বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত মুম্বাই, বন্ধ স্কুল-কলেজ, যান চলাচল ব্যাহত

ভারতের বাণিজ্যিক রাজধানী মুম্বাইতে সোমবার ভোর থেকেই অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের ফলে জনজীবন ব্যাপকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। জলাবদ্ধতার কারণে রাস্তাঘাট, রেলপথ তলিয়ে গেছে, ব্যাহত হচ্ছে বিমান চলাচল। পরিস্থিতি মোকাবেলায় স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

ছবি - সংগৃহীত

ভোরের দিকে মাত্র ছয় ঘণ্টার মধ্যে ৩০০ মিলিমিটারেরও বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, দিনভর তীব্র বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে। উপকূলীয় এলাকায় জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেয়ে ৪.৪০ মিটারে পৌঁছানোর আশঙ্কা রয়েছে, যা পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তুলতে পারে।

মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে টুইটারে জনসাধারণকে অতি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘রাস্তাঘাটে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে এবং রেল চলাচলও ব্যাহত হচ্ছে।’

শহরের বিভিন্ন এলাকায় হাঁটুপানি জমে থাকায় যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেলে দেখা গেছে, ইস্টার্ন এবং ওয়েস্টার্ন এক্সপ্রেস হাইওয়েতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। রেললাইনে পানি জমে যাওয়ার কারণে বেশ কিছু দূরপাল্লার ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।

উল্লেখ্য, মে মাসের শেষের দিকে শুরু হওয়া মৌসুমি বায়ু ভারতের বিভিন্ন স্থানে তীব্র তাপপ্রবাহের পর স্বস্তি বয়ে আনলেও, গত কয়েক বছর ধরেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে।

পূর্ব ভারতের বিহার রাজ্যে বজ্রপাতে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি মাসের শুরু থেকে এ পর্যন্ত বজ্রপাতে মোট ২০ জনের মৃত্যু হলো।

এদিকে, উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামে বন্যায় ২০ লক্ষাধিক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যানও প্লাবিত হওয়ায় ছয়টি গণ্ডারের মৃত্যু হয়েছে। রাজ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মে মাস থেকে এ পর্যন্ত বন্যা ও বৃষ্টিপাতজনিত ঘটনায় আসামে ৬৬ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।

নেপাল সীমান্তবর্তী উত্তরপ্রদেশের ৩১টি গ্রামেও বন্যা পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

প্রতিবেশী দেশ নেপালেও তীব্র বৃষ্টিপাতের কারণে বন্যা ও ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে, যার ফলে কমপক্ষে ১১ জন নিহত হয়েছে।

বিমান চলাচল ব্যাহত

দিল্লিতে অতিবৃষ্টির ফলে বিমানবন্দরের ছাদ ধসে পড়ার ঘটনার মাত্র ১০ দিন পর মুম্বাইতেও বৃষ্টির কারণে বিমান চলাচলে ব্যাঘাত ঘটেছে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ভোর ২:২২ মিনিট থেকে এক ঘন্টারও বেশি সময় ধরে রানওয়ে বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়। ফ্লাইট ট্র্যাকিং পরিষেবা ফ্লাইটরাডার ২৪ এর ওয়েবসাইটে দেখা গেছে, ৪৩০ টিরও বেশি ফ্লাইট বিলম্বিত হয়েছে এবং ৪৯ টি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।