ইউরো ২০২৪: পরিসংখ্যানে এগিয়ে স্পেন, পিছিয়ে ফ্রান্স

ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের এবারের আসর এখন প্রান্তসীমায়। আজ বায়ার্ন মিউনিখের দুর্গ অ্যালিয়েঞ্জ এরিনায় টুর্নামেন্টের প্রথম সেমিফাইনালে মুখোমুখি হবে দুই জায়ান্ট ফ্রান্স ও স্পেন। বাংলাদেশ সময় রাত একটায় শুরু হবে মহারণ। বল মাঠে গড়ানোর আগে চোখ বুলানো যাক দুই দলের পরিসংখ্যানে:

এবারের ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম সেমিফাইনালে আজ মুখোমুখি হবে ফ্রান্স ও স্পেন। ছবি: উয়েফা

এ পর্যন্ত ৩৬ বার দেখা হয়েছে ফ্রান্স ও স্পেনের। স্পেনের জয় আছে ১৬টি। ফ্রান্সের জয় ১৩টি। সাতটি ম্যাচ অমীমাংসিতভাবে শেষ হয়েছে। এসব ম্যাচে স্পেন গোল করেছেন ৬৪টি। ফ্রান্সের গোল ৩৯টি।

২০২১ সালের অক্টোবরে শেষবার মুখোমুখি হয়েছে দুই দল। উয়েফা নেশনস লিগের ফাইনালে স্পেনকে ১-০ গোলে হারিয়েছিল ফ্রান্স। ম্যাচের একমাত্র ও জয়সূচক গোলটি করেছিলেন কিলিয়ান এমবাপ্পে।

সবশেষ আট ম্যাচের পাঁচটিতেই জিতেছে স্পেন। ফ্রান্সের জয় দুটি। ড্র হয়েছে অন্যটি। ২০১৪ বিশ্বকাপ বাছাইয়ে একই গ্রুপে পড়েছিল দুই দল। দুই লেগের ম্যাচে স্পেন পেয়েছে সর্বোচ্চ চার পয়েন্ট।

২০১২ সালে ফ্রান্সের স্বপ্নযাত্রা থেমে গিয়েছিল স্পেনের কাছে হেরে। দানেৎস্কতে কোয়ার্টার ফাইনালের সেই ম্যাচে স্প্যানিয়ার্ডরা জেতে ২-০ গোলে। স্পেনের হয়ে গোল দুটি করেন জাবি আলোনসো।

২০০৬ বিশ্বকাপের শেষ ষোলোতে স্পেনের বিদায় ঘণ্টা বাজিয়েছিল ফ্রান্স। জার্মানির হ্যানোভারে সেই ম্যাচে ফরাসিরা জেতে ৩-১ গোলে। অথচ নক আউট পর্বের ম্যাচটিতে আগে লিড নিয়েছিল স্পেন।

ফ্রান্সের বর্তমান কোচ দিদিয়ের দেশাম। ১৯৯২ ইউরো বাছাইয়ে ফরাসিদের খেলোয়াড় ছিলেন তিনি। বাছাইয়ে দুই ম্যাচেই জেতে ফ্রান্স। ঘরের মাঠে ৩-১ এবং অ্যাওয়ে ম্যাচে ফরাসিদের জয় ২-১ গোলে।

ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে ফ্রান্স প্রথম শিরোপার স্বাদ পেয়েছিল এই স্পেন হারিয়ে। ১৯৮৪ সালে ঘরের মাঠ পার্ক ডু প্রিন্সেসে স্পেনকে কাঁদায় ফরাসিরা। ওই আসরে রেকর্ড নয় গোল করেছিলেন মিশেল প্লাতিনি।

ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনাইলে পাঁচ ম্যাচের চারটিতে জিতেছে স্পেন। এটা হতে যাচ্ছে লা রোজাদের ষষ্ঠ সেমিফাইনাল। তাদের চেয়ে বেশি সেমিফাইনাল খেলার রেকর্ড আছে জার্মানির (আটবার)।

ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে ১২ বার অংশ নিয়েছে স্পেন। তাদের চেয়ে বেশি এই টুর্নামেন্ট খেলেছে কেবল জার্মানি (১৪ বার)। সবশেষ ১২ আসরের মধ্যেই ১১ বার অংশ নিয়েছে স্পেন। কেবল ১৯৯২ সালে ছিল না তারা।

ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে তিনবারের চ্যাম্পিয়ন স্পেন। তাদের সমান সাফল্য জার্মানিরও। যা টুর্নামেন্টের ইতিহাসে যৌথভাবে সর্বোচ্চ ট্রফি জয়ের রেকর্ড। স্পেন ট্রফি জেতে ১৯৬৪, ২০০৮ ও ২০১২ সালে। ১৯৯৮ সালে রানার্সআপ হয় তারা।

সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা সাত ম্যাচ জিতেছে স্পেন। সবমিলিয়ে ১৭ ম্যাচের মধ্যে কেবল একটিতে হেরেছে লা রোজারা। এ সময়ে ১৪টি ম্যাচ জিতেছে তারা। ড্র করেছে দুই ম্যাচে। তাদের হারটি কলম্বিয়ার বিপক্ষে।

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ইউরোতে টানা ১১ ম্যাচ অপরাজিত আছে স্পেন। এর মধ্যে জয় সাতটি এবং ড্র আছে দুটি। ইউরোতে নির্ধারিত সময়ে লা রোজাদের শেষ হারটা ২০১৬ ইউরোর শেষ ষোলোতে; ২-০ গোলে।

এবারের আসরে একমাত্র দল হিসেবে পাঁচ ম্যাচের সবকটিতে জিতেছে স্পেন। আলাদা ছয়টি ভেন্যুতে ছয়টি ম্যাচ খেলতে হচ্ছে তাদের। আজকের ম্যাচের ভেন্যু মিউনিখে দুটি ম্যাচ খেলে দুটিতেই হেরেছে স্পেন।

ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনালে পাঁচবার খেলেছে ফ্রান্স। যেখানে তাদের জয় তিনটি। হার আছে দুটি। ১৯৮৪ সাল থেকে টানা ১১টি আসর খেলছে ফরাসিরা। টুর্নামেন্টে একবারই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে তারা।

২০১৬ সালে এই টুর্নামেন্টের ফাইনালে ঘরের মাঠে পর্তুগালের কাছে ১-০ গোলে হেরেছিল ফ্রান্স। এবারের আসরের কোচদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি টানা ১২ বছর ধরে কাজ করছেন ফরাসিদের কোচ দিদিয়ের দেশাম।

সবশেষ চারটি মেজর টুর্নামেন্টের তিনটিতেই ফাইনাল খেলেছে ফ্রান্স। সবকটিই দেশামের কোচিংয়ে। এর মধ্যে কেবল ২০১৮ সালেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল তারা। তবে হারতে হয় ২০২২ বিশ্বকাপ ও ২০১৬ ইউরোর ফাইনালে।

সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা আট ম্যাচ ধরে অপরাজিত আছে ফ্রান্স। এর মধ্যে চারটি জয় ও চারটি ড্র আছে তাদের। গত ১৩ ম্যাচের কেবল একটিতে হেরেছে তারা। এ সময় ফরাসিদের জয় সাতটি ও ড্র পাঁচটি।

এবারের ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে পাঁচ ম্যাচে কেবল তিনটি গোল পেয়েছে ফ্রান্স। এর মধ্যে দুটি আত্মঘাতী ও একটি পেনাল্টি গোল রয়েছে। টানা ৪৮০ মিনিট ধরে উন্মুক্ত খেলায় গোল পাচ্ছে না ফরাসিরা।

ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে এ পর্যন্ত আট ম্যাচে এক গোল পেয়েছেন ফ্রান্স অধিনায়ক এমবাপ্পে। সেই গোলটি ছিল গ্রুপপর্বে; পোল্যান্ডের বিপক্ষে। গোলটাও ছিল আবার পেনাল্টি থেকে!

মিউনিখে তিন ম্যাচ খেলে অপরাজিত আছে ফ্রান্স। তাদের জয় দুটি পর্তুগাল ও জার্মানির বিপক্ষে। দুটি জয়ই ছিল ১-০ গোলে। ২০১৮ সালে জার্মানদের সঙ্গে ফ্রান্স ড্র করেছিল উয়েফা নেশনস লিগে।