গাজার শেজাইয়ায় ট্যাংক হামলা: ফিলিস্তিনিদের দক্ষিণে সরে যেতে নির্দেশ
- Details
- by আন্তর্জাতিক ডেস্ক
গাজা শহরের শেজাইয়া এলাকায় বৃহস্পতিবার ইসরায়েল ট্যাংক দিয়ে হামলা চালিয়েছে। হামলার সময় ফিলিস্তিনিদের দক্ষিণে সরে যেতে নির্দেশ দেওয়া হয়। ইসরায়েল বলছে, হামাস জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযানের চূড়ান্ত পর্যায় হিসেবে দক্ষিণের রাফা শহরে বোমা হামলা চালানো হচ্ছে।
দক্ষিণ গাজা উপত্যকার ছবি, ২৭ জুন ২০২৪
শেজাইয়া এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, দুপুরের দিকে ট্যাংকগুলো হঠাৎ এসে হামলা শুরু করে। রাতভর বোমা হামলার পর ড্রোনও আকাশে দেখা গেছে।
‘যেন যুদ্ধ আবার শুরু হচ্ছে, বোমা বর্ষণের ফলে আমাদের এলাকার বেশ কয়েকটি ঘর ধ্বংস হয়ে গেছে,’ রয়টার্সকে বলছিলেন গাজা শহরের বাসিন্দা মোহাম্মদ জামাল।
প্যালেস্টাইন সিভিল ইমার্জেন্সি সার্ভিস জানিয়েছে, শেজাইয়া এলাকায় হতাহতের খবর পাওয়া গেছে, কিন্তু অভিযান চলমান থাকায় তাদের কর্মীরা এলাকায় পৌঁছাতে পারছেন না। এর আগের বোমা হামলায় তিনজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে, আর সাবরা এলাকায় পাঁচজন নিহত হয়েছেন।
হামাসের মিত্র ইসলামিক জিহাদের সশস্ত্র শাখা জানিয়েছে, শেজাইয়ার পূর্ব দিকে ইসরায়েলি ট্যাংকের বিরুদ্ধে তারা আগে থেকে রাখা বিস্ফোরক ডিভাইস বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে।
ইসরায়েল অভিযোগ করেছে যে, জঙ্গিরা সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে লুকিয়ে আছে।
গাজায় ৮ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলমান যুদ্ধের ফলে খাদ্য সংকটের তীব্র ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। প্রায় ৫ লাখ মানুষ ‘ভয়াবহ’ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার মুখোমুখি।
‘গাজা শহরে আমাদের ক্ষুধা মেটাতে হচ্ছে, ট্যাংক এবং বিমানের পেছনে দৌড়াতে হচ্ছে, যুদ্ধ কখন শেষ হবে, কোন আশা নেই,’ বলছিলেন জামাল।
এদিকে, কামাল আদওয়ান হাসপাতালে বুধবার রাতে একজন শিশু মৃত্যুবরণ করে। এই ঘটনায় অপুষ্টি এবং পানিশূন্যতায় মারা যাওয়া শিশুদের সংখ্যা ৩১ জনে পৌঁছেছে। গাজার একজন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জানিয়েছেন, যুদ্ধের কারণে এসব মৃত্যুর তথ্য সংগ্রহ করা কঠিন হচ্ছে।
ইসরায়েল অভিযোগ অস্বীকার করে বলছে যে, তারা গাজায় খাদ্য সংকট তৈরি করেনি। সাহায্য বিতরণে সমস্যা তৈরির জন্য সাহায্য সংস্থাগুলোকে দায়ী করে তারা হামাসকে সাহায্য বিতরণে বাধা দেওয়ার অভিযোগ করেছে।
গাজার দক্ষিণে রাফা শহরের পশ্চিম দিকের সুইডিয়া গ্রাম সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত ড্রোন ভিডিওতে রাফার বিভিন্ন স্থানে বহু ঘর ধ্বংস হওয়া দেখা যাচ্ছে। ভিডিওটি যাচাই করার সুযোগ রয়টার্সের কাছে ছিল না।
রাতের বোমা হামলার বিষয়ে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী কোন মন্তব্য করেনি। যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতা ব্যর্থ হয়েছে, যদিও গাজায় আরও সাহায্য পাঠানোর জন্য পশ্চিমাদের তীব্র চাপের মধ্যে আলোচনা চলছে।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইয়োয়াব গ্যালেন্ট বুধবার বলেছেন যে, যুদ্ধোত্তর গাজার শাসন ব্যবস্থার জন্য তার প্রস্তাবনা নিয়ে আলোচনা করেছেন। এই প্রস্তাবনায় স্থানীয় ফিলিস্তিনি, আঞ্চলিক অংশীদার এবং যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা থাকবে। তবে তিনি বলেন, এটা ‘একটি দীর্ঘ এবং জটিল প্রক্রিয়া’।
ওয়াশিংটনে গিয়ে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রীকে যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা বলেছেন, গাজায় আরও ফিলিস্তিনিদের মৃত্যুর আশঙ্কা থাকায় ইসরায়েলের জন্য ভারী অস্ত্রের চালান আটকে রাখা হবে। গত মে মাসে এই চালান আটকানো হয়।
হামাস বলছে যে, কোনো চুক্তি যুদ্ধের অবসান এবং গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনার সম্পূর্ণ প্রত্যাহার আনতে হবে। ইসরায়েল বলছে, হামাসের অস্তিত্ব না মিটে যাওয়া পর্যন্ত তারা কেবলমাত্র সাময়িক যুদ্ধবিরতি মেনে নেবে।
গত ৭ অক্টোবর হামাসের জঙ্গিরা ইসরায়েলের দক্ষিণে হামলা চালিয়ে প্রায় ১২০০ জনকে হত্যা করে এবং ২৫০ জনকে বন্দী করে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার জানিয়েছে, ইসরায়েলের পাল্টা হামলায় এখন পর্যন্ত ৩৭ হাজার ৬৫৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। গাজা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যোদ্ধা ও অসামরিক ব্যক্তিদের মধ্যে পার্থক্য করে না। কিন্তু কর্মকর্তারা বলছেন, নিহতদের বেশিরভাগই অসামরিক নাগরিক। গাজায় ইসরায়েল ৩১৪ সৈন্য হারিয়েছে। ইসরায়েল বলছে, ফিলিস্তিনি নিহতদের এক তৃতীয়াংশই যোদ্ধা।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.