খরার কবলে আফ্রিকার ৬ কোটি ৮০ লাখ মানুষ

আফ্রিকা মহাদেশীয় ৬ কোটি ৮০ লাখ মানুষ খরার কবলে ভুগছে। আর এতে ওই অঞ্চলে ফসল ও গবাদি পশুর উৎপাদন কমে যাওয়ায় এরইমধ্যে বেশ কয়েকটি দেশে খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতির বিষয়ে শনিবার হুঁশিয়ারি দিয়েছে আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলীয় ব্লক এসএডিসি । খবর আল জাজিরার।

জিম্বাবুয়ের রাজধানী হারারেতে পানির জন্য বাসিন্দাদের লাইন

চলতি বছরের শুরুর দিকে চরম খরায় আফ্রিকার বেশ কয়েকটি দেশে ফসলের আবাদ ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এমনকি গবাদিপশুর প্রজননও ব্যাহত হয়েছে মারাত্মকভাবে। এতে আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলের দেশগুলোতে খাদ্য ঘাটতি দেখা দিয়েছে, অর্থনীতির ওপর পড়েছে মারাত্মক প্রভাব।

খাদ্য নিরাপত্তাসহ আঞ্চলিক সমস্যা নিয়ে আলোচনার জন্য জিম্বাবুয়ের রাজধানী হারারেতে শনিবার বৈঠকে বসে আফ্রিকা মহাদেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় ১৬ দেশের জোট সাউদার্ন আফ্রিকান ডেভেলপমেন্ট কমিউনিটির (এসএডিসি) রাষ্ট্রপ্রধানরা।

বৈঠকে এসএডিসির নির্বাহী সচিব ইলিয়াস মাগোসি বলেন, এই অঞ্চলের মোট জনসংখ্যার ১৭ শতাংশ অর্থাৎ, ৬ কোটি ৮০ লাখ মানুষের সহায়তার প্রয়োজন।

মাগোসি বলেন, চলতি ২০২৪ সালের বর্ষা মৌসুমটি একটি চ্যালেঞ্জিং ছিল। এই অঞ্চলের বেশিরভাগ অংশে দেরিতে বৃষ্টিপাত শুরু হওয়ার নেতিবাচক প্রভাবের সম্মুখীন হয়েছে বিশাল একটি জনসংখ্যা।

খরার কারণে দক্ষিণ আফ্রিকার দেশগুলির মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জিম্বাবুয়ে, মালাউই ও জাম্বিয়া।

জাতিসংঘ বলেছে, আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চল বিগত ১০০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে শুষ্ক ফেব্রুয়ারি দেখেছে এবার। ওই অঞ্চল এবার স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের মাত্র ২০ শতাংশ পেয়েছে। তাপমাত্রাও গড়ের চেয়ে কয়েক ডিগ্রি বেশি ছিল।

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসের শেষদিকে বলেছিলেন, জলবায়ু সংকটের কারণে চরম তাপমাত্রা ক্রমবর্ধমানভাবে অর্থনীতিকে ছিন্নভিন্ন করছে, বৈষম্যকে প্রসারিত করছে, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাগুলোকে ক্ষুণ্ন করছে এবং সর্বপরি মানুষ হত্যা করছে।

গবেষকরা বলছেন, জলবায়ুর পরিবর্তনজনিত নেতিবাচক প্রভাব বিশেষ করে এল নিনোর কারণে খরার সৃষ্টি হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব তীব্র হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে খরা, শক্তিশালী হারিকেন, বন্যা ও দাবানলের মতো দুর্যোগ আঘাত হানছে এবং আবহাওয়ার ধরনও চরম হয়ে উঠছে।