকারের দৃঢ়প্রতিজ্ঞতা ব্যক্ত করেন এবং যে কোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রস্তুতির কথা জানান।

ড. ইউনূস জাতির সকলকে মন থেকে সরকারের এই কর্মকাণ্ডে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান। তিনি তাৎক্ষণিক সমাধান বা বিচারের নামে বিচারের পরিবর্তে দীর্ঘমেয়াদী সমাধানের দিকে মনোযোগ দেওয়ার ওপর জোর দেন।

এছাড়াও, নোবেল বিজয়ী এই অর্থনীতিবিদ 'জুলাই গণহত্যা স্মৃতি ফাউন্ডেশন' প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা প্রকাশ করেন। গত ৮ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণের পর এটি ছিল ড. ইউনূসের দ্বিতীয় জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ।

বন্যায় এখন পর্যন্ত ১৮ জনের মৃত্যু

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলমান বন্যায় রোববার দুপুর পর্যন্ত ১১টি জেলার ৭৩টি উপজেলায় কমপক্ষে ১০ লক্ষ পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। আজ বিকেল ৩টা পর্যন্ত নতুন করে কোনো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। তবে মৌলভীবাজারে দুই জন নিখোঁজ রয়েছেন।

বন্যায় এখন পর্যন্ত মোট ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ৫২ লাখ ৯ হাজার ৭৯৮ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বন্যার পানিতে ৫৪৫টি পৌরসভা ও ইউনিয়নের ১ কোটি ৪ লাখ ৭ হাজার ২৯টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এই দুর্যোগে কমপক্ষে ৪ লাখ ১৫ হাজার ২৭৩ জন মানুষ ৩ হাজার ৬৫৪টি আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন। এসব কেন্দ্রে ২২ হাজার ২৯৮টি গবাদি পশুরও আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় সরকার ৭৪৮টি চিকিৎসা দল মোতায়েন করেছে। এছাড়াও, বন্যা কবলিত ১১টি জেলায় সরকার ৩ কোটি ৫২ লাখ টাকা, ২০ হাজার ৬৫০ মেট্রিক টন চাল, ১৫ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, শিশু খাদ্য এবং ৩৫ লাখ টাকা মূল্যের খাদ্য সামগ্রী বরাদ্দ দিয়েছে।

ত্রাণ তৎপরতায় বিভিন্ন বেসরকারি সংগঠন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও সাধারণ মানুষও অংশ নিচ্ছে।

বন্যাকবলিত এলাকার জেলা প্রশাসকদের বলা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কারী, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, চিকিৎসা দল এবং অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবকসহ সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সাথে সমন্বয় করতে।