প্রথমদিনেই ঋষি সুনাকের রুয়ান্ডা নীতি বাতিল

যুক্তরাজ্যের নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার ক্ষমতা গ্রহণের প্রথম দিনেই তার পূর্বসূরী ঋষি সুনাকের বিতর্কিত রুয়ান্ডা বিল বাতিল ঘোষণা করেছেন। শনিবার (৬ জুলাই) প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রথম সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ ঘোষণা দেন। আদালতকে টপকে পার্লামেন্টে বিতর্কিত রুয়ান্ডা বিল পাস করেছিলেন যুক্তরাজ্যের সদ্য বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। খবর আল জাজিরা।

প্রথমদিনেই রুয়ান্ডা বিল বাতিল করে দেন স্টারমার

স্টারমার বলেন, শুরু হওয়ার আগেই রুয়ান্ডা নীতির সমাধি হলো। কারণ আমি বি্বোস করি, অভিবাসনপ্রত্যাশীদের আটকাতে এটি কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ ছিল না। আর যে পরিকল্পনা কোনো কাজে আসে না, সেটি আমি চালু রাখতে আগ্রহী নই। রুয়ান্ডা নীতিটিকে ‘উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সমস্যা’ হিসেবে বিবেচনা করার কথাও জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমি এমন সব নীতি-কৌশল চালিয়ে যেতে প্রস্তুত নই, যেগুলো যথাযথভাবে কাজ করে না। বিষয়টির ব্যাখ্যায় তিনি জানান, যেসব অভিবাসনপ্রত্যাশী ছোট নৌকায় পাড়ি দিয়ে যুক্তরাজ্যে আসেন, তাদেরকে রুয়ান্ডায় পাঠানোর সম্ভাবনা মাত্র ১ শতাংশ। বিষয়টি মানব পাচারকারী সিন্ডিকেটগুলো বেশ ভালো করেই জানে। তাই ঝুঁকিপূর্ণ হলেও তারা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ইউরোপে নিয়ে আসা অব্যাহত রেখেছে।

অভিবাসনপ্রত্যাশীদের রুয়ান্ডায় পাঠানোর পরিকল্পনা করেছিলেন ঋষি সুনাক

যুক্তরাজ্যে অবৈধ অভিবাসীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ঋষি সুনাকের সরকার ২০২২ সালের এপ্রিলে আফ্রিকার দেশ রুয়ান্ডার সঙ্গে পাঁচ বছর মেয়াদি একটি চুক্তি করে। এ চুক্তির আওতায় যুক্তরাজ্যে আসা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মধ্যে কিছু সংখ্যককে রুয়ান্ডায় পাঠানোর পরিকল্পনা করা হয়।

চুক্তি অনুযায়ী রুয়ান্ডা যুক্তরাজ্যে আসা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের জায়গা দেবে। এর বিনিময়ে ব্রিটিশ সরকার রুয়ান্ডাকে অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়তা করবে। এর আওতায় অভিবাসনপ্রত্যাশীদের আটকে ধরপাকড় শুরু হয়। ২০২২ সালের জুনে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের নিয়ে প্রথম ফ্লাইটটি রুয়ান্ডার উদ্দেশে রওনা করার কথা ছিল। তবে একেবারে শেষ মুহূর্তে ইউরোপীয় মানবাধিকার আদালতের এক আদেশে তা বাতিল হয়ে যায়। যুক্তরাজ্যের সুপ্রিম কোর্টও পরবর্তী সময়ে এ ধরনের পরিকল্পনাকে অবৈধ ঘোষণা করে।

তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক এরপরও বিষয়টি কার্যকর করার চেষ্টা চালিয়ে যান। তিনি পার্লামেন্টে বিলটি উত্থাপন করেন। দীর্ঘদিন ধরে বিষয়টি নিয়ে অনেক তর্ক-বিতর্ক চললেও গত ২৩ এপ্রিল বিরোধী দলগুলো তাদের আপত্তি প্রত্যাহার করে নেয়। ফলে পার্লামেন্টে আইনটি পাস হয়। তবে এত কিছু করে পাস করা বিলটিকে প্রথম দিনেই বাতিল করে দেন ঋষি সুনাকের উত্তরসূরি স্টারমার।