তাইওয়ানের মাছ ধরার ট্রলার আটক চীনের, দু’পক্ষে নতুন উত্তেজনা

তাইওয়ানের একটি মাছ ধরার ট্রলার ৫ জেলেসহ আটক করেছে চীন। মঙ্গলবার রাতে চীনা জলসীমা থেকে তাদের আটক করে বেইজিংয়ের কোস্টগার্ড। তবে এ নিয়ে তাইওয়ানের সঙ্গে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। আর ঘটনাস্থলেও দুই পক্ষের কোস্টগার্ডের মধ্যে রেষারেষি তৈরি হয়। খবর বিবিসি ও আল জাজিরার।

তাইওয়ানের একটি মাছধরা ট্রলার আটক করেছে চীনা কোস্টগার্ড

বেইজিং বলেছে, দক্ষিণ-পূর্বের ওয়েইতুতে চীনা জলসীমায় অবৈধভাবে মাছ ধরার জন্য মঙ্গলবার রাতে একটি তাইওয়ানের নৌকা আটক করা হয়েছে। তাতে পাঁচজন ক্রু সদস্য ছিলেন। তাদের দুইজন তাইওয়ানি ও তিনজন ইন্দোনেশিয়ান।

এদিকে তাইওয়ান চীনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, নৌকা ও জেলেদের ছেড়ে দেওয়ার। যদিও তাইওয়ানের কর্মকর্তারা স্বীকার করেছেন, মাছ ধরার নৌকাটি তাদের উপকূল থেকে প্রায় ২.৮ নটিক্যাল মাইল (৫ কিলোমিটার) দূরে চীনের জলসীমায় চলে গিয়েছিল।

প্রসঙ্গত, চীনের বার্ষিক গ্রীষ্মকালীন মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞার সময় চলছে মে থেকে আগস্ট পর্যন্ত। তারইমধ্যে দেশটির জলসীমায় আটক হয়েছেন তাইওয়ানের জেলেরা।

চীনের কোস্ট গার্ডের মুখপাত্র লিউ দেজুন বলেন, মাছ ধরার জাহাজটি মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞার নিয়ম লঙ্ঘন করেছে এবং নিষিদ্ধ এলাকার মধ্যে অবৈধভাবে ট্রলিং করেছে।

চীনা কর্তৃপক্ষ গ্রীষ্মকালীন নিষেধাজ্ঞার সময় মাছ ধরার জন্য ২০০৩ সাল থেকে এ পর্যন্ত তাইওয়ান-নিবন্ধিত ১৭টি জাহাজ আটক করেছে এবং তাইওয়ানও চলতি বছরের গত ছয়মাসে চীনের অন্তত পাঁচটি নৌকা আটক করেছে।

জানা গেছে, মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টার দিকে মাছ ধরা নৌকাটি আটক করার সময় দুই পক্ষের কোস্টগার্ডের মধ্যে সাময়িক উত্তেজনা তৈরি হয়।

দুটি চীনা কোস্টগার্ড জাহাজের কর্মকর্তারা কিছুটা ধাওয়া করে মাছ ধরার নৌকাটি আটক করেছে। অন্যদিকে তাৎক্ষণিক তিনটি তাইওয়ানের কোস্টগার্ড জাহাজ নৌকাটি উদ্ধারের জন্য ছুটে যায়।

চীনের উপকূলরক্ষীরা জানায়, তাইওয়ানিরা মাছ ধরার নৌকাটিকে ছেড়ে দেওয়ার দাবিতে লাউডস্পিকার ব্যবহার করে। পরে তারাও লাউডস্পিকারে অন্য পক্ষকে হস্তক্ষেপ না করার আহ্বান জানায়। এ সময় ঘটনাস্থলে চীনের আরও কয়েকটি কোস্টগার্ড জাহাজ ছুটে এলে তাইওয়ানি জাহাজগুলো পিছু হটে।

চীন ও তাইওয়ানকে পৃথক করা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ১১০ মাইল প্রণালীতে দেশ দুটির মধ্যে এই ধরনের বিবাদ সাধারণ ঘটনা হয়ে উঠেছে।

চীন স্ব-শাসিত তাইওয়ানকে তার নিজস্ব অংশ মনে করে এবং তাইওয়ান প্রণালীকে তার একচেটিয়া অর্থনৈতিক অঞ্চল বলে দাবি করে। তাছাড়া চীনের সামরিক বাহিনী সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এ নিয়ে তাইওয়ানের ওপর চাপ বাড়িয়েছে।

সর্বশেষ তাইওয়ানের নতুন প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম লাই গত মাসে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই চীনের সঙ্গে উত্তেজনা আরও বেড়েছে। ক্ষমতায় এসেই লাই চীনা কর্তৃপক্ষকে হস্তক্ষেপ না করার হুঁশিয়ারি দেন। অন্যদিকে লাইকে বিচ্ছিন্নতাবাদী আখ্যা দিয়েছে চীন।