আপনি পড়ছেন

২০১৬ সালের অক্টোবরে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বাংলাদেশ সফরের পর থেকে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন চীনের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) আন্তর্জাতিক বিভাগের প্রধান লিউ জিয়ানচাও। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন বেইজিং সফর দুই দেশের সম্পর্ককে আরও ব্যাপক ও গভীর করবে।’

cpc minister liu jianchao in a seminarছবি - সংগৃহীত

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর এক হোটেলে দুই দেশের ভবিষ্যৎ সম্পর্ক নিয়ে চীনা দূতাবাস আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন।

অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ ১৪-দলীয় জোটের শরিক দলগুলোর নেতা, ব্যবসায়ী নেতা, সাবেক কূটনীতিক ও আন্তর্জাতিক বিষয় বিশ্লেষকরা অংশ নেন।

লিউ জিয়ানচাও বলেন, ‘সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দুই দেশের সম্পর্ক ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের ঐতিহাসিক সফরের মধ্য দিয়ে তা কৌশলগত অংশীদারিত্বের স্তরে উন্নীত হয়। আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন চীন সফরের অপেক্ষায় রয়েছি। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এটি হবে তার পঞ্চম চীন সফর এবং প্রতিবারই দুই নেতার সাক্ষাৎ হয়েছে।’

গত বছর দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত ব্রিকস সম্মেলনের ফাঁকে দুই শীর্ষ নেতার সাক্ষাতের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বিআরআই) আওতায় উচ্চমানের প্রকল্প বাস্তবায়নের ব্যাপারে তারা একমত হয়েছিলেন। বিআরআই-এর আওতায় সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষরকারী দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম দেশ বাংলাদেশ।

তিনি আরও বলেন, ‘পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সুড়ঙ্গ এবং দাশেরকান্দি স্যুয়ারেজ প্রকল্পসহ মোট ১৪টি অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্প বিআরআই কাঠামোর আওতায় বাস্তবায়িত হয়েছে অথবা বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। এসব প্রকল্প দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা আরও জোরদার করেছে।’

লিউ জিয়ানচাও বলেন, বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। বিকল্প উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে বাংলাদেশের উন্নয়নের অভিযাত্রায় চীন সবসময় সাথে থাকতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

গত বছরের জুলাই মাসে অনুষ্ঠিত সিপিসি কংগ্রেস প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তারা মিত্র দেশগুলোর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের ওপর জোর দিচ্ছেন।

‘রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের জন্য আমরা তিনটি নীতি অনুসরণ করি। প্রথমত, আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর আদর্শিক দিকটিকে প্রাধান্য দেই না। ফলস্বরূপ, বিশ্বজুড়ে চীনের বন্ধু রয়েছে। দ্বিতীয়ত, আমরা কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে কোন দল ক্ষমতায় আছে বা নেই তা বিবেচনা করি না। তৃতীয়ত, যেকোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ঐকমত্যে পৌঁছানোর জন্য আমরা পারস্পরিক সম্মতিতে সাধারণ ভিত্তির ওপর গুরুত্বারোপ করি।’

সেমিনারে দেওয়া ভাষণে সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা এবং জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেন, ‘একসময় এমন প্রস্তাব ছিল যে, অদক্ষ বা আধা-দক্ষ শ্রমিকদের ওপর নির্ভরশীল কিছু চীনা কারখানা স্থানান্তর করা হবে। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্য চীন সেই প্রস্তাব পুনর্বিবেচনা করতে পারে। এছাড়াও, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমারকে রাজি করাতেও চীন সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে পারে। রোহিঙ্গা সংকট এখন বাংলাদেশের জন্য বিরাট বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। রাজনৈতিকভাবে, সিপিসি এবং আওয়ামী লীগের মধ্যে সহযোগিতা ক্রমশ বাড়ছে। আওয়ামী লীগই একমাত্র দল যারা চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেছে।

তিনি জানান, আওয়ামী লীগের তরুণ নেতাদের একটি প্রতিনিধিদল সম্প্রতি চীন সফর করেছে। আগামী দিনগুলোতে আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতাদের আরেকটি প্রতিনিধিদলের চীন সফরের কথা রয়েছে।

এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘স্বাস্থ্য ও শিক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতে কিছু নির্দিষ্ট প্রকল্পে কাজ করার সুযোগ রয়েছে চীনের। এ ধরনের প্রকল্প দীর্ঘমেয়াদে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে সহায়তা করবে। এ ক্ষেত্রে, বাংলাদেশের ১০টি স্কুলের সঙ্গে চীনের ১০টি স্কুলের সংযোগ স্থাপন করে একটি পাইলট প্রকল্প হাতে নেওয়া যেতে পারে। স্বাস্থ্য খাতের জন্য, ১০টি সমন্বিত স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের সঙ্গে এ ধরনের পাইলট প্রকল্প নেওয়া যেতে পারে। তবে আমাদের এটা নিশ্চিত করতে হবে যে, প্রকল্পের আওতায় আসা স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলো যেন শুধুমাত্র ঢাকায় না হয়।’

অন্যান্যদের মধ্যে, সেমিনারে বক্তব্য রাখেন জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, বিএনপি নেতা বিমান বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত এয়ার ভাইস মার্শাল আলতাফ হোসেন চৌধুরী, এফবিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি শমী কায়সার, ইউএনবির প্রধান সম্পাদক এনায়েতুল্লাহ খান এবং সাবেক কূটনীতিক সাব্বির আহমেদ চৌধুরী।

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.