গাজা ইস্যুতে অস্ট্রেলিয়ার সিনেটর ফাতিমার ক্ষমতাসীন দলত্যাগ

ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের প্রস্তাব সমর্থন নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টে একটি ভোটাভুটিতে ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির বিরুদ্ধে গিয়ে ভোট দিয়েছিলেন দলটির সিনেটর ফাতিমা পেম্যান। এ নিয়ে সমালোচনা, এমনকি হত্যার হুমকির পর দলটি থেকে পদত্যাগ করেছেন অস্ট্রেলিয়ার একমাত্র হিজাবধারী এই সিনেটর। খবর বিবিসির।

অস্ট্রেলিয়ার একমাত্র হিজাবধারী মুসলিম সিনেটর ফাতিমা পেম্যান

অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টের মুসলিম আইনপ্রণেতা ২৯ বছর বয়সী ফাতিমা আফগান বংশোদ্ভূত। তার পরিবার ১৯৯৬ সালে তালেবানের হামলা থেকে বাঁচতে আফগানিস্তান থেকে পালিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় আশ্রয় নিয়েছিল। ফাতিমা হচ্ছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ও একমাত্র হিজাব-পরা ফেডারেল রাজনীতিবিদ।

গাজায় চলমান ইসরায়েলি হামলার পরিপ্রেক্ষিতে বরাবরই ফিলিস্তিনের পক্ষে সোচ্চার ছিলেন সিনেটর ফাতিমা। গত মঙ্গলবার অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টে গ্রিন পার্টির আয়োজনে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রত্বের পক্ষে সমর্থনদান নিয়ে ভোটাভুটিতে নিজ দল লেবার পার্টির বিরুদ্ধে গিয়ে ভোট দেন ফাতিমা।

মূলত গাজার সংঘাত অস্ট্রেলিয়ায় একটি অস্থির রাজনৈতিক ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার বর্তমান সরকার ফিলিস্তিন-ইসরায়েল ইস্যুতে দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের পক্ষে থাকলেও এককভাবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের সমর্থনের বিরোধী। আর বিষয়টিকে খুব সতর্কতার সঙ্গে পরিচালনা করার চেষ্টা করছে প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজের লেবার সরকার।

এরইমধ্যে ফাতিমা নিজ দলের বাইরে গিয়ে ভোট দেওয়ার কারণে পার্লামেন্টে ফ্লোর-ক্রসের অভিযোগে অভিযুক্ত হন। দলের নীতিগত অবস্থানকে দুর্বল করে ফ্লোর-ক্রস করায় তাকে দল থেকে কঠোর শাস্তির হুমকি এবং পার্টির ককাস থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সাসপেন্ড করা হয়।

এমন পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) ক্ষমতাসীন দলটি থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন ফাতিমা। এ নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, মঙ্গলবার গ্রিনস পার্টির সঙ্গে ভোট দেওয়ার জন্য সিনেট ফ্লোর-ক্রস করেছেন তিনি। তবে তাতে কিছু সহকর্মীর কাছ থেকে যেমন সমর্থন পেয়েছেন, তেমনি অন্যদের কাছ থেকে আসছিল নানান চাপ।

ফাতিমা বলেন, আমাকে মৃত্যুর হুমকি পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে, হুমকি দিয়ে ইমেইলও পেয়েছি। তাই বিষয়টি নিয়ে আমি গভীরভাবে ভেবেছি। এটি এমন একটি বিষয় যা আমি আপস করতে পারি না।

এদিকে প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি আলবেনিজ ফাতিমা পেম্যানকে দলত্যাগের জন্য কোনো ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি জানান, পদত্যাগ করায় ফাতিমা এখন একজন স্বতন্ত্র সিনেটর হিসেবে ক্রসবেঞ্চে যোগ দেবেন।