রুশ সীমান্ত পেরুনো অভিবাসী ঠেকাতে আইন পাস ফিনল্যান্ডে

রাশিয়ার সীমান্ত পেরিয়ে আসা অবৈধ অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ঠেকাতে একটি বিতর্কিত বিল পাস করেছে ফিনল্যান্ডের পার্লামেন্ট। নতুন আইনে সীমান্ত পেরিয়ে আসা লোকজনকে ফিনল্যান্ডে ঢুকতে বাধা দেওয়া, এমনকি অস্ত্র প্রয়োগের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে দেশটির সীমান্তরক্ষীদের। খবর বিবিসির।

ফিনল্যান্ডের কট্টর-ডানপন্থী সরকারের প্রধানমন্ত্রী পেত্তেরি অর্পো

ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশ ও ন্যাটো সামরিক জোটের সদস্য ফিনল্যান্ড গত বছরের শেষ দিকে রাশিয়ার সঙ্গে তার স্থল সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে। তারপরও অস্ত্র প্রয়োগের আইন পাস করল শান্তির দেশ হিসেবে পরিচিত ফিনল্যান্ড।

ফিনল্যান্ড মূলত প্রতিবেশী রাশিয়াকে দোষারোপ করছে তার বিরুদ্ধে অবৈধ অভিবাসী লেলিয়ে দিয়ে ‘অভিবাসন অস্ত্র’ ব্যবহারের জন্য। হেলিসিঙ্কি সরকারের অভিযোগ, সিরিয়া ও সোমালিয়ার মতো দেশ থেকে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের সীমান্ত অতিক্রম করতে উত্সাহিত করছে রাশিয়া।

হেলিসিঙ্কির দাবি, ইউক্রেন যুদ্ধে কিয়েভের সমর্থনকারী হওয়ায় এবং ন্যাটো জোটে যোগ দেওয়ায় প্রতিহিংসাবশত রাশিয়া অবৈধ অভিবাসী ফিনল্যান্ডে লেলিয়ে দিয়েছে। যদিও এসব দাবি অস্বীকার করেছে ক্রেমলিন সরকার।

শুক্রবার নতুন সীমান্ত আইনের বিলে ফিনিশ পার্লামেন্টে পক্ষে ১৬৭টি ভোট এবং বিপক্ষে ৩১টি ভোট পড়েছে। প্রস্তাবটি পাস করার জন্য ২০০ আসনের পার্লামেন্টে আরও কম ভোটের প্রয়োজন ছিল।

বিলটি পাসের পর দেশটির প্রধানমন্ত্রী পেত্তেরি অর্পোর ডানপন্থী সরকার বলেছে, ভবিষ্যতে অবৈধ অভিবাসীদের আগমন বন্ধ করতে বিলটি অত্যাবশ্যক।

শুক্রবার ভোটের পরে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী অর্পো বলেন, এটি রাশিয়ার জন্য একটি শক্তিশালী বার্তা, আমাদের মিত্রদের জন্য একটি শক্তিশালী বার্তা যে, ফিনল্যান্ড তার নিজের নিরাপত্তার যত্ন নেয়, আমরা ইইউ সীমান্তের নিরাপত্তার যত্ন নিই।

তবে দেশটির অনেক শিক্ষাবিদ, আইন বিশেষজ্ঞ এবং মানবাধিকার গোষ্ঠী সহ বিরোধীরা বলছেন, এটি ফিনল্যান্ডের সংবিধান, জাতিসংঘ কর্তৃক নির্ধারিত আন্তর্জাতিক অধিকারের প্রতিশ্রুতি এবং ইইউর প্রতিশ্রুতি ও ফিনল্যান্ডের স্বাক্ষরিত আন্তর্জাতিক চুক্তির সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

গত বছরের মাঝামাঝি থেকে ১৩০০ এরও বেশি আশ্রয়প্রার্থী রাশিয়া থেকে পাড়ি দিয়ে ফিনল্যান্ডে ঢুকেছে। যদিও চলতি বছরের মার্চ থেকে নতুন কোনো অভিবাসীর আগমন ঘটেনি।

২০২৩ সালে এবং চলতি বছরের শুরুর দিকে রুশ সীমান্ত পেরিয়ে ফিনল্যান্ডে আসা বেশিরভাগ লোকই আফগানিস্তান, মিশর, ইরাক, সোমালিয়া, সিরিয়া ও ইয়েমেনসহ মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার বাসিন্দা।