কোণঠাসা মাওবাদীরা, জঙ্গলে গড়ে তুলছে জাল টাকার কারখানা!

এক সময়ের প্রবল শক্তিশালী মাওবাদীরা এখন ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে কোণঠাসা। কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর কঠোর অভিযানে তাদের একের পর এক ঘাঁটি ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় তারা এখন দিশেহারা। এই পরিস্থিতিতে, মাওবাদীরা তাদের অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলা করার জন্য জাল টাকা ছাপানোর পথ বেছে নিয়েছে বলে জানা গেছে।

মাওবাদীদের বিরুদ্ধে অভিযান, ফাইল ছবি

হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২২ জুন ছত্তিশগড় রাজ্যের সুকমার কোরাজগুড়া জঙ্গলে পুলিশ, ডিস্ট্রিক্ট রিজার্ভ গার্ড এবং সিআরপিএফ যৌথ অভিযান চালায়। অভিযানে প্রচুর পরিমাণে গোলাবারুদের পাশাপাশি জাল নোট তৈরির একটি কারখানা উদ্ধার করা হয়।

সুকমা থানার এসপি কিরণ জি চ্যাভান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তারা জঙ্গলে অভিযান চালিয়ে মাওবাদীদের এই জাল টাকা তৈরির কারখানার সন্ধান পান। তিনি আরও জানান, ৫০, ১০০, ২০০ এবং ৫০০ রুপির জাল নোট তৈরি করার জন্য এই কারখানাটি ব্যবহার করা হচ্ছিল।

অভিযানে একটি রঙিন প্রিন্টিং মেশিন, একটি সাদাকালো প্রিন্টার, একটি ইনভার্টার মেশিন, ২০০ বোতল কালি সহ জাল টাকা তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে। এছাড়াও, ছয়টি ওয়্যারলেস সেট, একটি বন্দুক এবং বিপুল পরিমাণে বিস্ফোরকও উদ্ধার করেছে নিরাপত্তা বাহিনী।

নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের ধারণা, মাওবাদীরা স্থানীয় বাজারে এই জাল নোট ব্যবহার করে আদিবাসীদের প্রতারণা করার পাশাপাশি ভারতের অর্থনীতিকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র করছে।

গোয়েন্দাদের মতে, ২০২২ সালে ছত্তিশগড়ের পশ্চিম বস্তার বিভাগ এলাকায় মাওবাদীরা প্রতিটি কমিটির এক বা দুইজন সদস্যকে জাল নোট ছাপানোর প্রশিক্ষণ দিয়েছিল।

উল্লেখ্য, ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দেশের ১০টি রাজ্যের ৭০টি জেলায় মাওবাদী সমস্যা প্রকট। তবে, নিরাপত্তা বাহিনীর কঠোর অবস্থানের কারণে মাওবাদীদের দৌরাত্ম্য কমেছে এবং মাওবাদী-সম্পর্কিত সহিংসতা ও প্রাণহানি উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে।