বাংলাদেশের ছায়া? পশ্চিমবঙ্গেও ছাত্র-জাগরণ, মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে আল্টিমেটাম!

যেন বাংলাদেশের ক্ষত পরিস্থিতিরই ফটোকপি! মাত্র ক’দিন আগে বাংলাদেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে দেশত্যাগে বাধ্য হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এবার সেই বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের ছায়া দেখা দিলো পশ্চিমবঙ্গে। এক চিকিৎসকের ধর্ষণ ও মৃত্যুর বিচারের দাবিতে শুরু হওয়া আন্দোলন এখন রূপ নিয়েছে রাজ্যজুড়ে গণ অভ্যুত্থানে। সরকারের নিষ্ক্রিয়তা এবং নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে রাজপথে নেমেছে হাজার হাজার মানুষ। আন্দোলনকারীদের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি পদত্যাগ না করলে আগামী মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) নবান্ন অভিযান চালানো হবে।

পশ্চিমবঙ্গে আন্দোলনের একাংশ

স্মরণকালে এই প্রথম পশ্চিমবঙ্গ এমন এক আন্দোলনের মুখোমুখি, যার কোনো রাজনৈতিক ছায়া নেই। বাংলাদেশের মতোই এখানেও আন্দোলনের নেতৃত্বে রয়েছেন অপরিচিত তরুণরা। প্রবীর দাস, রবীন্দ্রভারতী এমএ, শুভঙ্কর হালদার এবং সায়ন পালিত - এই নামগুলো এর আগে কখনো শোনা যায়নি। তারা জানিয়েছেন, এটি কোনো রাজনৈতিক আন্দোলন নয়। ছাত্র সমাজের নেতৃত্বে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে আহ্বান জানানো হয়েছে। তারা আরও জানান, যদিও বাংলাদেশের আন্দোলন তাদের প্রেরণা যোগাচ্ছে, তবুও এটি সম্পূর্ণ পশ্চিমবঙ্গের নিজস্ব আন্দোলন।

গত ৯ই আগস্ট, উত্তর ২৪ পরগনার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক নবীন চিকিৎসকের ধর্ষণ ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। অভিযোগ ওঠে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় প্রশাসন এ ঘটনা থেকে চোখ ফিরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। পরিস্থিতি বুঝতে পেরে প্রথমে সোচ্চার হন চিকিৎসক সমাজ। পরে এতে যোগ দেন সমাজের সর্বস্তরের মানুষ।

আন্দোলনের তিন নেতা

শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারীরা বলেন, ‘নারীদের ওপর যে অত্যাচার হচ্ছে, তার বিরুদ্ধেই আমাদের এ আন্দোলন। ছাত্র সমাজের এ আন্দোলন। মূলত ৯ আগস্ট যে নারকীয় ঘটনা হয়েছে, রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান তার বিরুদ্ধে কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ নেননি। তাই আমরা সোমবারের (২৬ আগস্ট) মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীকে পদত্যাগের আল্টিমেটাম দিয়েছি। যদি এ আল্টিমেটাম কার্যকর না হয়, তাহলে পরদিন ২৭ আগস্ট আমাদের নবান্ন (মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয়) অভিযান।’

এদিকে, আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। তবে, আন্দোলনকারীরা স্পষ্ট করে দিয়েছে, তাদের সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক ব্যানার থাকবে না। দেখার বিষয়, বাংলাদেশের মতোই কি পশ্চিমবঙ্গেও ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হবে মুখ্যমন্ত্রীকে?