আমিরাতে ৫৭ বাংলাদেশিকে কারাদণ্ড: হিউম্যান রাইটস ওয়াচের নিন্দা

মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) বুধবার সংযুক্ত আরব আমিরাতের কর্তৃপক্ষের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। তাদের অভিযোগ, উপসাগরীয় দেশটিতে সরকার বিরোধী বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার অভিযোগে ৫৭ জন বাংলাদেশিকে দীর্ঘমেয়াদে কারাদণ্ড দিয়ে ‘বিচারের নামে প্রহসন’ করা হয়েছে। তদন্ত শেষে রোববার একটি আদালত এই রায় ঘোষণা করে।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের লোগো

আবুধাবির একটি আদালত গত শুক্রবার সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিভিন্ন স্থানে বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার অভিযোগে তিন বাংলাদেশিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং বাকিদের ১০ থেকে ১১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে।

নিউইয়র্কভিত্তিক এইচআরডব্লিউ ‘বিচারের নামে প্রহসন’ বলে মন্তব্য করে এই দ্রুত বিচার প্রক্রিয়ার সমালোচনা করেছে। তারা বলছে, এ ধরনের দ্রুত বিচার ‘ন্যায্যতা এবং যথাযথ প্রক্রিয়া সম্পর্কে গুরুতর উদ্বেগ’ তৈরি করে।

এইচআরডব্লিউ-এর সংযুক্ত আরব আমিরাত বিষয়ক গবেষক জোয়ি শিয়া বলেছেন, ‘যখন তদন্ত শুরু এবং সম্পন্ন, বিচার শুরু এবং রায় ঘোষণা ৪৮ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে হয়ে যায়, তখন আসামীদের ন্যায্য বিচার পাওয়া অসম্ভব।’

সংযুক্ত আরব আমিরাতের কর্তৃপক্ষ বিক্ষোভ সম্পর্কে খুব কম তথ্য প্রদান করেছে। তবে এইচআরডব্লিউ জানিয়েছে, তারা যাচাই করা ভিডিও ফুটেজে আবুধাবি এবং দুবা সহ বিভিন্ন আমিরাত জুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভের চিত্র দেখা গেছে।

দুবাই মলের কাছে রেকর্ড করা একটি ভিডিওতে ‘শত শত, সম্ভবত হাজার হাজার বিক্ষোভকারীকে রাস্তায় জড়ো হয়ে বাংলাদেশের ছাত্রদের দেওয়া স্লোগান তুলতে দেখা গেছে,’ এইচআরডব্লিউ জানিয়েছে।

সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থার প্রতিবাদে এ মাসে বাংলাদেশে ব্যাপক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ এবং হাসপাতাল সূত্রের বরাত দিয়ে এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সপ্তাহে দক্ষিণ এশিয়ার দেশটিতে প্রায় প্রতিদিনের মিছিলগুলো সহিংস রূপ নেয় এবং অন্তত ১৮৬ জন নিহত হয়।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, পাকিস্তানি এবং ভারতীয়দের পরে আমিরাতে তৃতীয় বৃহত্তম প্রবাসী গোষ্ঠী হলো বাংলাদেশিরা।

উল্লেখ্য, সংযুক্ত আরব আমিরাতে সকল প্রকার বিক্ষোভ নিষিদ্ধ। এমনকি, মানহানি, মৌখিক বা লিখিত আকারে, তা প্রকাশ্যে হোক বা গোপনে, সবই আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। বিদেশি রাষ্ট্রের সমালোচনাও দেশটিতে অপরাধ।