শেষ ষোলো। কোয়ার্টার ফাইনাল এবং সেমিফাইনাল। এবারের ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের নক আউট পর্বের তিনটি ম্যাচেই দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখেছে ইংল্যান্ড। ফাইনালেও তেমনকিছুর আভাস দিয়েছিল ইংলিশরা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পেরে উঠল না থ্রি লায়নরা। রোববার রাতে ইংল্যান্ডকে ২-১ গোলে হারিয়ে ফের চ্যাম্পিয়ন হলো স্পেন।

spain vs england euro finalস্পেনের গোল উদযাপনে ব্যস্ত নিকো উইলিয়ামস ও লেমিন ইয়ামাল। ছবি: ফেসবুক

এ নিয়ে টানা দুটি ফাইনাল হারল ইংল্যান্ড। সবশেষ গত আসরে ঘরের মাঠে এগিয়ে থেকেও টাইব্রেকে ইতালির কাছে হেরেছিল ইংলিশরা। তিন বছর আগের দুঃখ নতুন করে ফিরে এলো তাদের। থ্রি লায়নদের কাঁদিয়ে সর্বোচ্চ চতুর্থবারের মতো এই টুর্নামেন্টের শিরোপা জিতে ইতিহাস গড়ল স্পেন। এই জয়ে লা রোজারা ছাড়িয়ে গেল তিনবারের চ্যাম্পিয়ন জার্মানিকে।

ইউরোপিয়ান ফুটবলের পাওয়ার হাউজ ইংল্যান্ড। ১৯৬৬ সালে ফিফা বিশ্বকাপ জয়ের রেকর্ডও আছে তাদের। কিন্তু কখনও মহাদেশীয় টুর্নামেন্ট জেতা হয়নি দলটির। ২০২১ সালে শিরোপা হাতছোঁয়া দূরত্বে রেখে এসেছে থ্রি লায়নরা। এবারও সেটির পুণরাবৃত্তি ঘটল। তাতে করে ইংল্যান্ডের ৫৮ বছরের অপেক্ষার প্রহর আরও দীর্ঘায়িত হলো।

চতুর্থ দল হিসেবে ব্যাক টু ব্যাক ফাইনাল খেলতে নেমেছিল ইংলিশরা। এমন কীর্তি ছিল কেবল সোভিয়েত ইউনিয়ন, জার্মানি ও স্পেনের। কিন্তু স্পেনের কাছে হেরে দুঃখজনক একটা রেকর্ড গড়ল ইংল্যান্ড। প্রথম দল হিসেবে টানা দুটি ইউরো হারল তারা। ইংলিশদের হারিয়ে সুদিন ফেরাল স্পেন। এক যুগ পর মেজর কোনো শিরোপা জিতল লা রোজারা।

১৯৬৪ সালে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় আসরে প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল স্পেন। ইউরোতে দ্বিতীয় ট্রফির জন্য তাদের অপেক্ষা করতে হয়েছিল ২০০৮ সাল পর্যন্ত। চার বছর বাদে তৃতীয়বার সাফল্যের দেখা পায় লা রোজারা। এর আগে ১৯৮৪ সালে অবশ্য একবার ফাইনাল হেরেছিল তারা। টুর্নামেন্টের ইতিহাসে স্পেনই এখন সবচেয়ে সফল দল।

দ্বিতীয় সেরা জার্মানি তিনবার ট্রফি জিতেছে। দুবার করে শিরোপা জিতেছে ইতালি ও ফ্রান্স। এ ছাড়া একবার করে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে সাতটি দল। দলগুলো হচ্ছে- রাশিয়া, চেক প্রজাতন্ত্র, পর্তুগাল, স্লোভাকিয়া, নেদারল্যান্ডস, গ্রিস ও ডেনমার্ক। তাদের কাতারে যেতে পারতো ইংল্যান্ড। কিন্তু দুর্বার স্পেনের কাছে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হলো তাদের।

বার্লিনের অলিম্পিক স্টেডিয়ামে দুই জায়ান্টের লড়াইয়ের প্রথমার্ধটা ছিল ঘুমপাড়ানি। ম্যাচ জমে ওঠে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই। ৪৭ মিনিটে স্পেনকে লিড এনে দেন নিকো উইলিয়ামস। তার গোলের উৎস এই টুর্নামেন্টের বিস্ময় লেমিন ইয়ামাল। ৭৩ মিনিটে সমতায় ফেরে ইংল্যান্ড। দলটিকে লড়াইয়ে ফেরান বেঞ্চ ছেড়ে আসা কোল পালমার।

বুকায়ো সাকা বল দেন জুডে বেলিংহামকে। রিয়াল মাদ্রিদ মিডফিল্ডার ব্যাক পাস করেন পালমারকে। দূর পাল্লার মাটি কামড়ানো শটে স্পেনের জাল কাঁপান চেলসি মিডফিল্ডার। এই গোলে আশা জাগে ইংল্যান্ডের। ম্যাচ এগোতে থাকে ড্রয়ের দিকে। কিন্তু ৮৬ মিনিটে ব্যবধান গড়ে দিলেন বদলি নামা মিকেল ওয়্যারজাবাল।

মার্ক কুকুরেয়ার কাছ থেবে বল পেয়ে জয়সূচক গোল করেন তিনি। উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ে স্পেন। তাদের এই উল্লাস শেষ পর্যন্ত উৎসবে রূপ নিয়েছে। নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে অবশ্য সমতায় ফিরতে জোরাল এক আক্রমণ করেছিল ইংল্যান্ড। ডেকলান রিসের হেড প্রতিহত করেন স্পেন গোলরক্ষক উনাই সিমন। ফিরতি শট নেন মার্ক গেয়ি।

এবার গোল লাইন থেকে হেডে বল ফেরান ওলমো। এরপর সুযোগ ছিল গোলের। কিন্তু রিসের শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। এর আগে ম্যাচজুড়ে গোল মিস করেছে ইংল্যান্ড। অধিনায়ক হ্যারি কেন যতটা সময় মাঠে ছিলেন খেলেছেন নিজের ছায়া হয়ে। ইংলিশ লিগের গত মৌসুমের বর্ষসেরা ফুটবলার ফিল ফোডেনের অবস্থাও ছিল তাই।

সেই তুলনায় গতি ও ছন্দময় এক পারফরম্যান্স উপহার দিয়েছে স্পেন। দলটির সামনে আরও গোলের সুযোগ ছিল। কিন্তু একাধিক গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেছেন ইয়ামাল, পেদ্রি, উইলিয়ামস, ওলমোরা। যদিও জয়ের পর সেসব হতাশা ভুলে গেছেন তারা। একই সঙ্গে বিশ্ব ফুটবলকে কড়া একটা বার্তা দিল তারুণ্যেঠাসা স্পেন। অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়ে ইমায়াল-ওলমোরা যে ব্র্যান্ডের ফুটবল খেলেছে সেটি অনেক দিন মনে থাকবে ভক্তদের।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.