ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডকে সন্ত্রাসী তালিকাভুক্ত করেছে কানাডা

ইরানের সেনাবাহিনী ‘ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস’কে (আইআরজিসি) একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে কালো তালিকাভুক্ত করেছে কানাডা। কানাডীয় সরকারের জননিরাপত্তা মন্ত্রী ডমিনিক লেব্ল্যাঙ্ক বুধবার এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন। কানাডার এমন পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছে ইরান। খবর বিবিসির।

ইরানের সেনাবাহিনী ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডস

কানাডার জননিরাপত্তা বিষয়কমন্ত্রী ডমিনিক লেব্ল্যাঙ্ক বলেন, কানাডা সরকারের এ সিদ্ধান্ত ‘বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার’ হিসেবে কাজ করবে। সরকার আইআরজিসির সন্ত্রাসী সত্তার বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য সমস্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

তিনি বলেন, ইরানের শাসকগোষ্ঠী দেশের অভ্যন্তরে ও বাইরে উভয়ক্ষেত্রেই ক্রমাগতভাবে মানবাধিকারের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন করে চলেছে এবং সেইসঙ্গে আন্তর্জাতিক আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থাকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা চালিয়ে যাচ্ছে।

মূলত কানাডা সরকারের এই পদক্ষেপের ফলে আইআরজিসির শীর্ষ কর্মকর্তাসহ হাজারো সিনিয়র ইরানি সরকারি কর্মকর্তা কানাডায় প্রবেশে বাধাগ্রস্ত হবেন। তাছাড়া কানাডায় বর্তমানে অবস্থান করা এবং সাবেক ইরানি সরকারি কর্মকর্তারা বহিষ্কারের মুখে পড়বেন।

কানাডার এ সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাসের কানানি বলেন, কানাডার পদক্ষেপ একটি অবিবেচনাপ্রসূত এবং রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তবে এতে বিপ্লবী গার্ডের বৈধ পদক্ষেপ ও প্রতিরোধ ক্ষমতার ওপর কোনো প্রভাব পড়বে না।

আইআরজিসি ইরানের সেনাবাহিনীর প্রধান সামরিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক শক্তি। প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে দেশের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। আইআরজিসির নিজস্ব স্থল বাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীতে ১ লাখ ৯০ হাজারের বেশি সক্রিয় সেনা রয়েছে।

সরকারের তথ্য মতে, আইআরজিসি নিজেদের ছত্রছায়ায় রেখে বিদেশী অপারেশন উইং বিশেষ করে কুদস ফোর্সের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যে মিত্র সরকার ও সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে অর্থ, অস্ত্র, প্রযুক্তি, প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দিয়ে থাকে।

যুক্তরাষ্ট্রের পর উত্তর আমেরিকায় দ্বিতীয় দেশ হিসেবে কানাডা আইআরজিসিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে কালো তালিকাভুক্ত করলো। আইআরজিসিকে ২০১৯ সালে সন্ত্রাসী তালিকাভুক্ত করেছে মার্কিন প্রশাসন। যুক্তরাজ্য গত বছর এমন পদক্ষেপ নেওয়ার ইঙ্গিত দিলেও শেষপর্যন্ত সেটি করেনি।

এদিকে কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলানি জোলি নিজ দেশের নাগরিকদের সতর্ক করে বলেছেন, এই ঘোষণার পর ইরানে কানাডিয়ানরা নির্বিচারে আটকের ঝুঁকিতে পড়তে পারেন।

মেলানি জোলি বলেন, আমার বার্তা পরিষ্কার: যারা এই মুহূর্তে ইরানে আছেন, তারা দ্রুতই দেশে ফিরে আসুন এবং যারা ইরানে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন, তারা সেটি বাদ দিন।