রোনালদোর কান্না, অবিশ্বাস্য কস্টায় শেষ আটে পর্তুগাল

ফিফা বিশ্বকাপ কিংবা ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ- বড় টুর্নামেন্টে আগেও তিনবার খেলেছে স্লোভেনিয়া। কিন্তু কখনও কোনো প্রতিযোগিতার নক আউট পর্বে উঠতে পারেনি তারা। এবারের ইউরোতে সেই দুঃখ ঘুচেছে তাদের। প্রথমবারের মতো টুর্নামেন্টের শেষ ষোলোর টিকিট কেটেছে স্লোভেনিয়ানরা। প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালেও দুর্দান্ত পারফর্ম করেছে স্লোভেনিয়া।

পেনাল্টি মিস করার পর কান্নায় ভেঙে পড়েন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। ছবি: এক্স

সাবেক চ্যাম্পিয়ন পর্তুগালের সঙ্গে দেখিয়েছে লড়াকু মানসিকতা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ভাগ্য নির্ধারণীর খেলা টাইব্রেকে হেরে গেছে তারা। সোমবার রাতে পেনাল্টি শ্যুট আউটে পর্তুগিজরা জিতেছে ৩-০ গোলে। এই লড়াইয়ে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো মুদ্রার দুই পিঠই দেখে ফেলেছেন। পেনাল্টি মিস করেছেন, পরে অবশ্য স্পট কিক থেকে গোলও করেছেন তিনি।

পুরো ম্যাচে আসলে আলো ছড়িয়েছেন দুই দলের গোলরক্ষকেরা। শেষ প্রহরীরা যখন ম্যাচের নায়কবনে চলে যান তখন আসলে ফরওয়ার্ডদের ব্যর্থতার চিত্রটা ভালোভাবেই ফুটে ওঠে। ম্যাচে অতিমানবীয় পারফর্ম করেছেন পর্তুগাল গোলরক্ষক ডিয়েগো কস্টা। দুই ঘণ্টা আগলে রাখেন গোলবার। কম যাননি স্লোভেনিয়ার গোলরক্ষক জান ওবলাকও।

ফ্রাঙ্কফুর্টে নির্ধারিত দেড় ঘণ্টা কেটেছে নিস্ফলা লড়াইয়ে। অতিরিক্ত সময়েও ফল পাল্টায়নি। গোলশূন্য ড্র হওয়া শেষ ষোলোর ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকে। যেখানে অবিশ্বাস্য নৈপুণ্য দেখান কস্টা। পর্তুগিজ গোলরক্ষক স্লোভেনিয়ার পরপর তিনটি পেনাল্টি শট ঠেকিয়ে দেন। তার প্রচেষ্টা বিফলে যায়নি। একে একে পেনাল্টি থেকে গোল করেন রোনালদো, ব্রুনো ফার্নান্দেজ ও বার্নার্ডো সিলভা।

ম্যাচটা শেষ হয়ে যেতে পারত নির্ধারিত সময়েই। এ সময় একাধিক গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেছেন রোনালদো-ফার্নান্দেজরা। প্রথমার্ধের শেষ দিকে রাফায়েল লিয়াওর কাছ থেকে বল পেয়ে মাটি কামড়ানো শট নেন হোয়াও পাওলিনহো। কিন্তু তার শট ফিরে আসে স্লোভেনিয়ার পোস্টে লেগে। ম্যাচের শেষ দিকে সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করেন পর্তুগাল অধিনায়ক রোনালদো।

স্লোভেনিয়া গোলরক্ষক ওবলাককে একা পেয়েও জালের নাগাল পাননি আল নাসের ফরওয়ার্ড। তার শট ঠেকিয়ে দেন ওবলাক। অতিরিক্ত সময়ের বিরতির আগে আরও বড় সুযোগ পান রোনালদো। ডি-বক্সে ডিয়েগো জোতা ফাউল হলে পেনাল্টি পায় পর্তুগিজরা। পেনাল্টি থেকে এবারের আসরের গোলখরা কাটনোর সুযোগ পান রোনালদো। কিন্তু গোল করতে ব্যর্থ হন তিনি।

পেনাল্টি মিসের পর মাঠেই কান্নায় ভেঙে পড়েন রোনালদো। এ সময় তাকে সান্ত্বনা দেন সতীর্থরা। শেষ পর্যন্ত ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ হয় টাইব্রেকে। এখানে অবশ্য ভুল হয়নি রোনালদোর। ঠিকই গোল করেন। স্লোভেনিয়া বাধা পাড়ি দিতে ভাগ্যও সহায় ছিল পর্তুগিজদের। গোলপোস্টের নিচে কস্টা ভরসার নাম না হয়ে উঠলে হয়ত শেষ হয়ে যেতে পারত তাদের স্বপ্ন।

আগামী শুক্রবার হামবুর্গে সেমিফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে রোনালদোর পর্তুগালের প্রতিপক্ষ কিলিয়ান এমবাপ্পের ফ্রান্স। ২০১৬ সালে এই দলটিকে হারিয়েই বড় কোনো টুর্নামেন্টে প্রথম ও শেষবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল পর্তুগিজরা।