জাতিসংঘ: গাজায় যা হচ্ছে তা ‘গণহত্যা’ ছাড়া কিছু নয়

গাজা উপত্যকার মানুষ আক্ষরিক অর্থেই ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। তাই এই পরিস্থিতিকে প্রকাশ করার জন্য ‘গণহত্যা’ ছাড়া অন্য কোনো শব্দ ব্যবহার করা যাবে না। ২৮ জুন, শুক্রবার স্বাস্থ্যের অধিকার বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ র‍্যাপোর্টিয়ার তলালেং মোফোকেং এই মন্তব্য করেছেন।

বিধ্বস্ত গাজা উপত্যকা

তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলুকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে মোফোকেং গাজার পরিস্থিতির একটি ভয়াবহ বিবরণ দিয়েছেন। তিনি বিপর্যয়কর মানবিক সংকটের xপর জোর দিয়ে উল্লেখ করেছেন, গাজার বাসিন্দারা প্রয়োজনীয় পরিষেবা এবং মৌলিক চাহিদা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।  

তিনি বলেছেন, ‘আমরা জানি যে সেখানকার মানুষ বেঁচে থাকার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছে। কিন্তু তারা আসলেই কেবলমাত্র এই চেষ্টাটুকুই করতে পারে। কারণ সেখানে খাবার, নিরাপদ পানি এবং নিরাপদ আবাসন নেই।'  

তিনি আরও বলেছেন, 'অবিরাম বোমা হামলার কারণে গাজাবাসীর মানসিক স্বাস্থ্যের মারাত্মক অবনতি হয়েছে, যার ফলে ব্যাপক ট্রমার সৃষ্টি হয়েছে।'

জাতিসংঘের বিশেষ এই র‍্যাপোর্টিয়ার অবিলম্বে গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, ‘গাজায় জীবনকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে এই হামলা বন্ধ নিশ্চিত করা প্রত্যেকের কর্তব্য।' 

তিনি ক্রমবর্ধমান মৃতের সংখ্যা, চলমান যুদ্ধের কারণে ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া এবং অঙ্গ প্রত্যঙ্গ হারানো গাজাবাসীর জীবনযাপনের ভয়াবহ অবস্থার কথা তুলে ধরেছেন। তিনি বলেছেন, ‘গাজা উপত্যকা ছোট একটি অঞ্চল। অথচ এখানে যে ধরনের ধ্বংসলীলা ঘটছে এবং এটি কীভাবে চলছে তা বোঝা সত্যিই অসম্ভব।'  

গাজায় হামলা চালিয়ে যাওয়ার জন্য ইউরোপীয় দেশগুলো এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ইসরায়েল যে সমর্থন পাচ্ছে তার নিন্দা করেছেন মোফোকেং। তিনি উল্লেখ করেছেন, এটি মূলত ইসরায়েলকে ফিলিস্তিনিদের গণহত্যা করার অনুমতি দেয়। তিনি জানতে চান আর কত শিশুকে মরতে হবে। তিনি বলেছেন, গাজার লোকেরা দুঃস্বপ্নের মধ্যে দিয়ে দিনযাপন করছে। 

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় সামরিক অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। ৮ মাসের বেশি সময় ধরে চলা এই যুদ্ধে ৩৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। নিহতদের বেশিরভাগই নারী এবং শিশু।

সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি