ড্রোন হামলায় প্রাণে বেঁচে গেলেন সুদানি জান্তা প্রধান

সুদানে সামরিক সরকারের প্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান একটি হত্যা প্রচেষ্টা থেকে বেঁচে গেছেন। বুধবার দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় জাবাইতে তাকে লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালানো হয়। এ ঘটনায় তিনি বেঁচে গেলেও নিহত হয়েছে অন্তত ৫ সেনা। খবর বিবিসি ও আল জাজিরার।

জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান

সুদানি সামরিক সূত্র জানায়, জাবাইতে একটি সামরিক ঘাঁটিতে সেনাবাহিনীর একটি গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠানে দুটি ড্রোনের হামলা চালানো হয়। এতে জান্তা প্রধান জেনারেল বুরহান প্রাণে বেঁচে গেলেও পাঁচজন নিহত হয়েছে।

জাবাইত সেনা ঘাঁটিটি পোর্ট সুদান থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত, যেটি সেনাবাহিনীর কার্যত রাজধানী হিসেবে বিবেচিত এবং সেখানে জেনারেল বুরহান থাকেন।

সুদানি সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র নাবিল আবদুল্লাহ এ হামলার জন্য দেশটিতে সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে লড়াইরত সশস্ত্র গোষ্ঠী আধাসামরিক র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসকে (আরএসএফ) দায়ী করেছেন।

জেনারেল নাবিল আবদুল্লাহ বলেন, এই হামলার জন্য দায়ী একমাত্র বিদ্রোহী র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস, যারা সুদানের জনগণের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে এবং সুদানের জনগণকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে।

আবদুল্লাহ বলেন, ঈশ্বরকে ধন্যবাদ যে জেনারেল বুরহান এবং উপস্থিত সব কমান্ডার ভালো আছেন।

এদিকে আরএসএফ এ হামলার দায় অস্বীকার করেছে। গোষ্ঠীটির আইনী উপদেষ্টা বলেছেন, তারা এ হামলার জন্য দায়ী নয়। তারা আগামী মাসে মার্কিন মধ্যস্থতায় শান্তি আলোচনায় যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

এদিকে হামলার পর নিরাপদে সরে যেতে পারা জেনারেল বুরহান বিরোধীদের পরাস্ত করার দৃঢ়প্রত্যয় ঘোষণা করেন এবং যে কোনো আলোচনার কথা নাকচ করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা পিছু হটব না, আমরা আত্মসমর্পণ করব না এবং আমরা আলোচনা করব না।

আগামী ১৪ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় সুদানের সামরিক সরকার ও বিদ্রোহী আরএসএফের মধ্যে শান্তি আলোচনা শুরু হওয়ার কথা ছিল।

প্রসঙ্গত, সামরিক বাহিনীর প্রধান হিসেবে জেনারেল বুরহান বর্তমানে জান্তা সরকারের প্রেসিডেন্ট। তার নেতৃত্বাধীন সেনাবাহিনীর সঙ্গে গত ১৬ মাস ধরে বিদ্রোহী বাহিনী আরএসএফ লড়াই করছে। এই বাহিনীর প্রধান জেনারেল মোহামেদ হামদান দাগালো।

জেনারেল বুরহান ও জেনারেল দাগালো একইসঙ্গে ২০১৯ সালে সুদানের প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরকে ক্ষমতা থেকে সরাতে একসঙ্গে কাজ করেছেন। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তারা ক্ষমতা দখল করে নিলেও পরবর্তীতে দুজনের মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব দেখা দেয়।