রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ সেতু ধ্বংস করল ইউক্রেন

রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে সামরিক অভিযান অব্যাহত রেখেছে ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী। তারা সিইম নদীর উপর একটি কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ সেতু ধ্বংস করে দিয়েছে। সেতুটি ব্যবহার করে ক্রেমলিন রুশ সেনাদের কাছে রসদ সরবরাহ করতো। খবর বিবিসির।

রাশিয়ার কুরস্কে সিইম নদীর কৌশলগত সেতু

রাশিয়ান কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গ্লুশকোভো শহরের কাছে সিইম নদীর উপর সেতুটি ধ্বংস করে দেওয়ায় স্থানীয় জেলার কিছু অংশ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সেতুটি ধ্বংস হওয়ায় ওই অঞ্চলে সেনাদের যাতায়াত ও তাদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে রাশিয়ার।

ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর প্রধান অলেক্সান্ডার সিরস্কি শুক্রবার বলেছেন, অভিযানটির আরও অগ্রগতি ঘটেছে। সিরস্কি বলেন, সর্বশেষ সীমান্ত থেকে প্রায় ১৩ কিলোমিটার অভ্যন্তরে মালা লোকনিয়া গ্রামে শুক্রবার যুদ্ধ হয়েছে। সেখান থেকে অনেককে যুদ্ধবন্দি হিসেবে আটক করা হয়েছে।

কুরস্ক অঞ্চলে দ্বিতীয় সপ্তাহের মতো যুদ্ধ করছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। প্রতিদিনই কিছু না কিছু অঞ্চল দখলের দাবি করছে তারা। ইউক্রেনের এই আন্তঃসীমান্ত অভিযানের ফলে ১ লাখ ২০ হাজারের বেশি মানুষ নিরাপদে পালিয়ে গেছে।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রায় সামরিক অভিযান শুরুর পর এই প্রথম সীমান্ত পেরিয়ে রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলা চালাচ্ছে ইউক্রেনের সেনারা। এরইমধ্যে তারা বেশ কিছু অঞ্চল দখলের দাবি করেছে।

কিন্তু কিয়েভ বারবার বলছে, তারা রাশিয়া দখল করতে চায় না। তবে আন্তসীমান্ত পেরিয়ে অভিযানের অর্থ হচ্ছে, রাশিয়াকে শান্তি আলোচনার টেবিলে বসানো।

শুক্রবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির একজন সিনিয়র সহযোগী মিখাইলো পোডোলিয়াক বলেন, ইউক্রেন রাশিয়ার ভূখণ্ড দখল করতে আগ্রহী নয়। রাশিয়ায় আমাদের অনুপ্রবেশের মূল উদ্দেশ্যগুলোর একটি হচ্ছে মস্কোকে "আমাদের নিজস্ব শর্তে" আলোচনায় বসানো।

এক এক্স পোস্টে তিনি বলেন, কুরস্ক অঞ্চলে অভিযানে আমরা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি, রাশিয়াকে একটি ন্যায্য আলোচনায় রাজি করানোর জন্য সামরিক হাতিয়ার হিসেবে কাজ করবে।

এর আগে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ইউক্রেনীয় সৈন্যরা কুরস্কে তাদের অবস্থান শক্তিশালী করছে। সেখানে দখলকৃত অঞ্চলগুলো একটি বিনিময় তহবিল হিসেবে কাজ করবে। এর অর্থ হচ্ছে মস্কোর দখলকৃত ইউক্রেনীয় অঞ্চলগুলোর সঙ্গে কুরস্কের অঞ্চলগুলো অদলবদল করা যেতে পারে।

এদিকে ইউক্রেনের সামরিক অগ্রগতি অব্যাহত থাকায়, ইউক্রেনীয় সীমান্তবর্তী রাশিয়ার বেলগোরোড অঞ্চলের বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। আগামী সোমবার থেকে সীমান্তবর্তী পাঁচটি গ্রাম খালি করা হবে।

বেলগোরোডের গভর্নর ব্যাচেস্লাভ গ্ল্যাডকভ বলেন, ১৯ আগস্ট থেকে, আমরা পাঁচটি বসতিতে প্রবেশ বন্ধ করে দিচ্ছি, বাসিন্দাদের সরিয়ে নিচ্ছি এবং তাদের সহায়সম্পত্তি বের করে আনতে সাহায্য করছি।

ইউক্রেনীয় বাহিনী যেমন পশ্চিম রাশিয়ার ভূখণ্ডে আরও এগিয়ে যাচ্ছে, তেমনি রাশিয়ান বাহিনীও ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে সমানভাবে দখল করে নিচ্ছে। শুক্রবার মস্কো বলেছে, তাদের সৈন্যরা সেরিহিভকা শহর দখল করেছে। তারা পোকরোভস্ক শহর দখলের কাছাকাছি রয়েছে।

পোকরোভস্ক রাশিয়ান-নিয়ন্ত্রিত দোনেৎস্ক অঞ্চলের উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত, যেখানে ইউক্রেনীয় সৈন্যদের সরবরাহের জন্য একটি প্রধান সড়ক রয়েছে।