আমেরিকা কি প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ নারী প্রেসিডেন্টের জন্য প্রস্তুত?
- Details
- by আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আগামী সপ্তাহে শিকাগোতে ডেমোক্র্যাট দলের মনোনয়ন আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত হওয়ার মধ্য দিয়ে ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস আমেরিকার জনমতের এক গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন। প্রশ্ন হলো, আমেরিকা কি তাদের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ নারী প্রেসিডেন্টকে বরণ করে নিতে প্রস্তুত?
কমলা হ্যারিস
হ্যারিসের দৃঢ় বিশ্বাস, উত্তর হ্যাঁ। ২০১৯ সালে প্রাথমিক প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জো বাইডেনের বিরুদ্ধে প্রার্থী হওয়ার সময় তিনি বলেছিলেন, ‘আমার পুরো ক্যারিয়ারে যখনই আমি প্রার্থী হয়েছি, তখনই লোকেরা বলেছে ... লোকেরা প্রস্তুত নয়, এখন তোমার সময় নয়, তোমার মতো কেউ আগে এটা করেনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি কখনোই এসব কথায় কান দেইনি এবং আমার পরামর্শ, কেউ যেন এ জাতীয় নেতিবাচক মনোভাবের কাছে আত্মসমর্পণ না করে।’
যদিও হ্যারিসের সেই প্রচারণা তেমন জোর ধরতে পারেনি এবং বাইডেন তাকে রানিং মেট হিসেবে বেছে নেওয়ার আগেই তিনি প্রাথমিক প্রার্থীতার দৌড় থেকে সরে যান, তবুও তার এই অভিজ্ঞতা তার বর্তমান লক্ষ্যে পৌঁছাতে সাহায্য করবে।
নভেম্বরে যদি ৫৯ বছর বয়সী হ্যারিস ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পরাজিত করতে সক্ষম হন, তাহলে তিনি বারাক ওবামার পর বিশ্বের শীর্ষ পরাশক্তির নেতৃত্ব দেওয়া প্রথম নারী এবং দ্বিতীয় কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তি হিসেবে ইতিহাসে স্থান করে নেবেন।
একজন অগ্রদূত
অনেক দিক দিয়ে হ্যারিস ইতিমধ্যেই একজন অগ্রদূত। একজন ভারতীয় মা এবং জ্যামাইকান বাবার ঘরে জন্মগ্রহণকারী হ্যারিস ক্যালিফোর্নিয়ার প্রথম নারী অ্যাটর্নি জেনারেল নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনিই ছিলেন সেই পদে অধিষ্ঠিত প্রথম আফ্রিকান আমেরিকান এবং এশীয় আমেরিকান। এরপর তিনি একই ক্যাটাগরিতে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের প্রথম নারী ভাইস প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন।
২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত এক জরিপে দেখা গেছে যে বেশিরভাগ আমেরিকানদের কাছে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ক্ষেত্রে লিঙ্গ কোনও ভূমিকা রাখে না। ৬০ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন যে একজন নারী রাষ্ট্রপতি একজন পুরুষের মতোই চাপ সামলাতে পারবেন, যেখানে ২৭ শতাংশ বিশ্বাস করেন যে তিনি আরও ভালো করবেন।
"বিশ্বের অন্যান্য অংশে নারী নেতৃত্ব স্বাভাবিক হয়ে উঠলেও, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখনও সেই মুহূর্তটি অনুভব করেনি," বলেন আইন অধ্যাপক সোনিয়া গিপসন র্যাঙ্কিন।
তিনি উল্লেখ করেন যে ২০১৬ সালে ডেমোক্র্যাট হিলারি ক্লিনটন যদিও ইলেক্টোরাল কলেজে হেরে যান এবং এর ফলে ট্রাম্পের কাছে প্রেসিডেন্ট পদ হারান, তবুও তিনি জনপ্রিয় ভোট জিতেছিলেন।
কৌশলগত বৈষম্য
কলোরাডো বোল্ডার বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক রেজিনা বেটসন বিশ্বাস করেন যে ভোটারদের পক্ষপাত ভাবনা সমস্যা নাও হতে পারে। "সমস্যা হল দলের ভেতরের নেতারা, প্রতিনিধিরা এবং রাজনৈতিক তহবিলদাতারা যারা মনে করেন ভোটাররা পক্ষপাতদুষ্ট," বলেছেন বেটসন।
এই ভাবনা তাদেরকে একজন বর্ণের নারীকে সমর্থন থেকে বিরত রাখে, যা বেটসন "কৌশলগত বৈষম্য" হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
তবে ৮১ বছর বয়সী নেতা বাইডেন দৌড় থেকে সরে যাওয়ার পর হ্যারিস তার স্থলাভিষিক্ত হন, যার ফলে তিনি প্রাথমিক পর্বে "তিনি নির্বাচনযোগ্য তা প্রমাণ করার" চাপ থেকে মুক্তি পেয়েছেন।
তার রানিং মেট, ৬০ বছর বয়সী শ্বেতাঙ্গ পুরুষ মিনেসোটা গভর্নর টিম ওয়ালজকে সঙ্গে নিয়ে হ্যারিস এখন জাতি বা লিঙ্গ নির্বিশেষে সমস্ত আমেরিকানের আস্থা জয় করার আশা করছেন।
ট্রাম্পের সমালোচনা
ডোনাল্ড ট্রাম্প তার ডেমোক্র্যাট প্রতিদ্বন্দ্বীর পটভূমি নিয়ে আক্রমণ করতে দেরি করেননি। এই ধনকুবের ব্যবসায়ী অভিযোগ করেছেন যে হ্যারিস ‘সম্প্রতি কৃষ্ণাঙ্গ পরিচয় গ্রহণ করেছেন’ কেবলমাত্র নির্বাচনী সহায়তা পাওয়ার জন্য।
হ্যারিস, যিনি সবসময় গর্বের সঙ্গে তার কৃষ্ণাঙ্গ এবং এশীয় ঐতিহ্যের কথা বলে আসছেন, ট্রাম্পের ‘বিভেদ সৃষ্টি এবং অসম্মান’ এর নিন্দা করেছেন।
সাবেক রাষ্ট্রপতির রানিং মেট জেডি ভ্যান্স সম্প্রতি সমালোচনার মুখে পড়েছেন যখন ২০২১ সালের একটি ভিডিও পুনরায় প্রকাশিত হয়, যেখানে তিনি ডেমোক্র্যাটিক পার্টিকে ‘একগুচ্ছ শিশুহীন বিড়াল প্রেমিকা নারীদের দ্বারা পরিচালিত’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন ‘যারা নিজেদের জীবনে দুঃখী... এবং তাই তারা দেশের বাকি অংশকেও দুঃখী করতে চায়।’
হ্যারিস ডগলাস এমহফের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ এবং পূর্বের বিবাহ থেকে তার দুই সন্তানকে লালন-পালনে সাহায্য করেছেন।
ভ্যান্সের মন্তব্য জেনিফার অ্যানিস্টন এবং গ্লেন ক্লোজের মতো হলিউড তারকাদের সমালোচনার ঝড় তোলে এবং এটিকে ব্যাপকভাবে একটি রাজনৈতিক ভুল পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, বিশেষ করে এমন একটি দেশে যেখানে জন্মহার ঐতিহাসিকভাবে কম।
ভ্যান্স দাবি করেছেন যে তার মন্তব্য প্রেক্ষাপটের বাইরে বলা হয়েছিল।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.