গবেষণা: পৃথিবীর ভারসাম্য রক্ষার জন্য নিট শূন্য লক্ষ্যমাত্রা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ
- Details
- by আন্তর্জাতিক ডেস্ক
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক নতুন গবেষণায় বলা হয়েছে, পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য দায়ী গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন ২১০০ সালের মধ্যে নিট শূন্যে নামিয়ে আনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অন্যথায়, এমন কিছু ‘গুরুত্বপূর্ণ সীমা’ অতিক্রম হয়ে যেতে পারে, যা পৃথিবীর ভারসাম্য রক্ষাকারী ব্যবস্থাগুলোকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে।
ছবি - সংগৃহীত
গবেষণায় আরও বলা হয়, বৈশ্বিক উষ্ণায়ন অনিয়ন্ত্রিত থাকলে গ্রহের ব্যবস্থার ওপর বিপজ্জনক ও অপরিবর্তনীয় প্রভাব পড়তে পারে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, বরফের স্তর গলে যেতে পারে, সমুদ্র স্রোতের ধারা ব্যাহত হতে পারে।
গবেষকদের মতে, এই ধরনের বিধ্বংসী ঘটনা যদি ধীরগতিতে ঘটতে থাকে এবং কয়েক দশক থেকে কয়েক হাজার বছর ধরে চলতে থাকে, তবুও আমাদের আজকের পদক্ষেপ এগুলোর ঘটনার সম্ভাবনার ওপর প্রভাব ফেলবে।
জার্মানির পটসডাম ইনস্টিটিউট ফর ক্লাইমেট ইমপ্যাক্ট রিসার্চের এই গবেষণার একজন লেখক নিকো উইন্ডারলিং বলেন, ‘আমরা এখন যা করছি তা আগামী কয়েক দশক, শতাব্দী এবং এমনকি সহস্রাব্দের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।’
বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় বিশ্বব্যাপী যে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে তা পৃথিবীর অন্তত একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যবস্থার পতনের ঝুঁকি এড়াতে যথেষ্ট নয় বলে তারা মনে করেন।
বৈশ্বিক উষ্ণায়ন শিল্প-পূর্ববর্তী সময়ের তুলনায় ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করার পথে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহ প্রভাব থেকে রক্ষা পেতে হলে এই সীমা রক্ষা করা অত্যন্ত জরুরি।
নেচার কমিউনিকেশনস জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণায় বলা হয়েছে, ‘স্থায়ীভাবে এই সীমা অতিক্রম করলে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যাবে।’
'গ্রহণযোগ্য নয় এই ঝুঁকি'
২০১৫ সালের প্যারিস জলবায়ু চুক্তির অধীনে, প্রায় ২০০ টি দেশ এই শতাব্দীর শেষ নাগাদ তাপমাত্রা বৃদ্ধি ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ‘অনেক নিচে" রাখার এবং ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিরাপদ লক্ষ্য অর্জনের জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন।
রাষ্ট্রসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সকল দেশ তাদের বিদ্যমান জলবায়ু পরিকল্পনা পুরোপুরি বাস্তবায়ন করলেও, এই শতাব্দীতে বিশ্ব ২.৫ থেকে ২.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বৃদ্ধির মুখোমুখি হবে।
গবেষকরা এই গবেষণার জন্য পৃথিবীর চারটি গুরুত্বপূর্ণ জলবায়ু ব্যবস্থার উপর ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রা বৃদ্ধির প্রভাব মূল্যায়ন করতে চেয়েছিলেন।
এই চারটি জলবায়ু ব্যবস্থা হলেঅ: আমাজনের প্রাথমিক বনের বিলুপ্তি; আটলান্টিক মহাসাগরের সঞ্চালন প্যাটার্নের পতন; এবং গ্রিনল্যান্ড এবং পশ্চিম অ্যান্টার্কটিকার বরফের স্তর গলানো।
তারা দেখেছেন যে, ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস লক্ষ্যমাত্রার উপরে প্রতি ০.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে, এই চারটি ব্যবস্থার এক বা একাধিক অপরিবর্তনীয়ভাবে পরিবর্তিত হওয়ার সম্ভাবনা ২৩০০ সালের মধ্যে ২৩% বৃদ্ধি পাবে।
তাপমাত্রা বৃদ্ধি ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করলে এই প্রবণতা ‘বেশি দ্রুত’ হবে।
উইন্ডারলিং এএফপি কে বলেন, ‘এটা আমাদের জলবায়ু ব্যবস্থার জন্য একটি ‘গ্রহণযোগ্য ঝুঁকি’ নয়’।
গবেষণাটিতে বলা হয়েছে, ‘এটি প্যারিস জলবায়ু লক্ষ্যমাত্রার গুরুত্ব আরও রেখাঙ্কিত করে, এমনকি যদি সাময়িকভাবে তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করে যায়।’
এখনই পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান
তবে গবেষকরা আশার কথাও শুনিয়েছেন। তারা বলছেন, বিশ্ব যদি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করেও ফেলে, তবুও এই শতাব্দীতে যদি ‘দ্রুত তাপমাত্রা হ্রাস’ করা যায়, তাহলে এই ঝুঁকি কমানো সম্ভব।
উইন্ডারলিং বলেন, ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো বৈশ্বিক উষ্ণায়নের মাত্রা যতটা সম্ভব ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাই রাখা এবং তারপর যত দ্রুত সম্ভব আবার ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ফিরে আসা। আশা করা যায় এই শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে এবং সর্বশেষ ২১০০ সালের মধ্যে আমরা এই লক্ষ্য অর্জন করতে পারব।’
গবেষকরা বলছেন, ‘গ্রহের স্থিতিশীলতার জন্য এই দশকেই কার্বন নির্গমন হ্রাস অপরিহার্য।’
উইন্ডারলিং আরও বলেন, ‘বৈশ্বিক উষ্ণায়ন প্রক্রিয়া বিপরীত করা কেবল তখনই সম্ভব হবে যখন ২১০০ সালের মধ্যে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন অন্তত নিট-শূন্য স্তরে নামিয়ে আনা সম্ভব হবে।’
গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে, ‘দীর্ঘমেয়াদে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি সর্বনিম্ন স্তরে রাখতে হলে ২১০০ সালের মধ্যে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন নিট-শূন্য স্তরে নামিয়ে আনা এবং তা বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.