‘শেখ হাসিনা দেশ বিক্রি করে না’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শেখ হাসিনা দেশকে বিক্রি করে না। কারণ এই দেশকে স্বাধীন করেছি আমরা। যারা দেশ বিক্রির কথা বলে, তারাই পাকিস্তানের দালালি করেছে।

গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

আজ মঙ্গলবার (২৫ জুন) সকালে ভারত সফর নিয়ে গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলন প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে নয়াদিল্লিতে দু’দিনের রাষ্ট্রীয় সফর শেষে গত শনিবার রাতে দেশে ফেরেন তিনি।

ভারত সফর নিয়ে গণভবনে সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে লিখিত ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী। তারপর শুরু হয় বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের প্রশ্ন।

প্রথমেই দেশের ভেতর দিয়ে ভারতের রেল চলাচলের সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করেন একজন সাংবাদিক। এ নিয়ে ‘দেশকে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে’ বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঝড় বয়ে যাওয়া তুমুল আলোচনা-সমালোচনার প্রসঙ্গও তোলেন তিনি।

জবাব দিতে গিয়ে স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে শেখ হাসিনা বলেন, আমার একটা প্রশ্ন-ওজনটা মাপছে কীসে? আগে তো পাল্লায় ওজন হতো, এখন মেশিনে মাপা হয়। তাহলে দেশটা কীভাবে বিক্রি হবে?’

এরপর শেখ হাসিনা বলেন,  বাংলাদেশ একটি স্বাধীন দেশ। রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা এ দেশ স্বাধীন করেছি। যারা এ ধরনের সমালোচনা করে, তাদের জানা উচিত, ভারত একমাত্র মিত্র শক্তি যারা মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশের স্বাধীনতা আনতে সহযোগিতা করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পৃথিবীতে অনেক মিত্র শক্তি যুদ্ধে সহযোগিতা করেছে ঠিকই, কিন্তু ওই দেশ ছেড়ে যায়নি। এখনো জাপানে মার্কিন সৈন্য, জার্মানিতে রাশিয়ার সৈন্য রয়েছে। কিন্তু এখানে ব্যতিক্রম ভারত। তারা মিত্র শক্তি হিসেবে আমাদের পাশে থেকে যুদ্ধ করেছে। কিন্তু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বলার সঙ্গে সঙ্গে সেনা ফেরত নিয়ে গেছেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী।

শেখ হাসিনা বলেন, এরপরও যারা বলে ভারতের কাছে বিক্রি হয়ে যাবে, এ কথা তারা বলে কীভাবে? আসলে এ কথা যারা বলে তারা নিজেরাই ভারতের কাছে বিক্রি হওয়া। কারণ আমরা দেখেছি জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থেকে উপর দিয়ে ভারত বিরোধী কথা বলেছে, আর ভেতরে ভেতরে পা ধরে বসে থেকেছে ভারতের।

শেখ হাসিনা প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে বলেন, একটা দেশের মধ্যে দিয়ে অন্য দেশের ট্রানজিট হলে ক্ষতি কী! তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে রেললাইন যেগুলো বন্ধ ছিল, সেগুলো আস্তে আস্তে খুলে দিচ্ছি। তাতে অর্থনীতিতে বিরাট অবদান থাকছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের বাংলাদেশ স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ। সমস্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা খুলে দেওয়ার উপকার পাবে দেশের মানুষ। ব্যবসা-বাণিজ্য ভালো হবে।

মোদির আমন্ত্রণে ২১ জুন দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে নয়াদিল্লি যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সফরে ঢাকা ও নয়াদিল্লির মধ্যে ক্রমবর্ধমান সম্পর্ককে আরও সুসংহত করতে ১০টি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়েছে।